কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে আরিফা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, সেবা কার্যক্রম ব্যাহত
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
ঢাকার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স আরিফা সুলতানা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের ৭৯ জন স্টাফ নার্স লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, আরিফা সুলতানার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে তারা দীর্ঘদিন ধরে লাঞ্চনা-বঞ্চনা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এর ফলে হাসপাতালের নিয়মিত সেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
সম্প্রতি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, আরিফা সুলতানা চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করেন। এই সিন্ডিকেট হাসপাতাল পরিচালনায় কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন বিধিবহির্ভূত কাজ করে আসছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আরিফা সুলতানা নিয়মিত ডিউটি এড়িয়ে পাঁচটি বেসরকারি নার্সিং কলেজে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করছেন। পাশাপাশি আশপাশের ডায়গনস্টিক সেন্টারে কাজ এবং মাস্টার্স ক্লাসে পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনাকাল থেকেই তিনি ও তার সহযোগীরা ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রি, আইসিইউ বেড বাণিজ্য, অনিয়মিত পদায়ন এবং নার্সিং কলেজে ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। এসব অনিয়ম থেকে উপার্জিত অর্থে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় তিনি একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
নার্সরা আরও অভিযোগ করেছেন, বিদেশে একটি সেমিনার শেষে দেশে ফিরে আরিফা সুলতানা নিজেকে ‘নার্সিং সম্রাজ্ঞী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার নির্দেশ ছাড়া হাসপাতালে কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় না। তিনি অযোগ্য জুনিয়র নার্সদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন, ফলে অনেক অভিজ্ঞ ও যোগ্য নার্স বঞ্চিত হচ্ছেন।
এছাড়া হাসপাতালের ভেতরে নিয়মবহির্ভূত অনুষ্ঠান আয়োজন করে নার্সদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলা হয়। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বদলি, পদাবনতি ও বিভিন্ন নিপীড়নের শিকার হতে হয়।
আরিফা সুলতানার সিন্ডিকেটে রয়েছেন— সিনিয়র স্টাফ নার্স খালেদা পারভীন, নাজমা বেগম, মাহবুব আলম, মিতালী খাতুন, থ্যাকলা নিপু রোজারিও, মর্জিনা খাতুন, ছালমা আক্তার ও নাহিদা রহমান।
অভিযোগপত্রে হাসপাতালের এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়েছে।














