থানকুনি পাতার উপকারিতা ও খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি 

প্রথম প্রকাশঃ অক্টোবর ২৮, ২০২৫ সময়ঃ ৬:২০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:২০ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার চলে আসছে। সেইসব ভেষজের মধ্যে অন্যতম হলো থানকুনি পাতা, যাকে অনেকে ‘ব্রাহ্মণী শাক’ বা ‘মানকচু পাতা’ নামেও চেনেন। সহজলভ্য ও সুলভ এই পাতা লোকজ চিকিৎসা, আয়ুর্বেদ, ইউনানি ও প্রাচীন চীনা চিকিৎসাশাস্ত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

ইসলামি ব্যাংক হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারের পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মী বলেন, থানকুনি পাতা সহজলভ্য, সুলভ ও বহুগুণসম্পন্ন প্রাকৃতিক খাদ্য, যা সুস্থ জীবনযাপনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এটি শাক হিসেবে রাখা যেতে পারে।

 

থানকুনি পাতার পুষ্টিগুণ 

প্রতি ১০০ গ্রাম থানকুনি পাতায় গড়ে পাওয়া যায়—

ক্যালরি: ৩০–৩৫

প্রোটিন: ২–৩ গ্রাম

ফাইবার: ২ গ্রাম

ভিটামিন এ: চোখ ও ত্বকের জন্য উপকারী

ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স: শক্তি উৎপাদন ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য জরুরি

ভিটামিন সি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

ক্যালসিয়াম ও আয়রন: হাড়, দাঁত ও রক্তের জন্য উপকারী

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: ফ্ল্যাভোনয়েড ও ট্রাইটারপিনয়েড উপাদানে সমৃদ্ধ

থানকুনি পাতার উপকারিতা 

১. হজমশক্তি বৃদ্ধি: পেটের গ্যাস, অম্লতা ও অজীর্ণতা দূর করে হজমতন্ত্র শক্তিশালী করে।

২. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি: ‘ব্রেইন ফুড’ হিসেবে পরিচিত এই পাতা স্নায়ুকোষ সক্রিয় রাখে ও মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: এতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ফ্রি-র‌্যাডিকেল থেকে সুরক্ষা দেয়।

৪. লিভারের যত্নে: লিভারের কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে।

৫. রক্তচাপ ও হৃদরোগে উপকারী: রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

৬. ত্বকের যত্নে: প্রদাহ কমায়, ব্রণ নিরাময় করে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

৭. উদ্বেগ ও অনিদ্রা কমায়: স্নায়ুতন্ত্র প্রশমিত করে মন শান্ত রাখে।

৮. প্রদাহ ও বাতের ব্যথায়: প্রদাহবিরোধী গুণে শরীরের ব্যথা ও ফোলা কমায়।

৯. চুলের যত্নে: চুল পড়া রোধ করে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

 খাওয়ার পদ্ধতি 

– কাঁচা বা সেদ্ধ শাক হিসেবে খাওয়া যায়।

– রস বের করে অল্প মধুর সঙ্গে পান করা সবচেয়ে জনপ্রিয়।

– চাটনি, ভর্তা বা সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়।

– ভেষজ ওষুধ তৈরিতেও এটি ব্যবহৃত হয়।

সতর্কতা 

১. অতিরিক্ত সেবনে বমি, ডায়রিয়া বা মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে।

২. গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী নারীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।

৩. যাদের অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তাদের সাবধান থাকতে হবে।

৪. দীর্ঘদিন একটানা সেবন করলে লিভারের উপর চাপ পড়তে পারে।

প্রাকৃতিক এই ভেষজটি পরিমিত পরিমাণে খেলে শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখে।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G