কোরোনা: অক্সিজেন কমে গেলে কী করবেন?

প্রকাশঃ জুলাই ২৭, ২০২১ সময়ঃ ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস আতঙ্ক এখনও থেমে থাকেনি। প্রতিদিন নিত্যনতুন খবরে মানুষ দিশেহারা অবস্থা। করোনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে কথাটা শোনা যাচ্ছে তা হলো অক্সিজেন ঘাটতি। কোভিড-১৯ মানুষের শরীরে যেসব ক্ষতি করে তার একটি হচ্ছে অনেকেরই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। একজন সুস্থ ব্যক্তির রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা থাকা উচিৎ ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ।অক্সিজেনের মাত্রা খুব সহজে পরিমাপ করার জন্য এখন বহু মানুষের ঘরেই রয়েছে অক্সিমিটার।

কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতিদিন নিয়মিত অক্সিমিটার দিয়ে অক্সিজেন পরিমাপ করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।অক্সিজেন ৯০ এর নিচে নেমে গেলেই সমস্যা শুরু হয়। মাত্রা বেশি কমে গেলে রোগীকে ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়ে অক্সিজেন দেবার দরকার পড়ে।

কিন্তু দরকারের সময় যদি ঘরে অক্সিজেন না থাকে তখন রোগী কিছুটা হলেও শারীরিকভাবে স্বস্তি পেতে পারেন এরকম কয়েকটি সহজ টিপস দিয়েছেন জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক ড. কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর।

রক্তে অক্সিজেন কমে গেলে কী ঘটে: রক্তে অক্সিজেন কমে গেছে কিনা তা অক্সিমিটার ছাড়াও বোঝার উপায় আছে। যেমন মাথা ঝিমঝিম করতে পারে, শরীর দুর্বল লাগতে পারে, শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। অনেকেই অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। রক্তে অক্সিজেন সঠিক মাত্রার চেয়ে কমে গেলে মস্তিষ্কেও অক্সিজেনের ঘাটতি হয় – যা খুবই বিপজ্জনক। শ্বাস নিতে সমস্যা এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি দু:শ্চিন্তার বিষয়।

পোশাক ঢিলেঢালা করা: আঁটসাঁট পোশাকে এমনিতেই শ্বাস নিতে অনেকের সমস্যা হয়। বুক ভরে শ্বাস নেয়া যায়না কারণ এমন পোশাকে ফুসফুসের পেশী প্রসারিত হতে বাধাগ্রস্ত হয়। আর যদি এমনিতেই শরীরে অক্সিজেন কম থাকে – তাহলে সাধারণ পোশাকও কষ্ট দিতে পারে। কোভিড রোগীর শরীরে অক্সিজেন কমে গেলে শুরুতেই পরনের পোশাক ঢিলা করে দিন। টাইট কিছু পরনে থাকলে সেটি খুলে দিন। অন্তর্বাস, প্যান্ট এরকম পোশাক খুলে ফেলুন। মুখের মাস্কও খুলে দিন কারণ মাস্কের কারণেও শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যেতে পারে।

স্থির হোন: 

রোগী নিজে যদি একা থাকেন বা অন্য কেউ যদি তাকে সাহায্য করেন তাহলে কেউই তাড়াহুড়ো করবেন না। শরীরের সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। হাঁটাচলা এমনকি কিছু খেলেও শরীরে অক্সিজেনের চাহিদা আরও বেড়ে যায়।তাই হাঁটাচলা বন্ধ করে স্থির থাকুন। কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

কখন ডাক্তারের কাছে নেবেন: শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যাথা হল শরীরে অক্সিজেন কমে যাওয়ার চিহ্ন। শরীরে অক্সিজেন কিছুটা কমে গেলে তা ঘরেই ম্যানেজ করে নেওয়া সম্ভব বলে জানাচ্ছেন ডাক্তাররা। বাড়িতে অক্সিজেন থেরাপি বা প্রোন ব্রেদিং করে অক্সিজেন লেভেল কিছুটা বাড়ানো সম্ভব। অক্সিজেন ২-১ ঘণ্টা ধরে টানা ৯১-৯২ লেভেলে থাকলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার। বিশেষ করে যাঁদের আগে থেকে শ্বাসকষ্ট আছে, বয়স্ক এবং ফুসফুসের অসুখে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তির জন্য খুব একটা বেশি সময় অপেক্ষা না করাই ভালো।

যদি দেখেন রোগীর গা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে, চামড়া নীল বা ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে, তাহলে বুঝবেন এখনই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন। এগুলি অক্সিজেন লেভেল উদ্বেগজনক ভাবে কমে যাওয়ার চিহ্ন। এছাড়া মাথা যন্ত্রণা, এক নাগাড়ে কাশি, ছটফট করা, হাঁপানো, বুকে ব্যাথা শরীরে অক্সিজেন কমে যাওয়ার উপসর্গ।

যোগাযোগ:  জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, মাংসপেশি ও গাঁটে ব্যথাসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দিলে আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর: ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১।

সচেতনতা: সচেতনতাই পারে আপনাকে এ দুর্যোগ থেকে অনেকটা বাঁচাতে। নিজে সতর্ক হোন। অন্যকেও সচেতন করুন। 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাই

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

March 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
20G