WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

আকাশ ছোঁয়া পাহাড়ের উপর নীল পানির বগালেক আকাশ ছোঁয়া পাহাড়ের উপর নীল পানির বগালেক

আকাশ ছোঁয়া পাহাড়ের উপর নীল পানির বগালেক

প্রকাশঃ মার্চ ৩, ২০১৫ সময়ঃ ২:০১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৫ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

DSC06104বান্দরবানে আকাশছোঁয়া পাহাড়ের উপর যে নীল ছোঁয়া পানির সমুদ্র রয়েছে, সেই জায়গাটির নাম বগালেক। বগালেকের চারপাশ ঘিরে রয়েছে দুরন্ত সবুজ পাহাড়ের দেয়াল। সূর্য এখানে অনেক দেরি করে ওঠে, তাই এখানকার মানুষ অনেক আরামপ্রিয়। বগালেকের পানি এতই স্বচ্ছ যে এর নিচের অনেকটু দেখা যায়। বগাপাড়ার মানুষজন এই লেকের পানি খাবার পানি হিসেবে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করে। এই লেক ঘিরে গড়ে উঠেছে অনেক আজব কথা, যেগুলোর মধ্যে ড্রাগন রাজার গল্পটা সর্বাধিক প্রচলিত।

এখানে রাত কাটানোর জন্য যে দোতলা কটেজগুলো রয়েছে, সেখানে ভোরবেলা চোখ খুলে অবাক হয়ে তাকাতে বাধ্য হবেন। যখন বুঝবেন মেঘের মধ্যে বালিশ মাথার নিচে নিয়ে আপনি বিছানায় শুয়ে আছেন। দৃষ্টিসীমা আরেকটু বাড়ালে হতবিহ্বল হয়ে যাবেন, যখন দেখবেন ভোরের আলোকে ছাপিয়ে বগালেকের ঠিক ওপরই হেলতে-দুলতে ভাসছে বিশাল এক রংধনু।

বগা লেক বা বগা হ্রদ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার স্বাদু পানির একটি হ্রদ। ড্রাগনের লেক বা বগালেকের অবস্থান বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কেওকারাডাং এর কোল ঘেঁষে। বান্দারবান শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। রুমা বাজার থেকে দুইভাবে বগা লেকে যাওয়া যায়। আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী প্রিয় হন তো হেঁটে রওনা দিতে পারেন অথবা শুস্ক মৌসুমে যেতে পারেন চাঁন্দের গাড়ি করে। আপনি যে ভাবেই যান না কেন, রুমা বাজার থেকে বাধ্যতামুলক ভাবে সাথে অন্তত একজন গাইড নিতে হবে এবং রিপোর্ট করতে হবে রুমা আর্মি ক্যাম্পে।

বগালেক যাবার হাঁটা পথে ঝিরিপথ ধরে গেলে সময় লাগবে ৫ ঘন্টার মত। এই পথে আপনাকে পাড় হতে হবে অসংখ্য ছোট বড় পাহাড়ি ধিরি। আর শুস্ক মৌসুমে চাঁন্দের গাড়িতে গেলে সময় লাগবে ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মত। পথে পরবে অনেক ছোট বড়ো টিলা। কোন কোন সময় চাঁন্দের গাড়ি এতটাই বাঁকা হয়ে উপরে উঠতে থাকে যে, তখন সামনে আকাশ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না। শুস্ক মৌসুমে সাঙ্গু নদীতে পানি না থাকা এক সময় চাঁন্দের গাড়ি সাঙ্গু নদীও পার হবে।

যাওয়ার পথে কখনো পড়বে বিশাল পাহাড়ি কলার আর নাম না জানা অনেক ফলের বাগান। বগা লেকের নিচ থেকে ট্রাকিং করে উপরে উঠতে আপনার সময় লাগবে ৪৫ মিনিটের মতন। প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রাকৃতিক ভাবে পাহাড়ের চূড়ায় এই লেক তৈরি হয়। এর আয়তন ১৫ একর। এই হ্রদটি তিনদিক থেকে পর্বতশৃঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত। এই শৃঙ্গগুলো আবার সর্বোচ্চ ৪৬ মিটার উঁচু বাঁশঝাড়ে আবৃত। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫৭ মিটার ও ৬১০ মিটার উচ্চতার মধ্যবর্তী অবস্থানের একটি মালভূমিতে অবস্থিত।

গীর্জার প্রান্ত থেকে বগালেকের প্রথম দর্শন আপনার সারা জীবনের মনে রাখা ঘটনা গুলোর মধ্যে একটি হবে। দূর থেকে গাঢ় নীল রং এর বগালেক এর পাশে যে গ্রামটিকে দেখতে পাবেন ওটি নাম বগা মুখ পাড়া। এটা বমদের গ্রাম।

