WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

অবিভাবকদের জন্য ইসলামের পরামর্শ অবিভাবকদের জন্য ইসলামের পরামর্শ

অবিভাবকদের জন্য ইসলামের পরামর্শ

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৫ সময়ঃ ৪:৫৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৫৫ অপরাহ্ণ

ধর্ম চিন্তা ডেস্ক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

Muhammad2নবী-রাসূলগণ ছিলেন ইনসানে কামেল, মানবিক গুণাবলির পূর্ণাঙ্গতম প্রতিফলন যাদের জীবনে ঘটেছে।

নবী-রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে সরাসরি দিকনির্দেশনাপ্রাপ্ত, তাই তারা ছিলেন নির্ভুল, আদর্শিক উচ্চতার শীর্ষচূড়ায় অধিষ্ঠিত।

সাধারণ মানুষের পক্ষে নবী-রাসূলগণের মতো ইনসানে কামেল হওয়া দু:সাধ্য হলেও আমল আখলাক চরিত্র আদর্শ ইত্যাদির ক্ষেত্রে নবীদের উসওয়া বা আদর্শ সামনে রেখে নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে নেয়া সম্ভব। অন্যথায় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমাদের জন্য উসওয়া বা আদর্শ হিসেবে পেশ করা হত না।

ইরশাদ হয়েছে: অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে [ সূরা আল আহযাব:২১ ]

আমরা যেহেতু গার্ডিয়ানশিপ নিয়ে আলোচনায় বসেছি তাই এ ক্ষেত্রে নবীর উসওয়া-আদর্শ কী তা জ্বলজ্বলে করে বলা আবশ্যক বলে মনে করি। এ ক্ষেত্রে বলা যায় যে একজন সফল গার্ডিয়ানকে নিম্নবর্ণিত গুণসমূহ অর্জন করে সফল গার্ডিয়ানশিপ নিশ্চিত করতে হবে।

আদর্শের অনুবর্তিতা

গার্ডিয়ানকে বিবেচক হতে হবে। আবেগের মাথায় হুট্ করে একটা কিছু করে ফেললেই হবে না। সে হিসেবে তাকে যথেষ্ট পরিমাণ সহিষ্ণু হতে হবে। ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। সহিষ্ণুতা ও ধীরস্থিরতা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় গুণ, হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক সাহাবিকে বলেছেন : তোমার মধ্যে এ দুটি গুণ রয়েছে যা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়, সহিষ্ণুতা, ও ধীরস্থিরতা। [ মুসলিম: হাদিস নং ১৭]

সহিষ্ণুতা ও ধীরস্থিরতা দাবি হল, আপনি যখন আপনার ছেলেমেয়েকে কোনো অন্যায় করতে দেখবেন, তখন রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে সাথে সাথে মারধর করতে যাবেন না, এ ক্ষেত্রে আপনাকে বরং নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।

শুরুতে আপনি তাকে জিজ্ঞাসা করবেন কেন এমনটি করল, তারপর তাকে এ ব্যাপারে যা সঠিক তা বাতলে দেবেন। সে যে অন্যায় করেছে তা ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝাবেন। সাথে সাথে তাকে একটু আদরও করে দেবেন। হতে পারে সে সংশোধিত হয়ে যাবে। রাফে ইবনে আমর আল-গিফারি হতে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, তিনি বলেনঃ

বাল্যকালে আমি আনসারদের খেজুর গাছে ঢিল ছুড়তাম, অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে বলা হল, একটি বালক আমাদের খেজুর গাছে ঢিল ছুড়ছে’। এরপর আমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে যাওয়া হল।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন: হে বালক খেজুর গাছে তোমার ঢিল ছোড়ার কারণ কী? আমি বললাম: (খেজুর) খাই। তিনি বললেন : খেজুর গাছে ঢিল মেরো না। গাছের নিচে যা এমনিতেই পড়ে তা খাও। অতঃপর তিনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! আপনি এর উদর পরিতৃপ্ত করুন। [ইমাম তিরমিযি হাদিসটি বিশুদ্ধ বলেছেন]

সহিষ্ণুতা ও ধীরস্থিরতার আরেকটি দাবি হল বাচ্ছাদেরকে প্রহার না করা। আমরা অনেকেই মনে করি যে মারধর না করলে ছেলেসন্তান মানুষ করা যাবে না। এ কথা ভুল। বরং হেকমত ও দূরদর্শিতার মাধ্যমে বাচ্চাদের ভুলত্রুটি শুদ্ধ করা জরুরি।

আবু উমামা (রাযি:) হতে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন: নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি বালক নিয়ে এলেন, তাদের একজনকে আলী (রাযি:) কে দিয়ে দিলেন এবং বললেন, একে মেরো না, কেননা নামাজ আদায়কারীকে মারার ব্যাপারে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। [ আলবানি: সহিহু আদাবিল মুফরাদ]

দয়া ও কোমলতা প্রদর্শন এবং হিংস্রতা থেকে দূরে থাকা

আয়েশা (রাযি:) থেকে এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ দয়ালু, তিনি কোমলতাকে পছন্দ করেন। তিনি কোমলতার বিপরীতে দেন যা তিনি সহিংসতার বিপরীতে দেন না, কোমলতা ব্যতীত অন্য কিছুর বিপরীতে দেন না। [মুসলিম]

