পুলিশের নাকের ডগায় চলছিল ক্যাসিনো

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯ সময়ঃ ৬:৩৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৪০ অপরাহ্ণ

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ক্যাসিনোতে অভিযান চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারই ধারাবাহিকতায় রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর চারটি ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। ক্লাবগুলো হলো- আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

অভিযানে চারটি ক্লাবেই ক্যাসিনোর সরঞ্জাম পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এসব ক্লাবের নিয়ন্ত্রক বলে অভিযোগ রয়েছে।

রাজধানীর মতিঝিলে দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ পাশাপাশি অবস্থিত। রোববার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে মতিঝিল ও পল্টন থানা পুলিশ ক্লাব দুটিতে অভিযান শুরু করে। দুটি ক্লাব থেকেই ক্যাসিনো ও জুয়া খেলার বিপুল সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশের মতিঝিল বিভাগের এডিসি শিবলি নোমান জানান, বিকেল সাড়ে ৩টায় আরামবাগ ক্লাবে গিয়ে দেখা যায় সেখানে আগে থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। অন্ধকারে সবকিছু দেখা যাচ্ছিল না। তবে সেখানে ক্যাসিনো চলে সেটা বোঝা যাচ্ছিল। এছাড়া অভিযানের খবর শুনে সবাই পালিয়ে গেছেন। দিলকুশায়ও কাউকে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে রাজধানীর ভিক্টোরিয়া ক্লাবে অভিযান চালিয়ে নগদ এক লাখ টাকা, মদ, বিয়ার, জুয়া ও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার বিকেল একই সময়ে শুরু হওয়া অভিযানে এসব উদ্ধার করা হয়। মতিঝিল জোনের ডিসি আনোয়ার হোসেন জানান, ক্লাবের ভেতরের পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে এখানেও নিয়মিত ক্যাসিনো বসত।

পুলিশের নাকের ডগায় এসব ক্যাসিনো কীভাবে এতদিন চলছিল? সেই প্রশ্ন উঠেছে সর্বমহলে। রাজধানীর এসব ক্লাবে ক্যাসিনোগুলো কতদিন ধরে চলছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পুলিশের মতিঝিল জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কাছে খবর আসা মাত্রই অভিযানে এসেছি। কতদিন ধরে চলছে, কারা এর সাথে জড়িত -এসব বিষয় তদন্ত করে দেখব।

চারটি ক্লাবই পুলিশের নাকের ডগায়, এটাতো অস্বীকার করার উপায় নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চারটি ক্লাবই পুলিশের নাকের ডগায় ছিল, এটা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। তবে আমরা জানা মাত্রই অভিযান শুরু করেছি। ক্যাসিনো পরিচালনা করা অবৈধ। এখান থেকে যাদের নাম আসবে তারা যতই প্রভাবশালী হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে র‍্যাবের হাতে আটক হন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। পরে অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

গত শুক্রবার রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে আটক করে র‍্যাব। এ সময় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক দ্রব্য ছাড়াও নগদ এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত) করার নথি জব্দ করা হয়।

এছাড়া শুক্রবার রাতে রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় ক্লাবটির সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজের কাছে সাত প্যাকেট গন্ধহীন হলুদ রঙের ইয়াবাসহ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। জব্দ করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ক্যাসিনোতে খেলার কয়েন, স্কোরবোর্ড ও ৫৭২ প্যাকেট তাস। র‍্যাবের ধারণা, ক্লাবটি ক্যাসিনো খেলা হত।

একই রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি ক্লাবেও অভিযান চালানো হয়। তবে ক্লাবটি বন্ধ থাকায় সেখানে থাকা বারটি সিলগালা করে দেন র‍্যাব সদস্যরা।

প্রতি /এডি/রন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G