WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব নদীর মতো বহমান ও উদার ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব নদীর মতো বহমান ও উদার

ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব নদীর মতো বহমান ও উদার

প্রকাশঃ এপ্রিল ৭, ২০১৭ সময়ঃ ১২:০২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:০৩ অপরাহ্ণ

চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ সকালে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক এ সফরকে সামনে রেখে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাঁর লেখা একটি কলাম প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দু’দেশের বন্ধুত্ব, পারস্পরিক সহযোগিতাসহ বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। নিচে প্রতিক্ষণের পাঠকদের জন্য তা দেওয়া হল:

প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় এই নীতি নিয়েই আমার পথ চলা। আমার রাজনৈতিক চেতনায় একটাই আকাঙ্ক্ষা, প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জন্য এমন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই যেখানে মানুষ দারিদ্রে কষ্ট পাবে না, তার জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো পূর্ণ হবে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার সুযোগ মিলবে। জীবন হবে উন্নত মানের এবং সুন্দর।

জনকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গের শিক্ষা আমি পেয়েছি আমার বাবার কাছ থেকে। আমার বাবা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের ব্রত নিয়ে রাজনীতি করেছেন। অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করেছেন। বার বার কারাবরণ করেছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন, তবু নীতির প্রশ্নে অটল থেকেছেন। তার নেতৃত্বেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

সেই স্বাধীনতার লক্ষ্য কাছে এনে দিয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলির সমর্থন ও সহযোগিতা। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ভারতের।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সামরিক জান্তা নিরস্ত্র বাঙালির উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে শুরু করে গণহত্যা। বাংলার মানুষ ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন দেয়। সেই প্রথম বাঙালি পাকিস্তানের শাসনভার হাতে নেওয়ার অধিকার অর্জন করে।

পূর্ববঙ্গের জনগণই পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। তবুও তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হয় না। বঞ্ছিত, শোষিত বাঙালির মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পর্যন্ত ছিল না। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে জাতির পিতা তখন বাঙালিকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ হাতে অস্ত্র তুলে নেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

পাক শাসক এবং তাদের বাংলাদেশি দোসররা বাঙালিদের ওপর গণহত্যা, ধর্ষণ, লুঠপাট, অগ্নি-সংযোগসহ নৃশংস অত্যাচার শুরু করে। ভারতের জনগণ ও সরকার আমাদের পাশে দাঁড়ান। প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেন। বিশ্বজনমত গঠনে বিশেষ ভূমিকা নেন। আমাদের দেশ শত্রুমুক্ত হয়। ভারতের জনগণের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার মা, তিন ভাই, ভ্রাতৃবধূসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হারাই। আমার ছোট বোন রেহানা ও আমি বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে যাই। সে সময়ও ভারত আমাদের পাশে দাঁড়ায়। ছয় বছর দেশে ফিরতে পারিনি। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে দলের সভানেত্রী নির্বাচিত করে। জনসমর্থন নিয়ে আমি দেশে ফিরি। জনগণের মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করি। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করি।

পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। তার ২১ বছর পর আমি জনগণের সেবা করার সুযোগ পাই। দুই দশকের সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি করি। ভারতের আশ্রয়ে থাকা ৬২ হাজার শরণার্থীকে দেশে ফিরিয়ে আনি। ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি হয়।

যে কোনও একটা দেশের উন্নয়নের পক্ষে পাঁচ বছর সময় খুবই কম। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারিনি। বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় আসে। যা যা অর্জিত হয়েছিল, ধ্বংস হতে বসে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, দুঃশাসন মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। সংখ্যালঘুর ওপর নেমে আসে নির্যাতন। দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি থেমে যায়। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অত্যাচারিত হন। দেশে জরুরি আইন বলবৎ হয়।

সাত বছর পর (২০০৮) নির্বাচন হলে আমরা জয়ী হই, সরকার গঠন করি। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও ১০ বছর মেয়াদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করি। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করি।

বাংলাদেশে এখন প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ১ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। দারিদ্রের হার কমেছে ২২ শতাংশ। এই মুহূর্তে আর্থ-সামাজিক সূচকের অনেকগুলোতেই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের থেকে এগিয়ে। কয়েক বছর আগেও কিন্তু আমাদের স্থান ছিল তলানিতে। তবে এই সমৃদ্ধি বজায় রাখতে হলে এখনও অনেক দূর যেতে হবে।

দারিদ্র এই গোটা অঞ্চলেরই প্রধান শত্রু। ভারত ও বাংলাদেশে এখনও বহু মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছেন। পুষ্টির অভাবে অনেক শিশুর বৃদ্ধি ঠিকমতো হচ্ছে না। স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা থেকে তারা বঞ্চিত। এই অবস্থা বদলাতেই হবে। আমাদের সামর্থ্য আছে, কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। তবে, এটা বিশ্বায়নের যুগ। বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু করা খুব শক্ত। বরং একে অন্যকে সাহায্য করলে অনেক কঠিন কাজও সহজ হয়ে যায়। এ জন্যই আমি আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং উন্নত যোগাযোগকে গুরুত্ব দিই।

একমাত্র শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই শান্তি নিশ্চিত করে। দুই দেশের মধ্যে যা কিছু কথাবার্তা, শান্তিপূর্ণ ভাবেই তার সমাধান সম্ভব বলে মনে করি। স্থল-সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে আমাদের সদিচ্ছার দৃষ্টান্ত রেখেছি। দু’দেশে প্রবাহিত নদী (এখন আলোচ্য তিস্তা) ছাড়াও কিছু বিষয়ের সমাধান প্রয়োজন। আমি আশাবাদী মানুষ। ভারতের জনগণ ও নেতৃত্বের উপর আস্থা রাখতে চাই। সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, তবু এই সীমিত সম্পদই আমরা দু’দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যবহার করতে পারি। আমরা একই সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উত্তরসূরি। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আমাদের অনেক কিছুই মেলে। লালন, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল, জীবনানন্দ আমাদের উভয়েরই। বাংলা ভাষা আমাদের উভয়েরই। পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা নদীর জল পায় দু’দেশই। সুন্দরবন উভয়েরই গর্ব।

এ নিয়ে আমাদের কোনও দ্বন্দ্ব নেই। তবে একটি নদীর জলবণ্টন নিয়ে একমত হতে বাধা কোথায়? ‘বন্ধুতা হোক, বৈরিতা নয়,’ এই বৈদেশিক নীতি নিয়ে আমরা পথ চলছি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর, ২০০৯ থেকে দুই দেশের সহযোগিতা বহু গুণ বেড়েছে। রেল, সড়ক ও জলপথে যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মানবিক যোগাযোগ সবই বেশি হচ্ছে। দু’দেশের পক্ষেই তা মঙ্গলজনক। ব্যক্তি বা জাতীয়, উভয় পর্যায়েই সম্পর্ক নির্ভর করে পারস্পরিক দেওয়া-নেওয়ার ওপর।

মেক্সিকোর নোবেলজয়ী কবি অক্টোভিয়ো পাজ ‘ইন লাইট অব ইন্ডিয়া’ বইতে লিখেছেন, ‘ফ্রেন্ডশিপ ইজ আ রিভার…’। তিনি বন্ধুত্বকে নদীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বও নদীর মতো বহমান ও উদার। উদ্দেশ্য মহৎ হলে, কল্যাণকর ফলও সম্ভব। আমার চার দিনের ভারত সফরের প্রাককালে সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। প্রত্যাশা রইল, এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সহযোগিতা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G