আমাদের ভালোবাসা পারে সোহেলকে বাঁচাতে

প্রকাশঃ জুলাই ১৯, ২০১৭ সময়ঃ ১০:৩৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:৩৫ অপরাহ্ণ

মুমূর্ষু সন্তানের শিয়রে বসে অবিরত কেঁদে চলছেন অসহায় এক মা। শাড়ির আঁচলে মুখ ঢাকা ঐ মায়ের কান্নার প্রতিটি শব্দ ঠিক যেন বুকে এসে বিঁধছে। শান্তনা দেবার বৃথা চেষ্টা করতেই আরো গুমরে কেঁদে উঠেন তিনি। তাঁর কান্নায় হাসপাতালের বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠছে। এতটাই ভারী; আমার নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। একবার ছেলেটির দিকে তাকাচ্ছি আরেকবার তার মায়ের দিকে। সহায়হীন-ভয়ার্ত মানুষের চোখ কেমন হতে পারে তা অারো একবার গভীরভাবে উপলব্ধি করলাম। মনের অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো।মনে হলো সবে মাত্র কৈশোর পেরেনো ছেলেটির চোখে-মুখে বাঁচার যে তীব্র আকুতি; সেটাই যেন ঐ মায়ের চোখে অশ্রু হয়ে ঝরছে। কীভাবে ঐ মায়ের অশ্রু থামবে সে উপায় আমার জানা নেই!!

ছেলেটির নাম সোহেল রানা।বিশ বছরের টগবগে তরুণ।ভাবতে খুব কষ্ট হচ্ছে এরকম তরতাজা একটি ছেলেকে দিনের পর দিন ব্লাড ক্যান্সারে সাথে লড়তে হচ্ছে। ছেলের এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ভেঙ্গে পড়েছেন সোহেলের দুখিনী মা। তার বাবা দিনমজুর। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে তাদের বাড়ি। বহু কষ্টে তাদের সংসার চলে। একটু ভালো থাকার আসায় গ্রামের ভিটেমাটি বন্ধক রেখে ৬ লাখ টাকা লোন নিয়ে মাত্র দুমাস আগে ছেলেকে সৌদি আরব পাঠিয়েছিলেন তারা। সেই লোন এখনও পরিশোধ হয়নি; কিন্তু ছেলে ফিরে এসেছে দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সার নিয়ে। লোন শোধ করতে না পারলে গ্রামে মাথা গোঁজার যে শেষ সম্ভলটুকু আছে সেটা হারানোর শঙ্কা ছাঁপিয়ে এখন ছেলেকে বাঁচানোর আকুতি-ই তাদের চোখে-মুখে। কী করবেন তারা? কোথায় যাবেন?ইট-পাথরের এই শহরে এমন কেউ কি আছেন তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন?

কয়েকদিন ধরে ছেলেটির চাচা রক্তের জন্য বেশ ছুটোছুটি করছেন। প্রচুর রক্তের প্রয়োজন। আত্নীয়হীন নিষ্ঠুর এ শহরে কে তাদের রক্ত দেবে? ওর রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ। গ্রামের এক ছোটভাইয়ের ফোন পেয়ে তাকে রক্ত দিতে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে ছুটে যাই। রক্ত দেবার পর মনে হলো যাকে রক্ত দিচ্ছি তাকে একবার দেখা দরকার। কিন্তু স্বচক্ষে তাদের করুণ অবস্থা দেখে নিজের ভেতরে খুব যন্ত্রণা অনুভব করছি। মনে হচ্ছে কিছু একটা করা দরকার।

রক্ত দেবার পর তার চাচা বাশারের হাতে কিছু টাকা দিতেই লজ্জিত ভঙ্গিতে ফেরত দিয়ে বললেন- রক্ত দিলেই চলবে, টাকা লাগবে না।বুঝতে পারলাম প্রচন্ড অর্থকষ্টেও কিছু মানুষ আছেন; যাঁরা আত্নসম্মানবোধ বিকিয়ে দেন না। জানতে চাইলাম কিভাবে চলছে চিকিৎসার খরচ? তিনি কষ্টমাখা কন্ঠে বললেন ধার-দেনা করে। এবার আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না, চোখটা ঝাপসা হয়ে এল। জোর করে পকেটে টাকাটা গুঁজে দিয়ে বললাম- প্রতিদিন রক্ত পরীক্ষা এবং ওষধপত্রে অনেক টাকা লাগে এটা রাখুন।

কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম ছেলেটির পাশে। বললাম মনোবল হারিও না। সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে ইন-শা-আল্লাহ… আমার কথা শুনে চাপাকন্ঠে আর্তনাদ করে উঠলেন তার মা। বিড় বিড় করে উপরওয়ালাকে কী যেন বললেন…।

নাহ…হাসপাতালে সম্ভবত অক্সিজেন কমে আসছে, আমার এবার নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তাই দ্রুত বেরিয়ে এলাম। কী আশ্চর্য্য ! রাস্তায় এসেও ঐ অসহায় মায়ের কান্নার শব্দ যেন কানে বাজছে…….

বি.দ্র: যারা অসহায় মানুষের পাশে সবসময় দাঁড়াতে চান। আমি সবিনয়ে তাদের অনুরোধ করবো…দয়া করে এই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ান। তাদেরকে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী রক্ত অথবা টাকা দিয়ে সহযোগিতা করুন। সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন, বাশার(সোহেলের চাচা), বিকাশ নম্বর (পার্সোনাল) 01823-172422

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G