WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

জহির রায়হান: চলচ্চিত্রের উজ্বল নক্ষত্র জহির রায়হান: চলচ্চিত্রের উজ্বল নক্ষত্র

জহির রায়হান: চলচ্চিত্রের উজ্বল নক্ষত্র

প্রকাশঃ আগস্ট ১৯, ২০১৫ সময়ঃ ৮:৫৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:৩১ অপরাহ্ণ

দাউদ হাসান

johir_Raihanজহির রায়হান। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে এবং জীবনস্পর্শী প্রতিবাদী সাহিত্য ধারায় এক বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক এর নাম। কথাসাহিত্যের জগতে তার প্রথম পদচারণা হলেও পরবর্তী আশ্রয়স্থল হয় চলচ্চিত্র প্রতিভায়। সাংবাদিক, কথাসাহিত্যিক, রাজনৈতিক কর্মী, চিত্রপরিচালক- নানা পরিচয়ে তার কর্মক্ষেত্রের পরিধি স্পষ্ট। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণের দ্বারা এদেশে সৎ শিল্পীর ভূমিকা কী রকম হবে জীবন দিয়ে তিনি তার উদাহরণ দিয়ে গেছেন। কথা সাহিত্যিক জহির রায়হানের ৮০ তম জন্মদিন আজ । ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট তিনি ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

জহির রায়হান এর প্রকৃত নাম আবু আবদার মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ। তার ডাক নাম ছিল জাফর। ১৯৫৩ বা ৫৪ সালের দিকে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। এ সময়ে মনি সিংহের দেয়া রাজনৈতিক নাম ‘রায়হান’ গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোহাম্মদ এমদাদউল্লাহ এবং মায়ের নাম সৈয়দা সুফিয়া খাতুন। বাবা ছিলেন একজন আইন ব্যবসায়ী।

রাজনৈতিক নানা অস্থিরতা জহির রায়হান কে নাড়া দিতো । ১৯৪৫ সালে ‘ভিয়েতনাম দিবস’ এর মিছিলে জহির রায়হান অংশ নেন। ছাত্র জীবনে রাজনৈতিক কারণে একাধিকবার জেলে গিয়েছেন তিনি। প্রথমে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময়ে জেলে যান। ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরে মিছিল করতে গিয়ে তিনি গ্রেফতার হন। তিনি ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

তার সাহিত্যিক ও সাংবাদিক জীবন শুরু হয় ১৯৫০ সালে। পরবর্তীতে তিনি খাপছাড়া, যান্ত্রিক, সিনেমা ইত্যাদি পত্রিকাতেও কাজ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি সম্পাদক হিসেবে `প্রবাহ` নামের একটি পত্রিকায় যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে তার প্রথম গল্প `সূর্যগ্রহণ` প্রকাশিত হয়। তিনি উপন্যাসও লিখতেন । তার লেখা ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি একটি অন্যতম ও জনপ্রিয় উপন্যাস। এছাড়াও রয়েছে আরেক ফাল্গুন, বরফ গরফ গলা নদী , আর কতদিন, তৃষ্ণাসহ আরও অনেক।

জহির রায়হান স্কুল জীবন থেকে কবিতা লিখতেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতা- ‘ওদের জানিয়ে দাও’। কবিতাটি ১৯৪৯ সালে ‘নতুন সাহিত্য কুটির’ থেকে প্রকাশিত ‘চতুষ্কোণ’ পত্রিকায় ছাপা হয়। তার প্রথম গল্পগ্রন্থ’ ‘সূর্যগ্রহণ’ প্রকাশিত হয় ১৩৮৬ বঙ্গাব্দে।

ছাত্রজীবনে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫০ সালে তিনি `যুগের আলো` পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি খাপছাড়া, যাত্রিক, সিনেমা ইত্যাদি পত্রিকাতেও কাজ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি সম্পাদক হিসেবে প্রবাহ পত্রিকায় যোগ দেন। এছাড়া জহির রায়হান ‘সমকাল’, ‘চিত্রালী’, ‘সচিত্র সন্ধানী’, ‘সিনেমা’, ‘যুগের দাবী’ প্রভৃতি পত্রিকার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

তিনি তার সাহিত্য জীবনে অনেক পুরস্কার পান। জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাস ১৯৬৪ সালে ‘আদমজী পুরস্কার’ পায়। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা উপন্যাসে অবদানের জন্য তাকে বাংলা একাডেমী পুরস্কারে (মরণোত্তর) দেয়া হয়।

তিনি চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন ১৯৫৭ সালে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি যখন কলকাতায় চলে যান তখন কলকাতা থেকে তার নির্মিত চলচ্চিত্র `জীবন থেকে নেয়া` এর বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী হয়। এ ছাড়াও তিনি আরো অনেক চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন।

