WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

মান্না দে: সেলুলয়েড স্মৃতি রোমন্থন মান্না দে: সেলুলয়েড স্মৃতি রোমন্থন

মান্না দে: সেলুলয়েড স্মৃতি রোমন্থন

প্রকাশঃ অক্টোবর ২৪, ২০১৫ সময়ঃ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

mannaকফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী সেদিনগুলো সেই
আজ আর নেই
আধুনিক বাংলা গান বলতে কী বুঝবো? বাংলা গান নিয়ে রচিত লেখাজোখায় এ-প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মোটাদাগে দুটো পক্ষ তৈরি হয়েছে। একদল মনে করেন, আধুনিক বাংলা গানের শুরু আদি ও অকৃত্রিম রবীন্দ্রনাথের হাতে। আরেক দল মনে করেন, আধুনিক বাংলা গান নজরুল-পরবর্তী জামানার জিনিস। এপ্রসঙ্গে ‘কালচার ইন্ডাস্ট্রি’র দিকেও আমাদের একটু মনোযোগ দেওয়া দরকার। গত কয়েক দশক ধরে গানের দোকানগুলোতে ‘বেস্ট অব আধুনিক বাংলা গান’ ধরনের কিছু অ্যালবাম দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারি অ্যালবামের মাধ্যমেও ‘আধুনিক বাংলা গান’-এর একটি আইডিয়া তৈরি হচ্ছে। এই আইডিয়াতে, লক্ষণীয়ভাবে, জোর দেওয়া হয়েছে আধুনিক গানের শিল্পীদের উপর। রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলের গান এসব সংকলনে কালেভদ্রে থাকলেও সেগুলো প্রসিদ্ধি পেয়েছে হেমন্ত বা মান্না দে’র গান হিসেবেই।

কফি হাউজের কথা

কফি হাউস’ গানটি মূলত একজন ভেটেরান আড্ডাবাজের জবানিতে কফি হাউসের আড্ডার দিনগুলোর স্মৃতিচারণ। এই গানের মধ্যে ছয়জন আড্ডাবাজের কথা জানা যাচ্ছে। এক, নিখিলেশ স্যান্যাল : আর্ট কলেজের ছাত্র; পরে সেটল করেছে প্যারিসে। দুই, মঈদুল : কাগজের রিপোর্টার; পরে হিজরত করেছে ঢাকায়। তিন, রমা রায় : অ্যামেচার নাটকের অভিনেতা; ‘কাকে যেন’ ভালোবেসে ব্যথা পেয়ে পরে যার ঠাঁই হয়েছে পাগলা গারদে। চার, গোয়ানিস ডি সুজা : গিটারিস্ট; এখন আর সে বেঁচে নেই। পাঁচ, অমল : একজন কবি, কোথাও যার কবিতা ছাপা হয় না; ‘এখন’ কান্সারে ধুকছে। সুজাতা : তখনকার কথা কিছু বলা নেই; তবে পরে এদের মধ্যে সবচেয়ে সুখী, তার স্বামী লাখপতি।
গানে মোট সাতজন আড্ডাবাজের কথা বলা হলেও আমরা পাচ্ছি ছয়জনের গল্প। এখানে অনুক্ত ব্যক্তিটি কে? এই গানটি নিয়ে প্রচলিত বয়ানের দিকে তাকালে বোঝা যায়, শ্রোতারা সহজভাবে ধরে নিয়েছেন : এই প্রচ্ছন্ন কথক হলেন মান্না দে স্বয়ং।এটা প্রাইভেট পরিসরে শ্রোতার মনের কোণে জন্ম নেয়া আন্দাজমাত্র নয়।অনুসন্ধানের মাধ্যমে এর পক্ষে উপযুক্ত সাবুদও যোগাড় করে নেয়া হয়েছে। ২০১২ সালের মাঝামাঝি ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে প্রচারিত একটি রিপোর্ট থেকে আমরা ‘ঢাকার মঈদুল’-এর কথা জানতে পারি। রিপোর্টে বলা হয়, মঈদুল যখন সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়ছেন তখনই মান্না দে-অমলদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব। ১৯৬৪ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার প্রেক্ষিতে মঈদুল চলে আসেন ঢাকায়। মঈদুল জানান, ‘মান্না দের সাথে আমার খুব বন্ধুত্ব ছিল। তার কারণ, মান্না দের প্রথম জীবনটা কেটেছে খুব কষ্টে। তার বাবা-মা চেয়েছিলেন মান্না দে ওকালতি করুক, ব্যারিস্টার হোক।’ গত ২৪ অক্টোবর, ২০১৩ মান্না দে প্রয়াত হলে মঈদুলের আরেকটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয় ইন্ডিপেনডেন্ট-এ। ওই দিন তিনি পরিষ্কার মনে করতে পারেন, কফি হাউসের আড্ডায় সুজাতা আসতো গাড়ি নিয়ে। সে টিফিন ক্যারিয়ারের চৌকোনো বাটির মধ্যে পিঠাপুলি ভেজে নিয়ে আসতো। ১৯৭৮ সালে মঈদুল একবার মান্না দে’র বাড়িতেও গিয়েছিলেন।

