ইন্দোনেশিয়ার জাতিসংঘের কর্মকর্তাকে তলব করেছে

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ১২, ২০২২ সময়ঃ ৬:৩৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৩৫ অপরাহ্ণ

আন্তর্জাতিকে ডেস্ক

জাতীসংঘের কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠিয়েছে ইন্দোনেশিয়ান সরকার। এর মুলে দেশটির জারি করা যৌন সম্পর্কে বিরোধে করা আইন।

বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে অন্য কারও সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হওয়াকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ইন্দোনেশিয়ার সরকার নতুন যে আইন করেছে, সেই আইনের সমালোচনা করায় জাতিসংঘের এক কর্মকর্তাকে তলব করেছে দেশটির সরকার। জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা ইন্দোনেশিয়ার নতুন আইনকে নাগরিক স্বাধীনতার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করার পর সোমবার তাকে তলব করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টে ফৌজদারি আইনের সংশোধনী প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই আইনে বিয়ের বাইরে যৌনতা এবং অবিবাহিত দম্পতিদের একসাথে বসবাস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ‘ইন্দোনেশীয় মূল্যবোধ’ সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নতুন এই আইন করা হয়েছে।

সংশোধিত আইনের ফলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ইন্দোনেশিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং মানবাধিকারের অবক্ষয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তেউকু ফাইজাস্যাহ বলেছেন, এই মন্তব্যের বিষয়ে মন্ত্রণালয় জাকার্তায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ভ্যালেরি জুলিয়ান্ডকে তলব করেছে। নতুন আইন নিয়ে ভুল ধারণা প্রকাশের আগে সরকারের সাথে সংস্থাটির পরামর্শ করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তেউকু বলেন, অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের মতো তাদেরও পরামর্শ করা উচিত ছিল। আমরা আশা করছি, তারা মতামত প্রকাশে তাড়াহুড়ো করবেন না। বিশেষ করে যখন তাদের কাছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। তবে জাতিসংঘের কর্মকর্তা ভ্যালেরি জুলিয়ান্ড তলবের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলেও কোনও সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টে গত মঙ্গলবার পাস হওয়া নতুন এই আইনের সমালোচকরা বলেছেন, এটি দেশের মানুষের স্বাধীনতার ওপর এক ধরনের আঘাত। তবে নতুন ফৌজদারি এই আইন আগামী তিন বছর কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। একই আইনে দেশটির প্রেসিডেন্টকে অপমান এবং রাষ্ট্রীয় মতাদর্শের বিপরীত মতামত প্রকাশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

আইনটি ইন্দোনেশীয় নাগরিক এবং দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি— উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি ‘নৈতিকতা’ আইনও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আইনে অবিবাহিত দম্পতিদের একসাথে বসবাস এবং যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে ‘অবৈধ’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জাকার্তা-ভিত্তিক গবেষক অ্যান্দ্রিয়াস হারসানো বলেছেন, ইন্দোনেশিয়ায় লাখ লাখ দম্পতি আছেন; যাদের বিয়ের সনদ নেই। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের আদিবাসী অথবা মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে এই চর্চা বেশি রয়েছে। কারণ তারা নির্দিষ্ট কিছু ধর্মীয় আচারের মাধ্যমে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G