মায়ের পর বাবাকে হারালেন কভিড চিকিৎসক

প্রকাশঃ জুলাই ৯, ২০২১ সময়ঃ ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

‘আমি আর ডাক্তারি পেশায় থাকতে চাই না’।  করোনায় বাবা-মাকে হারানোর পর কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক জাকি উদ্দিন একথা বলেন।

উল্লেখ্য, করোনায় মাকে হারানোর পর ছয় মাসের ব্যবধানে বাবাকেও হারালেন তিনি। গত বুধবার রাতে তাঁরই তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাবা সালাউদ্দিন (৬৬)। তবে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না, জানা যায়নি। পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা নেওয়া হয়েছে।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাস ছয়েক আগে মারা যান জাকি উদ্দিনের মা জাহানার নাসরিন (৫৬)। সে সময় তাঁর পরিবারের সবাই ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা নেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেখানে আইসিইউতে থাকা অবস্থায় তাঁর মা মারা যান। জাকিদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁওয়ে।

ছয় মাসের ব্যবধানে মা-বাবাকে হারানোর দায় নিজের কাঁধেই নিচ্ছেন চিকিৎসক জাকি। গত বুধবার রাতে বাবাকে হারানোর পর ফেসবুকে আবেগঘন এক স্ট্যাটাসে জাকি বলেন, ‘করোনা ইউনিটে চাকরি করে মা-বাবাকে মেরে ফেললাম। আমি আর এ পেশায় থাকতে চাই না।’

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. রেজাউল করিম বলেন, জাকি উদ্দিন এই মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করার পর এক বছর আগেই ৩৯তম বিসিএসের মাধ্যমে করোনা ইউনিটে চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন। তাঁর মা-বাবার মৃত্যুতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

জাকি উদ্দিনের সহকর্মীরা জানান, তিনি মা-বাবার মৃত্যুর জন্য কভিড ইউনিটে দায়িত্ব পালনকে দায় দিচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, করোনা চিকিৎসকদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বন্ধ করে দেওয়ার পর জাকি বিভিন্ন সময় বাসায়ই কোয়ারেন্টিন পালন করতেন। এই কারণে তিনি হয়তো বলতে চেয়েছেন, তাঁর মাধ্যমেই মা-বাবা করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকবেন।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আতাউর রহমান জসিম জানান, করোনা চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য আলাদাভাবে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে সরকারি আদেশেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা থাকলে করোনা চিকিৎসক-নার্সদের পরিবার করোনার ঝুঁকি থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকতেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

March 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
20G