মোটামুটি নিখুঁত, ডিটেইল ভাষ্য। মঈদুলের এই সাক্ষ্য খুবই গুরুত্বের দাবি রাখে। কিন্তু মুশকিল হলো, তার কথাগুলো নিয়ে একটু তলিয়ে ভাবলেই গড়বড় মনে হবে অনেক কিছু। মঈদুল (পুরো নাম নূর আহমেদ) জন্মেছেন ১৯৩৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে। আর মান্না দে‘র জন্ম ১৯১৯ সালে। দুজনের বয়সের এই ১৭ বছরের ব্যবধান মনে রাখলে সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়ার সময় মান্না-মঈদুলের বন্ধুত্ব কিছুটা বেখাপ্পা ঠেকে। মান্নার আত্মজীবনী থেকে জানা যাচ্ছে, তিনি পড়াশোনা করেছেন স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুলে, ইন্দুভূষণ মাস্টারমশাইয়ের পাঠশালা শেষ করে। আর, মঈদুলের মতে, তাদের কফি হাউসের দিনগুলো কেটেছে ১৯৬৪ সালের কলকাতায়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, ১৯৪২ সালেই মান্না দে তার কাকা কৃষ্ণচন্দ্র দে’র সঙ্গে চলে গেছেন মুম্বাই। সেখানেই তিনি থিতু হয়েছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা, ২০০৮ সালে মান্না যখন ঢাকায় এলেন তখন প্রথম আলোর সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে বলেছেন, তিনি কোনোদিন কফি হাউসে যাননি। এসব কথা মনে রাখলে মঈদুলের সাক্ষ্য একটা দারুণ দুশ্চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

কিন্তু আমাদের মূল বক্তব্য ঠিক এসব ডিটেইল ব্যাপার নিয়ে নয়। মূল কথাটা ধরতে হলে আগে আমাদের ‘কফি হাউস’ গানটার উপর মনোযোগ দিতে হবে। মান্না দে এই গানটি গেয়েছিলেন ১৯৮৩ সালে। গানের রেকর্ডিং হয়েছিল মুম্বাইতে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, গানটি রচনা করেছেন গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার। সুর করেছেন সুপর্ণকান্তি ঘোষ। মান্না দে শুধু গানটা গেয়েছেন। আমরা তাহলে কেন ধরে নিচ্ছি, কফি হাউসের প্রচ্ছন্ন কথক হবেন অবধারিতভাবে মান্না দে? এই ভাষ্য তিনি লেখেননি। এটা গৌরীপ্রসন্নের লেখা গান। গানের কথক হিসেবে যদি কাউকে ধরে নিতেই হয়, এবং তার যদি ‘অস্তিত্বশীল মানুষ’ হবার এত দিব্যি থেকেই থাকে, তবে সেটা হবেন গৌরীপ্রসন্ন নিজেই। আমরা কেন ভুলভাবে মান্না দে’র উপরেই দায় চাপাচ্ছি?

