বাসাইলে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ-চাষীরা

প্রকাশঃ জানুয়ারি ৭, ২০১৬ সময়ঃ ২:৫৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৫১ অপরাহ্ণ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ইরি প্রকল্পগুলো এখন সরিষা ফুলে সমৃদ্ধ। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদের সমারোহ। বন্যার পানি নেমে যাবার পর ইরি ধানের চারা রোপণের পূর্বে এখানকার জমিতে রোপন করা হয় সরিষা বীজ। এ গাছ বড় হবার পাশাপাশি এর মাথায় ফোটে হলুদ ফুল। আর এই ফুল মধু উৎপাদনের প্রধান উৎস। মৌ-চাষীরা সরিষা ক্ষেতে শুরু করেছে কৃত্রিম মৌ-চাষ।

টাঙ্গাইল

জানা যায়, এবার বাসাইল পৌরসভা, কাঞ্চনপুর, কাউলজানী, নাকাছিম, কলিয়া, বার্থা, নাইকানবাড়ী, পৌলী সহ বিভিন্ন এলাকার সরিষা ক্ষেতের ফাঁকা জমিতে সারিবদ্ধভাবে বসানো হয়েছে ১ হাজার ২ শতটি মৌ-মাছির বাক্স। দিনের বেলায় মৌমাছি সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে মৌ সাজায়। এক সপ্তাহের মধ্যেই মধুতে ভরে ওঠে মৌচাক।

উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কৃষি কর্মকর্তা শামসুল হক জানান, গত সপ্তাহে উপজলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে ১ হাজার ২ শতটি বাক্স বসিয়ে প্রায় ১শত ২০ মণ মধু উৎপাদন করেছে মৌ-চাষীরা। এতে প্রতি কেজি মধু বিক্রি করছে ৩ শত টাকা করে। ১শত ২০ মণের মধুর মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা বিক্রি করেছে মৌ-চাষিরা। বাসাইল থেকে মৌ-চাষিদের এক মাসে প্রায় ৫শত মণের বেশি মধু সংগ্রহের সম্ভাবনা রয়েছে।

মির্জাপুর থেকে আসা মৌ-চাষী আব্দুল হালিম বলেন, তার খামারে ৫০টি বাক্স বসানো হয়েছে। এর থেকে ১৫ দিনে প্রায় ১৪ মণ মধু উৎপাদন হয়েছে। এক মাসে এখান থেকে ৩০ মণ মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি কেজি মধু পাইকারী দরে ৩ শত টাকা করে বিক্রি করেছি।

সাতক্ষিরা থেকে আসা মৌ-চাষী আবু জাবের বলেন, আমি ১শত ৫০টি বাক্স বসিয়েছি। আমার এক সপ্তাহে ১৫ মণ মধু উৎপাদন হয়েছে।

টাঙ্গাইল

জানা যায়, মৌ-চাষীরা বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং যাদের মৌ-চাষে অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের কোন দিন অলসতায় পায় না। মৌ-মাছির বংশ বিস্তার মধু সংগ্রহ ও ফ্রেম থেকে মোম পাওয়া যায় তা সবই বিক্রি করা যায়। যার ফলে মৌ-চাষীরা লাভবান হচ্ছেন। সরিষা ফুলের মধু যেমন খাঁটি তেমনি সুস্বাদু। মানের দিক থেকেও উন্নত হয়।

এ মৌসুমে মধুর চাহিদাও বেশি থাকে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মধু উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য হয়। তবে মৌমাছি সংরক্ষণে অনেক সময় চাষীদের সংকটে পড়তে হয়। বিশেষ করে প্রচন্ড শীতে অনেক মাছি মারা যায়। এছাড়া রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করাও সম্ভব হয় না। এজন্যে তারা প্রাণীসম্পদ বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেন।

এদিকে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান মৌ-চাষীদের মৌ-চাষে উৎসাহ দিতে তাদের সাথে দেখা করতে যান বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানান, মৌ-চাষ করলে যেমন একদিনে চাষীরা লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে মৌমাছি সরিষার পরাগায়ণে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে। মৌমাছির মাধ্যমে সরিষার ফলনও প্রায় ২০% বেড়ে যায়।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/জেডএমলি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G