ক্রীড়া প্রতিবেদক
বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের জাতীয় আসর নিয়ে পুরো দেশ জুড়েই এখন সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। প্রতিটি সুস্থ্য মানুষই এ প্রসঙ্গে পরিস্কার ভাবে খোলামেলা তথ্য জানাতে আগ্রহী। আসলে কি হচ্ছে এই বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের অভ্যন্তরে?
জাতীয় আসরের পুরস্কারে লাথি মেরে আলোচিত-সমালোচিত জাহিদ হাসান শুভকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করেছে কেন? সে কি আসলেই দোষী? শুভর বক্তব্য কি সত্য?
শুক্রবার পুরস্কারে লাথি মারার ঘটনা ভাইরাল হেয়ে যাবার পরও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের টনক নড়েনি। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কোন তদন্ত করবে না বলে জানিয়ে দিলেন পরিচালক তাসলিমা। তিনি মুঠোফোনে প্রতিক্ষণকে বলেন, আমরা আপাতত কোন তদন্ত করছি না। আমাদের কাছে কোন অভিযোগ নেই।
কিন্তু অপর দিকে ‘আজীবন নিষিদ্ধ’ এর প্রতিবাদ জানিয়ে আইনের আশ্রয় নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ক্ষমাও চেয়েছেন খেলার মাঠে অখেলোয়াড় সুলভ আচরণের জন্য। দুর্নীতি আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আদালতে গেছেন শুভ।
১৩ বছর ধরে বডিবিল্ডিংয়ে আমি ৪ বার গোল্ড মেডেল পাওয়া ও ৩ বার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া জাহিদ হাসান শুভ প্রতিক্ষণকে মুঠোফোনে বলেন, সে দিন আমার সাথে ঘোর অন্যায় করা হয়েছে। আমার ছবি দেখে যেকোন বাচ্চাও বুঝতে আসলে কি হয়েছে। মঞ্চে আমি মাইক চাইলাম নজরুল স্যারের কাছে। তিনি আমার সাথে কুকুরের মতো আচরণ করেছেন। আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। আমরা অসুস্থ্য হয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেই। তারপরও যদি এমন দুর্নীতি হয়, তাহলে তো বডিবিল্ডিং ফেডারেশনকে ব্যান্ড করে দেয়া উচিত। ’
প্রতিযোগিতায় ১১ জন বিচারক প্যানেলের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রূপা জেতেন জাহিদ। এই রায়ে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তিনি পুরস্কারের মঞ্চেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পুরস্কার নিয়ে মঞ্চে নামার পর পুরস্কারে লাথি দিয়ে প্রতিবাদ জানান।
শুভ আরো বলেন, আমি প্রতিটি মিডিয়া, দেশের প্রতিটি মানুষ ও সরকারের শীর্ষ মহলের কাছে জোড় হাত অনুরোধ করছি আমার মতো অবিচার আর যেন কোন বডি বিল্ডারের সাথে না হয়। আমার মতো আর যেন কোন জাতীয় লেভেলের বডি বিল্ডারের ক্যারিয়ার নষ্ট না হয়। সবাই এক সাথে এর প্রতিবাদ জানাতে অনুরোধ করছি।’
উল্লেখ, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে রীতিমতো। বাংলাদেশ শরীর গঠন ফেডারেশন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সভা আয়োজন করে। সেই সভায় জাহিদকে আজীবন বহিষ্কারে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে ফেডারেশন।
বডিবিল্ডার জাহিদ হাসান শুভ জানিয়েছে তিনি আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে লাথিটা আমি পুরস্কারে নয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মেরেছি- এ কথাও শুভ বার বার উচ্চারণ করেছেন। বলেন, শুধু বডিবিল্ডার সেক্টর না অন্য যে কোনও সেক্টরে যদি দুর্নীতি হয় তাহলে এরকমভাবে প্রতিবাদ করা উচিত। আর আমি চাই আমার যে প্রাপ্য অধিকার সেটা যেন আমি ফিরে পাই।
তবে শুভকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, জাহিদের এমন কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন অডিটোরিয়ামের অন্য শরীর গঠনবিদরাও। আমাদের প্রতিযোগিতা চলাকালীন শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছেন তিনি। ফলে খেলাধুলায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছি।