হামিং বার্ড নামের ছোট্ট পাখি
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
ছোট্ট পাখি হামিং বার্ড। মাত্র ৭ থেকে ১৩ সেমি আকৃতির এই পাখিটিই পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট পাখি। সবচেয়ে ছোট বলেই কেবল এই পাখিটি বিশেষ তা নয়, রঙবেরঙের এই পাখিটির সৌন্দর্যও রূপকথা সমতুল্য।
ইংরেজি Humming অর্থ গুনগুন করা। ছোট এ পাখি যখন প্রচন্ড গতিতে পাখা নাড়ে তখন গুনগুন শব্দ হয়, এজন্য একে হামিং বার্ড বলা হয়।
বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, হামিং বার্ড সেকেন্ডে ১২ থেকে ৯০ বার ডানা ঝাঁপটাতে পারে।আরও অবাক ব্যাপার, তারা ঘণ্টায় উড়তে পারে ৫৪ কিমি। এই পাখিটি আকাশে হেলিকপ্টারের সমান উচ্চতায় উঠতে পারে।
ছোট্ট এই পাখিটির আরও মজার সব বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন হামিং বার্ডের খাবার হজম করার করার ক্ষমতা অবিশ্বাস্য রকম। সারাদিন এরা নিজের শরীরের ওজনের সমান খাবার খায়৷
এছাড়া, হামিং বার্ডই একমাত্র পাখি যারা সামনে-পিছনে, ডানে-বামে, উপরে-নিচে সব দিকে উড়ে যেতে পারে। এদের এরূপ উড়ার রহস্য লুকিয়ে আছে এর ডানার গঠন, কাঁধের জোর এবং অতি শক্তিশালী পেশীর মাঝে। এরা এত দ্রুত উড়তে পারলেও অন্যান্য পাখির মত এরা হাঁটতে পারে না এবং বেশি সময় দাঁড়িয়েও থাকতে পারে না। শীত সহ্য করতে পারে না বলে এদের কিছু প্রজাতি হাজার হাজার কিলোমিটার পথ উড়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় গরমের দেশে।
হামিং বার্ডের খাদ্য তালিকায় আছে ফুলের মধু আর পোকামাকড়। হামিং বার্ড প্রজাতিভেদে ৩ থেকে ৫ বছর বেঁচে থাকে।
এরা সাধারনত গাছের ডালে বাসা বেঁধে থাকে। বাসা তৈরির জন্য শুকনো ঘাস, লতাপাতা, গাছের বাকল, ছত্রাক, মাকড়সার জাল, শেওলা ব্যবহার করে থাকে। তবে বাসা বাঁধার জন্য স্ত্রী পাখিরাই কাজ করে, পুরুষ পাখিদের এ ব্যপারে কোন চিন্তা নেই। এদের বাসা আকারে কাপের মত হয়। একটি স্ত্রী হামিং বার্ড প্রতিবারে ২ টি ডিম পাড়ে । দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরে ডিম থেকে ছোট হামিং বার্ড বের হয় যা প্রাপ্ত বয়স্ক হতে ৬ থেকে ৭ দিন সময় নেয়।
হামিং বার্ড ছোট হলেও অনেক সাহসী পাখি। নিজেদের এলাকা রক্ষা করার জন্য তারা বড় পাখিদের তাড়িয়ে দেয়। বিপদে পড়লে হামিং বার্ড কর্কশ আওয়াজের মাধ্যমে নিজেদের রক্ষা করে।
এই অদ্ভূত সুন্দর পাখিটি দেখলে যে কারো মন ভালো হয়ে যেতে বাধ্য।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া