বগালেক, মুরং গ্রামের প্রান্ত হতে অদ্ভুদ সুন্দর এই নীল রঙ্গের লেকের সঠিক গভীরতা বের করা যায়নি। স্থানীয়ভাবে দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ ফুট বলা হলেও সোনার মেশিনে ১৫১ ফুট পর্যন্ত গভীরতা পাওয়া গেছে। এটি সম্পূর্ণ আবদ্ধ একটি লেক। এর আশেপাশে পানির কোন উৎসও নেই। তবে বগালেক যে উচ্চতায় অবস্থিত তা থেকে ১৫৩ মিটার নিচে একটি ছোট ঝর্ণার উৎস আছে যা বগাছড়া (জ্বালা-মুখ) নামে পরিচিত।

সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এই লেকের পানি প্রতি বছর এপ্রিল থেকে মে মাসে ঘোলাটে হয়ে যায়। আর লেকের সাথে সাথে আসে পাশের নদীর পানিও ঘোলাটে রং ধারন করে। কারণ হিসেবে মনে করেন এর তলদেশে একটি উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে। এই প্রস্রবণ থেকে পানি বের হওয়ার সময় হ্রদের পানির রঙ বদলে যায়। প্রচুর বিশালকায় মাছে ভরা। প্রচুর জলজ লতাপাতা আর খাঁড়া পাথরের পাড়ের জন্য চমৎকার তাপমাত্রার এই পানিতে সাঁতার কাটার সময় একটু সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

77679585তবে বগালেকের সবচেয়ে সুন্দর হল রাত। সিয়াম দিদির হাতে রান্না করা রাতের খাবার শেষে কিছুক্ষন বগালেকের পাড়ে পাথরের উপর বসে থাকুন। রাতকে আরো গভীর হতে দিন। সবসময়ই পরামর্শ একা একা কোথাও না যাবার জন্য। সবাই ঘুমায়ে গেলেও আর্মি ক্যাম্পে রাতভর আর্মি টহল চলে। চারদিকে সবাই ঘুমিয়ে গেলে ছোট একটা দল নিয়ে আপনি গির্জার ডান দিকে সরু পথ ধরে পিছনের পাহাড়ের ঢালের বনের দিকে চলে যান। পুর্নিমা থাকলে চাদের আলোয় পথ দেখে চলুন।

অল্প কিছুদূর যাবার পর আপনি একটি শুকনো ঝরনা দেখতে পাবেন। ছোট বড় পাথর পড়ে আছে বিছিন্ন ভাবে। যেকোন একটি পাথরের উপর কোন শব্দ না করে বসে থাকুন কিছুক্ষন। কিছুক্ষনের ভিতর সমস্ত বন জেগে যাবে। চোখ বন্ধ করে শুনুন সে শব্দ। নিশ্তব্ধতার ভিতরে ঝিঝি পোকার ডাক, নাম না জানা নিশাচর পাখির ডাক। অনুভব করুন, মনে হতে থাকবে শব্দগুলো ক্রমশ আপনার দিকে এগিয়ে আসছে। এ রকম রাত বোধ হয় জীবনে একবার ই আসে।

কীভাবে যাবেন
বগালেকে দুভাবে যাওয়া যায়। বাসে ও চান্দের গাড়িতে করে। বান্দরবানের রুমা স্টেশন থেকে পাহাড়িকা বাস ছাড়ে সকাল সাড়ে আটটা, সাড়ে নয়টা ও ১০টায়। সেই বাস কাইক্ষ্যংঝিরিতে পৌঁছালে আপনাকে দৌড়াতে হবে রুমা বাজারে যাওয়ার নৌকা ধরতে। শীতকালে বাস থামে সদরঘাট নামে একটা জায়গায়। রুমা বাজারে নৌকা ভাড়া মাথাপ্রতি ৩০ টাকা। রুমায় নেমে আপনাকে বগালেক যাওয়ার গাইড ঠিক করতে হবে, নাম লেখানো ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে মোলাকাত শেষে দুই হাজার ২০০ টাকায় একটা চান্দের গাড়ি ভাড়া করতে হবে বেলা দুইটার আগেই। দুইটা বেজে গেলে আপনাকে আর যেতে দেওয়া হবে না।

রুমাতেই ওই রাত থেকে যেতে হবে। পরের রাস্তাটুকু বেশ মজার, উথালপাতাল বাড়ি খেতে খেতে দুই ঘণ্টা পর চান্দের গাড়িটি যখন আপনাকে বগালেক পাহাড়ের গোড়াতে নামিয়ে দেবে, তখনই বুঝবেন জীবনে বিশ্রাম কতটা আরামের। এই কথাটা আরেকবার মনে হবে, যখন আপনি এই পাহাড় ডিঙিয়ে বগালেকে উঠবেন। রুমা থেকে বগালেক যাওয়ার সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা হলো ঝিরিপথ। পাথুরে ঝরনার পানিতে পা চুবিয়ে চুবিয়ে সাত-আট ঘণ্টা পার করে আপনি যখন বগালেকে উঠবেন, ততক্ষণে পাহাড়ি বুনো সৌন্দর্যের ওপর আপনার পিএইচডি শেষ করা হয়ে যাবে।

প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G