এই ‘মতিভ্রম’-এর সূত্র ধরেই আমরা পুরনো প্রশ্নটাকে ধরতে চাই : কাকে বলে আধুনিক বাংলা গান? আমজনতার মনে আধুনিক বাংলা গানের যে আইডিয়া তৈরি হয়েছে সেখানে গানের গীতিকার সেলিব্রেটি ইমেজ হারিয়েছেন। তাকে টপকে একেবারে সামনের সিটে এসে পড়েছেন গানের শিল্পী। তিনিই এখন বাংলা গানের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। কিন্তু ‘আধুনিক বাংলা গান’-এর যে ‘বিশৃঙ্খল ডিসকোর্স’ সেখানে তো রবীন্দ্রনাথ-নজরুলও আছেন। ফলে, গানের গীতিকার-সুরকার-গায়ক যে অভিন্ন সেই ধারণাটাও প্রচ্ছন্নভাবে মনে রয়ে গেছে। নজরুল-পরবর্তী যুগে এসে এই পুরনো চাল যে তামাদি হয়েছে সেটা ‘জনমানস’ ঠিক খেয়াল করে ওঠেনি। ফলে, কফি হাউসের ‘গুপ্ত কথক’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন ‘প্রকাশ্য‘ মান্না দে।

মঈদুলের অদ্ভুত সাক্ষ্যটিকে ‘আধুনিক বাংলা গান’-এর আইডিয়ার বিবর্তনের সঙ্গে মিলিয়ে পাঠ করতে হবে। মঈদুল আসলে বাংলা গানের এই হোল্ড-অল ডেফিনেশন-এর কাছে পরাজিত এক বাস্তব চরিত্র। নিজের শেষ বয়সে এসে তিনি বাস্তব জীবনটাকে যাপন করার চেয়ে বাছাই করেছেন ঢাকার মঈদুল-এর ফিকশনাল জীবন। অগুনতি যে বাঙালি শ্রোতারা ভোট দিয়ে বিবিসির শ্রেষ্ঠ গানের তালিকাতে কফি হাউসকে ঢুকিয়ে দিয়েছেন, তাদের সঙ্গে মিলেমিশে তিনিও বুনে গেছেন ‘ফিকশনাল মেমরি’র এক উর্ণাজাল। তার নিজস্ব ইতিহাসে হয়ে গেছেন মান্না দে’র তারুণ্যের সহচর, এতদূর পর্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ তার এই ফিকশনাল জাবর-কাটা যে সুজাতার টিফিন ক্যারিয়ারটিকেও তিনি পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছেন। ফলে, মান্না দে’র মৃত্যুর খবরে তিনি সত্যি-সত্যিই ভীষণভাবে মুষড়ে পড়েন। প্রিয় বন্ধু হারানোর শোক তাকে বিহ্বল করে ফেলে। আধুনিক বাংলা গানের প্রতাপশালী ডিসকোর্স এভাবে বাস্তব থেকে ব্যক্তিকে উৎপাটন করে নিয়ে যায় ফিকশনের স্তরে।

‘স্মৃতি’ সম্পর্কে দীপেশ চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘স্মৃতিমন্থন এক ধরনের সামাজিক সুখ… স্মৃতিবন্ধন মানুষের বাঁচবার রসদ ও উপায়’। ফলে, মঈদুলের স্মৃতিচারণ আসলে পুনর্বার আমাদের মনে করিয়ে দেয় স্মৃতি ‘একটি জটিল বিষয়’। স্মৃতি কেবল ‘মন’ আশ্রয় করে বাঁচে না। আমাদের শরীরে, অভ্যেসে, প্রাত্যহিকতায়, শিক্ষায় জড়ানো থাকে স্মৃতি। স্মৃতির অনেকটা সামাজিক ব্যবহারেরও অংশ।
এই দুই-তিন রকমের ধারণা মিলে-মিশে আধুনিক বাংলা গানের একটি বিশৃঙ্খল ডিসকোর্স তৈরি হয়েছে। এখানে, প্রাক-উপনিবেশী পর্বটুকু ছেঁটে নিলে, সকলেই সমানভাবে ‘আধুনিক’। উনিশ শতকের শেষ বেলা থেকে নিয়ে বিশ শতকের আশির দশক পর্যন্ত এই দীর্ঘ কালপর্বে বাংলা গানের আলোড়ন তো কম নয় একেবারে। কিন্তু ‘আধুনিক’-এর এই অতিব্যাপ্ত ডেফিনেশনে তারা সকলেই সমগোত্রীয়। রজনীকান্তের ভক্তিগান এবং গৌরীপ্রসন্নের বিশুদ্ধ রোমান্স দুটোই ‘আধুনিক’। নজরুল-যুগকে ধরেও সমস্যাটা কিছুদূর বুঝতে পারা যাবে। নজরুলের আগে যাদের গান পাচ্ছি তারা একাধারে গান লেখেন, সুর বসান, গায়কী তৈরি করে দেন। নজরুলের পর থেকে বিভাজন শুরু হলো। গান-সুর-কণ্ঠের জন্য তিনজন আলাদা লোকের দরকার পড়লো। অথচ আধুনিক বাংলা গানের হাটে এরা সকলেই এক গোয়ালের।

