সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মানিক মিয়া

প্রকাশঃ জুলাই ৩, ২০১৫ সময়ঃ ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

manik miaবাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের পথিকৃৎদের একজন তিনি, মানিক মিয়া নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। তাঁর জন্ম ১৯১১ সালে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া গ্রামে। গ্রামেরই প্রাইমারী স্কুলে তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয়। তারপর ভর্তি হন ভান্ডরিয়া হাই স্কুলে, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সেখানে পড়াশোনা করার পর তিনি ভর্তি হন পিরোজপুর সরকারী হাইস্কুলে এখান থেকেই তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা দেন। আর বিএ পাশ করেন বরিশাল বজ্রমোহন কলেজ থেকে।

পিরোজপুরের মহকুমা হাকিম আদালতের সহকারী হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। কিন্তু স্বাধীনচেতা তোফাজ্জল হোসেন সে চাকরি বেশি দিন করতে পারেন নি। জনৈক মুন্সেফের খারাপ আচরণের প্রতিবাদে তিনি সে চাকরি ছেড়ে দেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে তাঁর পরিচয় আগে থেকেই ছিল, চাকরি ছেড়ে দেবার পর তিনি তদানীন্তন বাংলা সরকারের জনসংযোগ বিভাগে বরিশাল জেলার সংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি কলকাতা প্রাদেশিক মুসলিম লীগের অফিস সেক্রেটারি হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৬ সালে তিনি আবুল মনসুর আহমেদের ‘দৈনিক ইত্তেহাদে’ পরিচালনা পরিষদের সেক্রেটারি হিসেবে যোগ দেন । ১৯৪৭ সালে তিনি যোগ দেন সোহরাওয়ার্দী প্রতিষ্ঠিত ‘দৈনিক ইত্তেফাকে’। পরে তিনি ঢাকা চলে আসেন এবং ঢাকা থেকে প্রকাশিত সে সময়কার সাপ্তাহিক ইত্তেফাকে যোগ দেন। ১৯৫১ সালে তিনি পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব নেন এবং তাঁর সম্পাদনাতেই ১৯৫৩ সালে পত্রিকাটি দৈনিক হিসেবে প্রকাশিত হতে থাকে।

তাঁর সম্পাদনায় দৈনিক ইত্তেফাক সামরিক সরকার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসব কারণে তাঁকে একাধিকবার কারাবরণও করতে হয়েছে। ১৯৬৩ সালে সমরিক সরকারের হস্তক্ষেপে তাঁর সম্পাদিত ইত্তেফাক এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত অপর দু’টি পত্রিকা ‘পূর্বাণী’ এবং ‘ঢাকা টাইমস’ এর প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৯৬৯ সালে ইত্তেফাকের প্রকাশনা আবার শুরু হয় এবং এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হচ্ছে। এমনকি ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতেও দৈনিক ইত্তেফাক ছাপা হয়েছিল।

পূর্ব বাংলার স্বাধিাকারের প্রশ্নে মানিক মিয়া ছিলেন উচ্চকন্ঠ। ‘রাজনৈতিক হালচাল’ ও ‘মঞ্চ নেপথ্যে’ শিরোনামে তাঁর লেখা উপসম্পাদকীয় কলাম এবং ‘মোসাফির’ ছদ্মনামে লেখা রাজনৈতিক নিবন্ধ পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৬৩ সালে আন্তর্জাতিক প্রেস ইনস্টিটিউটের পাকিস্তান শাখার প্রেডিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘পাকিস্তানী রাজনীতির বিশ বছর’ এবং ‘নির্বাচিত ভাষণ ও নিবন্ধ’। শেরে বাংলা নগরের মানিক মিয়া এভিনিউ-এর নামকরণ তাঁকে সম্মান জানাতেই করা হয়েছে। ১৯৬৯ সালের ১ জুন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
প্রতিক্ষণ/এডি/নির্ঝর

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G