আসল গুড় চিনবেন যেভাবে

প্রথম প্রকাশঃ নভেম্বর ২২, ২০২৫ সময়ঃ ৮:০৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:০৯ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

শীতের শুরুতেই গ্রামবাংলার হাওয়ায় ভেসে বেড়াতে থাকে খেজুরের গুড়ের মিষ্টি সুবাস। পিঠা–পায়েসের মৌসুমে বাঙালির পছন্দের তালিকায় তাই সবচেয়ে উপরে থাকে খেজুরের গুড়। শুধু স্বাদ নয়—পুষ্টিগুণের জন্যও গুড়কে অনেকেই চিনি থেকে স্বাস্থ্যসম্মত বিকল্প হিসেবে বেছে নেন। লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, সেলেনিয়াম ও পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ এই প্রাকৃতিক মিষ্টান্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

কীভাবে তৈরি হয় খেজুরের গুড়

খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পর বড় পাত্রে রেখে তা জ্বাল দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে ফুটে রস ঘন হয়ে গুড়ে পরিণত হয়। কিছু দেশে একই প্রক্রিয়ায় পামের রস থেকেও গুড় তৈরি হয়।

ভেজালের দাপট

এখন উদ্বেগের বিষয় হলো—বাজারে খাঁটি খেজুরগুড়ের পাশাপাশি বেশ পরিমাণে ভেজাল গুড়ও পাওয়া যাচ্ছে। অনেক অসাধু উৎপাদক কৃত্রিম চিনি, ফিটকিরি ও রাসায়নিক রং মিশিয়ে ‘খেজুরের গুড়’ বলে বাজারজাত করছেন। এতে স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণ—কোনো কিছুই থাকে না।

অতিরিক্ত মুনাফার লোভে বাড়তি চাহিদা মেটাতে ও গুড়ের রং উজ্জ্বল দেখাতে এসব ভেজাল মেশানো হয় বলে অভিযোগ আছে।

কীভাবে বুঝবেন গুড় আসল নাকি ভেজাল

১. রং দেখে

  • খাঁটি খেজুরের গুড়: গাঢ় বাদামি বা কালচে লাল রং। চকচকে হয় না।
  • ভেজাল গুড়: বেশি হলদে, কমলা বা অস্বাভাবিক উজ্জ্বল রং দেখা যায়। রাসায়নিক রং মেশানো হলে রং অস্বাভাবিকভাবে হালকা বা উজ্জ্বল হয়।

২. পাটালির অবস্থা

  • খাঁটি পাটালি: নরম, ভেতরে রসাল, রং কালচে লাল। উপরের অংশ সামান্য শক্ত হলেও ভেতরটা নরম থাকে।
  • ভেজাল পাটালি: খুব শক্ত, বাইরের অংশ সাদা বা ফ্যাকাশে। চিনি বা ফিটকিরি মেশালে পাটালি শক্ত ও সাদা হয়ে যায়।

৩. চকচকে ভাব

ভেজাল পাটালিতে সাধারণত একটি অস্বাভাবিক চকচকে স্তর থাকে। খাঁটি গুড় কখনোই অতটা উজ্জ্বল হয় না।

৪. স্বাদে পার্থক্য

  • খাঁটি গুড়: মিষ্টতা থাকে স্বাভাবিক ও সুগন্ধযুক্ত।
  • ভেজাল বা পুরনো গুড়: নোনতা স্বাদ পাওয়া যায়।
  • অতিরিক্ত জ্বাল দিলে বা অন্যান্য শর্করা মেশানো হলে তিতা স্বাদ অনুভূত হয়।

৫. স্ফটিক ভাব

গুড়ে যদি ছোট ছোট স্ফটিকের মতো দানা দেখা যায়, বুঝবেন মিষ্টতা বাড়াতে চিনি বা অন্য পদার্থ মেশানো হয়েছে।

গাছির অভিজ্ঞতা কী বলে

যশোরের বাঘারপাড়ার খেজুরচাষী মাছুম আলী ৩৫ বছর ধরে রস সংগ্রহ করছেন। তার ভাষায়—
“ভেজাল গুড়-পাটালি চকচক করে। চিনি মেশালে পাটালি শক্ত হয়, রসাল থাকে না। রংও সাদার দিকে ঝুঁকে যায়। ফিটকিরি বা রাসায়নিক মেশালে একই অবস্থা হয়।”

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G