মরে গিয়েও কিছু মানুষ বেঁচে থাকে , আর সেই মাধ্যমটা হচ্ছে তার কাজ দিয়ে । বাংলা চলচ্চিত্রে খুব অল্প কিছু মেধাবী মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যারা এখনও আমাদের মাঝে মরে গিয়েও বেঁচে আছে, আর তেমনই একজন হলেন জহির রায়হান। তার চলচ্চিত্রগুলো এখনও বিশাল একটা জায়গাজুড়ে আছে বাঙালির মনে । আর তার কিছু লেখা অমর হয়ে আছে । তেমন একটি উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’ । আর তা নিয়েই পরবর্তীতে পরিচালক কোহিনূর আকতার সুচন্দা নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র ‘হাজার বছর ধরে’।

লেখক হিসাবে জহির রায়হানের চিন্তাচেতনা ছিল ভিন্ন, একটু আলাদা মাত্রার। জহির রায়হান মূলত নাগরিক লেখক, নগরকেন্দ্রিক ঘটনাবলী তার উপন্যাসের বিষয়। সাতটি উপন্যাসের মধ্যে কেবলমাত্র `হাজার বছর ধরে` ছাড়া অন্য সবের পটভূমি শহর বা নগর।

আরেক ফাল্গুন ও আর কতদিন- এই দু`টি উপন্যাসই নগরকেন্দ্রিক, উপন্যাস দু`টিতে ইতিহাস, রাজনীতি, আন্তর্জাতিকতা, যুদ্ধবিরোধিতা, সংগ্রামী জীবন এবং আগামীদিনে একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত নতুন পৃথিবী গড়ার ইচ্ছা ব্যক্ত হয়েছে। `আরেক ফাল্গুন` এদেশের ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস। জহির রায়হানের রাজনৈতিক সচেতনারই উজ্জ্বল সাক্ষ্য `আরেক ফাল্গুন।`

`শেষ বিকেলের মেয়ে`-ই মূলত জহির রায়হানের প্রথম উপন্যাস। এতে নগরপ্রধান মধ্যবিত্ত জীবনের প্রেম ও মনোবিকলন স্থান পেয়েছে। `বরফ গলা নদী`-ও একটি সার্থক উপন্যাস। এই উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র জহির রায়হান দরদ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এটিও নাগরিক মধ্যবিত্ত জীবনের হতাশা, ক্লান্তি, টানাপোড়েনের উপন্যাস।

অসাধারণ মুন্সিয়ানা দিয়ে জহির রায়হান তার ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের মধ্যে যেভাবে আবহমান বাংলার স্বকীয়তা ও ধারাবাহিকতাকে বেঁধেছেন, এক কথায় তা অসামান্য। বাংলা সাহিত্যে এমন কালজয়ী উপন্যাস খুব বেশি নয়।

শুধু চলচ্চিত্রকার নয়, লেখক হিসেবেও জহির রায়হান তখন জনপ্রিয়তার দিক থেকে তুঙ্গে। গাজী শাহাবুদ্দিন মনু তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। মনু তখন সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করতেন একটা। নাম ছিল ‘সচিত্র সন্ধানী’। এতে নিয়মিত লিখতেন জহির রায়হান। তখন বিভিন্ন পত্রিকার ঈদ সংখ্যা বের হওয়ার রেয়াজ চালু হয়েছিল। কলকাতার পত্রিকাগুলোর শারদীয় সংখ্যা দেখেই এই ধারা চালু হয়। সে বছর একুশে ফেব্রুয়ারির কিছু আগে এমনই বিভিন্ন পত্রিকার ঈদ সংখ্যা হবে। গাজী শাহাবুদ্দিন মনুও তখন সচিত্র সন্ধানীর ঈদ সংখ্যার জন্য জহির রায়হানকে দিয়ে লেখাবেন। কিন্তু জহির রায়হান নানা কাজে ব্যস্ত। তাকে পাওয়া যায় না কিছুতেই।

এমন সেলিব্রেটি লেখককে কিছুতেই ধরতে পারছিলেন না গাজী শাহাবুদ্দিন মনু। এক পর্যায়ে তিনি ‘সচিত্র সন্ধানী’র ঈদ সংখ্যায় লেখার জন্য জহির রায়হানকে একরকম অপহরণ করলেন! তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন, একটা ঘরে ঢুকিয়ে বললেন, সাত দিনের মধ্যে উপন্যাস লিখতে হবে। দরজা বন্ধ করে দিয়ে চা, সিগারেট, যা লাগে সব দিলেন। বললেন, যা চাই সব পাবে, শুধু বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না। কারো সাথে যোগাযোগ নেই। এভাবে গাজী শাহাবুদ্দিন মনু তাকে দিয়ে একটা উপন্যাস লেখালেন। জহির রায়হানের কালজয়ী উপন্যাস, বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ- ‘হাজার বছর ধরে’ এভাবেই লেখা হয়েছিল।

মহান কথা সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ৩০ জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে মিরপুর ঢাকায় তার ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে গিয়ে আর ফিরে আসেন নি। ধারণা করা হয় মিরপুরে বিহারী এলাকায় ছদ্মবেশী পাকিস্তানী সৈন্যদের গুলির আঘাতে তিনি মারা যান।

প্রতিক্ষণ/এডি/ডিএইচ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G