WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

জীবন সংগ্রামে জয়ী সালেহা জীবন সংগ্রামে জয়ী সালেহা

জীবন সংগ্রামে জয়ী সালেহা

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫ সময়ঃ ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডটকম

salehaদরিদ্র তাঁতি পিতার অভাবের সংসারে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার সৌভাগ্য হয়েছিল তার। ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হয় তার গ্রামের বিবাহিত দিনমজুর গাফফার মিয়ার সঙ্গে। সতীনের সংসারে অভাব-অনটনের মাঝেই পাঁচ বছরে তিন সন্তানের মা হন সালেহা বেগম। স্বামীর একার উপার্জনে সাত সদস্যের দুই সংসারে অভাব আর অশান্তি ছিল প্রতিদিনের সাথী।

সন্তানদের বাড়তি খরচ জোগাতে এরই মধ্যে সংসারের টানাপড়েন বেড়ে যায়। অভাবের তাড়নায় অন্যের তাঁত কারখানায় কারিগর হিসেবে কাজ শুরু করেন। নিজের ভাগ্য বদলানোর আশায় ২০০২ সালে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে একটি হস্তচালিত তাঁত ক্রয় করে বস্ত্র উৎপাদন শুরু করেন। তারপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

একটি মাত্র হস্তচালিত তাঁতকলের মালিক থেকে ৪৬টি যন্ত্রচালিত তাঁত কলের মালিক হয়েছেন। গড়ে তুলেছেন পারুল টেক্সটাইল নামে একটি তাঁত কারখানা। নারী-পুরুষ মিলে ২৬ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে তার তাঁত কারখানায়। সংসারের অভাব-অনটনের বেড়াজাল থেকে নিজেকে মুক্ত করে জীবনে উন্নতির চিন্তা মাথায় আসে তার। তখন থেকেই স্বপ্ন তার নিজে একটি তাঁত কারখানা গড়ে তুলবেন। কিন্তু সে সময় তার হাতে কোন পুঁজি ছিল না। পুঁজি না থাকলেও থেমে যাননি তিনি। তাঁতকল কেনার স্বপ্ন মাথায় নিয়ে ২০০২ সালে মহিষাটি গ্রামের একতা মহিলা উন্নয়ন সমিতির মাধ্যমে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে একটি হস্তচালিত তাঁত ক্রয় করে শুরু করেন বস্ত্র উৎপাদনের কাজ।

তাঁতবস্ত্র উৎপাদনের কাজে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে শ্রম দিতে থাকেন। তাঁতের সাদা কাপড় প্রসেসিংপূর্বক বিভিন্ন রকম বেডশিট, লালশালু, শাড়ি ইত্যাদি তৈরি হয়। ধীরে ধীরে আসতে থাকে সফলতা। মুনাফার টাকায় সালেহা বেগম প্রতিবছর বাড়াতে থাকেন তাঁতের সংখ্যা। বলছিলাম সংগ্রামী সফল নারী সালেহা বেগমের কথা।

তার উত্তরোত্তর অগ্রগতি দেখে সংস্থা তাকে ক্ষুদ্রঋণী থেকে ক্ষুদ্রউদ্যোক্তা হিসেবে নির্বাচন করে এবং ক্ষুদ্রউদ্যোক্তা হিসেবে ঋণ প্রদান করে। বর্তমানে সালেহা বেগমের কারখানায় প্রতি সপ্তাহে ১০ থেকে ১৫ হাজার গজ কাপড় উৎপাদন হয়। উৎপাদিত কাপড় বিক্রি করে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর মুনাফা হয়। সালেহা বেগমের কারখানার উৎপাদিত কাপড় যাচ্ছে রংপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সব মিলিয়ে সালেহা বেগম আজ জীবন সংগ্রামে জয়ী একজন সফল নারী।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন সূত্রে জানা যায়, নরসিংদী জেলার মাধবদী ইউনিয়নের মহিষাটি গ্রামের অধিবাসীরা ২০০১ সালে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সহযোগিতায় একতা নামে একটি গণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। গণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দক্ষতা উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ। সালেহা বেগম নামে ওই এলাকার একজন দরিদ্র গৃহবধূ প্রতিবেশীদের পরামর্শে গণকেন্দ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। গণকেন্দ্রের বিভিন্ন বই ও পত্রপত্রিকা পড়ে এবং অন্যদের অভিজ্ঞতার কথা শুনে তার দৃষ্টি খুলে যায়।

সালেহার স্বামী গাফফার জানান, কারখানার অর্জিত মুনাফা থেকে সালেহা বেগম এ যাবৎ ৩৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন, ৪৬টি যন্ত্রচালিত তাঁত নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি তাঁত কারখানা। সালেহা বেগমের এ কারখানায় ২৬ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সালেহা বেগমের সংসারে একটি সচ্ছল সংসারে যা কিছু থাকা দরকার তার সবই আছে। ছেলেমেয়েরা করছে লেখাপড়া। পাশাপাশি তার কারখানায় যারা কাজ করছে তাদের সন্তানদের লেখাপড়াতে দিচ্ছে উৎসাহ। সালেহা বেগম দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই ধরনের উদ্যোগ দেশের প্রতিটি অঞ্চলে বিস্তৃত হলে তার মতো আরও অনেকের দারিদ্র্য দূর হবে। সালেহা বেগমের স্বামী আরও জানান, বিদ্যুৎ ও সুতার দাম বাড়ায় আগের মতো লাভ হয় না। বর্তমানে তাদের কারখানায় ৪৬টি যন্ত্রচালিত তাঁতকলের মধ্যে ১৬টি চালু আছে। তবে বড় ধরনের ঋণ পেলে তাদের কারখানাটি আরও বড় করার আশা রয়েছে।

সালেহা বেগমের দক্ষতা এবং যোগ্যতা বর্তমানে পরিবার ও সমাজে স্বীকৃত। সালেহা বেগম আজ শুধু নারী নয় একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/মাসুদ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G