জহির ভূইয়া
টস জিতে আগে বল হাতে নিয়েও হেরেছে বাংলাদেশ! এটা না বলে বলা ভাল তিন প্রতিপক্ষ হারিয়েছে সাকিবদের। ম্যাচের শুরুতেই তাসকিনের বলে মাহমুদুল হাসান হাতে ক্যাচ নিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে হারের ইঙ্গিতটা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। কারণ ক্যাচ মিস তো ম্যাচ – এ প্রবাদ বাক্যটা ক্রিকেটে প্রচলিত ‘আগাম বার্তা।
তবে ম্যাচটিা কিন্তু বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। বৃস্টি এসে ভারতের পক্ষ নিল আর সঙ্গে আইসিসি তো ছিলই। তিন প্রতিপক্ষে বিপক্ষে পেরে উঠেনি বাংলাদেশ। আইসিসির আম্পায়ারা একাধিক ওয়াইড বল নেয়নি! এতে কি প্রমাণ হয়? ৬৬ রানে বিনা উইকেটে থাকা বাংলাদেশ বৃস্টির পর ৫৪ বলে ৮৫ রানের মিশণে সফল হয়নি। এর পেছনে উইকেট আর আউট ফিল্ড-ই দায়ী।
টি২০ বিশ্বকাপে ভারত পরাশক্তি। কিন্তু সেই পরাশক্তিকে টি২০ ম্যাচে কাঁপিয়েছে বাংলাদেশ, যদিও বৃস্টির কল্যাণে হেরেছে। ১৮৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ ওপেনিং জুটি যা করল তা বহু বছর মনে রাখবে ভারত। সৌম্যকে বসিয়ে দিয়ে ওপেনিং করতে এলেন লিটন আর শান্ত। ৭ম ওভার অবদি সংগহ্রহ ৬৬ বিনরা উইকেট! বৃষ্টি নেমে খেলা বন্ধ।
খেলা যখন শুরু হলো তখন টার্গেট চলে গেলে ১৫১ রানে। কর্তনকৃত ওভারে ১৬ ওভারে ১৫১ রান দরকার। ৫৪ বলে ৮৫ বাকী ছিল। অসম্ভব কিছু ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কেবল ভারতই নয়, আইসিসি আর বৃষ্টি! সবই বিপক্ষে, ম্যাচের আগে থেকেই আইসিসি ভারতের পক্ষ। এর সঙ্গে আজ ম্যাচটা যখন বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে, তখনেই এলো বৃষ্টি। ভেজা আউট ফিল্ড আর ভেজা উইকেটে রান করা কঠিন ছিল। বৃষ্টির পর শুরু থেকেই বাংলাদেশ ২০-এর পার্থক্য শেষ অবদি ৫-এ গিয়ে থামে।
৫ ওভারে ভারত যেখানে সংগ্রহ করেছে ২৮ রানে ১ উইকেট! ষেখানে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৪৪ রান। তাতে লিটন ১৯ বলে ৪১ রান, তাতে ৫টি বাউন্ডারি আর ২ ছক্কার মার। ৬ষ্ঠ ওভারে ১ম আর ২য় বলে লিটন বিশাল ছক্কা আর ১ চারে মাত্র ২১ বলে করলেন ক্যারিয়ারের ৮ম টি২০ ফিফটি। এই ফিফটিতে ছিল ৭টি বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কার মার। লিটনের ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশ ৭ ওভার শেষে স্কোর বোর্ডে জমা করে ৬৬। এরপরই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। তখন বাংলাদেশের নামের পাশে দরকার ছিল ৭৮ বলে ১১৯। বৃস্টির পর যদি খেলা শুরু হয় তাহলে ১০ ওভারে টাইগারদের স্কোর বলে দেবে ম্যাচ কোন দিকে যাচ্ছে। তবে যদি বাংলাদেশ জিতে যায়, তাহলে সেমি প্রায় নিশ্চিতই বলা যায়।
বৃস্টির পর ৪ ওভার কেটে ১৬ ওভারে ১৫১ রানের টার্গেট আসে। আহে ছিল ৬৬/০, এখন ৫৪ বলে ৮৫ রান করতে হবে। ৮ম ওভারের প্রথ বলেই পিছলা মাঠে লিটন রান নিতে গিয়ে পড়ে গেলেন। হাতে ব্যাথাও পেলেন, এবং পরের বলে রান আউট হলেন ২৭ বলে ৬০ রান করা লিটন। এরপর শান্ত ২৫ বলে ২১ রানে ক্যাচ দিলেন। ৯.১ ওভারে ৮৪/২, সাকিবের সঙ্গে ক্রিজে তখন আফিফ। শেষ দিকে ৩৬ বলে (৬ ওভার) টার্গেট দাঁড়ায় ৬৩ রান। রান তোলাই কঠিন হয়ে পড়ে সাকিব-আফিফ জুটির। কিন্তু সাকিব পর পর দুই বাউন্ডারি মেরে খানিকটা রান এগিয়ে দিলেন। কিন্তু ৩০ বলে ৫২ রান, পার্থক্য ২২ বল। বিগ হিট করে আফিফ ৩ রানে ক্যাচ দিলেন। লিটন-আফিফের পর একই ভাবে সাকিব ক্যাচ তুলে বিদায় নিলে শেষ ভরসার জায়গাটাও শেষ হয়ে যায়।
আউট হলেন ইয়াসিরও, শেষ দিকে ২০ বলে ৪৩ রানের কঠিন মিশনে সোহান আর সৈকত। বোল্ড হলেন সৈকত। পেসার তাসকিন আর সোহান যুদ্ধ করছেন ৯ বলে ২১ রানের জন্য। তাসকিন এক চার আর এক ছয় মেরেও হলো না। শেষ ৬ বলে জয় পেতে ২০ রান দরকার ছিল। সোহান ১৪ বলে ২৫ আর তাসকিন ৭ বলে ১২, কিন্তু তাতে তো হলো না। ৫ রানে হার, স্কোর ২০ ওভারে বৃস্টি আইনে ১৬ ওভারে ১৫১ রানের টার্গেটে ১৪৫/৬।