‘আধুনিক গান’-এর এই ‘ব্যপ্তি-দোষ’-এর ফলে শ্রোতার পক্ষে একটা ভীষণ মুশকিল হয়েছে যে, তারা কিছুতেই ‘আধুনিক গান’-এর ভূগোলটাকে লব্‌জে আনতে পারছেন না। ‘আধুনিক গান’ বোঝার এই জটিলতা প্রভাব ফেলেছে বিচিত্র সব ক্ষেত্রের উপর। আমাদের ধারণা, ‘কফি হাউস’ গানে অনুক্ত সপ্তম আড্ডাবাজের সন্ধান করতে গিয়েও বাংলা গানের শ্রোতারা ওই একই সমস্যার ঘূর্ণাবর্তে পড়েছেন।

মান্না পরিচয়

বাবা পূর্ণ চন্দ্র এবং মা মহামায়া দে’র সন্তান প্রবোধ চন্দ্র দে দে ১ মে ১৯১৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পরে মান্না দে নামেই সর্বজন পরিচিত ছিল। ‘তামান্না’ (১৯৪৩) চলচ্চিত্রে গায়ক হিসেবে মান্না দে‘র অভিষেক ঘটে। সুরাইয়া’র সাথে দ্বৈত সঙ্গীতে গান এবং সুরকার ছিলেন কৃষ্ণ চন্দ্র দে। ঐ সময়ে গানটি ভীষণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। ‘মশাল’ (১৯৫০) ছবিতে শচীন দেব বর্মণের গীত রচনায় ‘ওপার গগন বিশাল’ নামে একক গান গেয়েছিলেন। এর গানের কথা লিখেছিলেন কবি প্রদীপ। ১৯৫২ সালে মান্না দে বাংলা এবং মারাঠী ছবিতে একই নামে এবং গল্পে ‘আমার ভূপালী’ গান গান। এরফলেই তিনি প্রতিষ্ঠিত ও পাকাপোক্ত করেন এবং জনপ্রিয় গায়ক হিসেবে সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছ থেকে স্বীকৃতি পান।

মান্না দে ভীমসেন জোসি’র সাথে একটি জনপ্রিয় দ্বৈত গান ‘কেতকী গুলাব জুহি’ গান। এছাড়াও, তিনি কিশোর কুমারের সাথে আলাদা গোত্রের দ্বৈত গান হিসেবে ‘ইয়ে দোস্তী হাম নেহী তোড়েঙ্গে (শোলে)’ এবং ‘এক চতুর নার (পডোসন)’ গান। এছাড়াও, মান্না দে শিল্পী ও গীতিকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (হেমন্ত কুমার)সহ আরো বেশকিছু গীতিকারের সাথে বাংলা ছবিতে গান গেয়েছিলেন। দ্বৈত সঙ্গীতে লতা মঙ্গেশকরের সাথে ‘কে প্রথম কাছে এসেছি (শঙ্খবেলা)’ গান করেছেন। রবীন্দ্র সঙ্গীতসহ প্রায় ৩৫০০ গান গেয়েছেন মান্না দে।

প্রতিক্ষণ/এডি/এসএবি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G