চার: মমত্বপূর্ণ হৃদয়

একজন গার্ডিয়ানকে হতে হবে মমত্বপূর্ণ হৃদয়ের অধিকারি। নির্দয়, কঠিন হৃদয় ব্যক্তির পক্ষে যথার্থরূপে গার্ডিয়ানশিপের দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে না। আবু সুলায়মান মালেক ইবনে হুয়াইরেস বলেন:

আমরা কতিপয় সমবয়সী যুবক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বিশ দিন অবস্থান করলাম। আমাদের প্রতি তিনি ছিলেন কোমল ও দয়াময়। তিনি মনে করলেন যে আমরা আমাদের পরিবার পরিজনের সাথে সাক্ষাতের জন্যে আকাঙ্ক্ষী হয়ে পড়েছি। তিনি আমাদেরকে আমাদের পরিবার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা তাকে এ ব্যাপারে জানালাম। অতঃপর তিনি আমাদেরকে বললেন, ‘ তোমরা তোমাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাও, এত সময় এত দিন থাক। যখন নামাজের সময় হবে, তোমাদের একজনে আজান দেবে, ও তোমাদের মধ্যে বয়সে যে বড় সে ইমামতি করবে। [ বুখারি ও মুসলিম]

 দুটি বিষয়ের মধ্যে যা অধিক সহজ তা বেছে নেওয়া যদি তা পাপপূর্ণ না হয়

সফল গার্ডিয়ানের গুণাবলির মধ্যে একটি হল, দুটি বিষয়ের মধ্যে সহজতর বিষয়টি বেছে নেওয়ার যোগ্যতা, যদি তাতে গুনাহ না থাকে। আয়েশা (রাযি:) হতে এক বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন,

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যখনই দুটি বিষয়ের মধ্যে একটি বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া হত, তখনই তিনি সহজটি বেছে নিতেন তা যদি পাপপূর্ণ না হত। আর তিনি কখনোই নিজের জন্য কোনো বিষয়ে প্রতিশোধ নিতেন না। তবে হ্যাঁ, আল্লাহর হুরমত লঙ্ঘিত হলে তিনি আল্লাহর জন্য প্রতিশোধ নিতেন। [ বুখারি ও মুসলিম]

রাগ-রোষ বর্জন করা

একজন সফল গার্ডিয়ানের অন্যতম একটি গুণ হল রাগ-রোষ থেকে দূরে থেকে ঠাণ্ডা মাথায় কার্যবিধি নির্ধারণ করা; কেননা রাগ, উন্মত্ততা, একঘেয়েমি আদব শেখানোর ক্ষেত্রে একটি নেতিবাচক গুণ। সামাজিকভাবেও তা অনাকাঙ্খিত একটি অভ্যাস। মানুষ যদি তার রাগ-রোষ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, হজম করতে পারে তবে তা নিজের জন্য ও সন্তানদের জন্য বয়ে আনবে কল্যাণ। এর উল্টো হলে ফলাফলও হবে বিপরীত।

জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিজের জন্য বিশেষ উপদেশ চাইলে তিনি তাকে রাগ না করার উপদেশ দেন। [ দ্রঃ: সিলসিলাতুল আহাদিস আস সাহিহা:৯৩৮]

শুধু তাই নয়, বরং রাগ সংবরণকে তিনি আসল বীরত্ব বলে আখ্যায়িত করেন। আবু হুরায়রা (রাযি:) হতে এক বর্ণনায় এসেছে, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বীর-বাহাদুর সে নয় যে কুস্তিতে অন্যকে পরাহত করতে পারে। বরং বীর-বাহাদুর সে যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে’। [বুখারি ও মুসলিম]

মধ্যমপন্থা অবলম্বন

কট্টরপন্থা সকল ক্ষেত্রে নিন্দনীয় একটি গুণ। এ-কারণেই আমরা দেখতে পাই যে ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ নামাজের ক্ষেত্রেও তিনি মধ্যমপন্থা অবলম্বনকে পছন্দ করেছেন। আবু মাসুদ উকবা ইবনে উমর আল-বাদরি বর্ণনা করে বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল যে আমি অমুকের কারণে ফজরের নামাজে আসি না। সে আমাদেরকে নিয়ে দীর্ঘ করে নামাজ পড়ে।

কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বক্তৃতা দানকালে এত বেশি রাগ করলেন ইতঃপূর্বে যা অন্য কোনো বক্তৃতায় করেন নি। অতঃপর তিনি বললেন: ‘হে লোকসকল! নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে এমনও রয়েছে যারা বিতাড়ক, তাই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইমামতি করবে সে যেন সংক্ষেপ করে; কেননা তার পেছনে বৃদ্ধ, শিশু ও প্রয়োজনগ্রস্থ লোক রয়েছে’। [বুখারি ও মুসলিম]

মধ্যমপন্থী বিষয় উত্তম বিষয় বলে একটি কথা আছে। কাজেই একজন গার্ডিয়ানকে তার পোষ্যের লালন-পালনের ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন অবশ্যই জরুরি।
উপরে বর্ণিত গুণগুলো পূর্ণাঙ্গরূপে কারও মধ্যে পাওয়া গেলেই কেবল গার্ডিয়ানশিপের ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের আশা করা যেতে পারে। আল্লাহ আমাদের সহায় হউন।

প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদ

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G