WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

ভ্রমনের রাজ্য জামালপুর ভ্রমনের রাজ্য জামালপুর

ভ্রমনের রাজ্য জামালপুর

প্রকাশঃ মার্চ ১৯, ২০১৬ সময়ঃ ১২:০১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:১২ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেক্স:

ভ্রমণ মানেই মজার এক পাহাড়। হোক তা একা কিংবা দল বেধে। তবে এটা সত্য যে একা ভ্রমণের একটা অন্য রকম মজা আছে। তা উপভোগ করতে হলে চাই প্রকৃতি আর মানুষ সম্পর্কে জানার আকা আকাঙ্ক্ষা।

অনেকদিন থেকেই ইচ্ছা ছিলো একটু একা একা ট্রেন জার্নি করার। ময়মনসিংহ রুটের বিচিত্র ট্রেন জার্নির কথা চিন্তা করেই জামালপুর যাওয়ার পরিকল্পনা। নির্দিষ্ট দিন সকালে সাড়ে সাতটায় তিস্তা এক্সপ্রেস ছাড়লো। দিনে জার্নি করাটা সাধারনত কিছুটা বিরক্তিকর, তবু উদ্দেশ্য যেহেতু যাত্রাপথের সৌন্দর্য উপভোগ তাই দিনেই রওয়ানা।

কাজীর শিমলা

ট্রেনের কামরায় মানুষের ভীড়ে কিছুটা কষ্টই হচ্ছিলো। তবু নতুন জায়গা ভ্রমনের আনন্দ সে কষ্টের কাছে কিছুই না। হাতের কাছে থাকা বই পড়তে পড়তে আর আশপাশের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে দুপুর ১২ টায় পৌছলাম জামালপুর।

জামালপুর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার বন্ধুপ্রতীম শাকিল ভাইর সাথে আগেই যোগাযোগ হয়েছিলো। সরাসরি চলে গেলাম অফিসার্স ডরমিটরিতে। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করলাম তার সাথেই। দুপুরের বের হলাম ক্যামেরা নিয়ে। ব্রহ্মপুত্রপাড়ে কিছুক্ষণ হেঁটে সেখান থেকে শহর ঘুরে দেখলাম। হাটতে হাটতে পৌছলাম জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দিরে। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই মন্দির বেশ কয়েকবার সংস্কার হয়ে এখন সে আগের অবস্থাতে না থাকলেও নিজ জৌলুশ ধরে রেখেছে ।

জেলা পরিষদ জামালপুর

ঘুরে ফিরে সন্ধ্যা হলে ফিরে আসলাম ডরমিটরীতে। পাশেই বয়ে চলা ব্রহ্মপুত্র। জোছনা রাতে ছাদে বসে গল্প করলাম অনেকক্ষণ। পাশের ব্রহ্মপুত্রের বুকে পড়েছে চাঁদের ছায়া। সব মিলিয়ে মায়াবী এক পরিবেশ। রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে রুমে ফিরলাম।

law-ch

পরদিন সকালে বের হলাম মিশন জামালপুর। শাকিল ভাই যাওয়ার কথা থাকলেও ব্যস্ততার কারনে আর হলনা। একাই বের হলাম। আগেই মোটামুটি খোঁজ খবর নিয়ে রেখেছিলাম ভ্রমনের স্থান সম্পর্কে। পরিকল্পনা মত রওয়ানা হলাম সীমান্তবর্তী বখশীগঞ্জ উপজেলার লাউচাপড়া অবকাশ কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে। শহরের প্রান্তে শেরপুর ব্রীজ থেকে সিএনজিতে উঠলাম বখশীগঞ্জের উদ্দেশ্যে। লাউচাপড়া জামালপুরে পড়লেও শেরপুর থেকেই বেশি কাছে। প্রায় ৪০ কি.মি রাস্তা। পৌছতে ঘন্টা দেড়েক লাগলো।

Lau-Chapra-পাহাড়ের আঙ্গিনায় রাতের নিরবতা।

সেখানে নেমে বেশ কিছুদূর হেঁটে সামনে থেকে স্থানীয় বাহন নসিমনে উঠলাম। বখশীগঞ্জ বাজার থেকে লাউচাপড়া প্রায় ১৫ কি.মি। এতোটা দূর অবশ্য ভাবিনি। তবু উদ্দেশ্য যেহেতু ঘোরাঘুরি তাই উপভোগ করছিলাম বেশ। লাউচাপড়া নেমে খোঁজ নিয়ে জানলাম আমার গন্থব্যস্থল গারো পাহাড় আরো প্রায় ৩ কি.মি। কি আর করা! ভ্যানে চড়ে রওয়ানা হলাম।

a potential tourist spot in Jamalpur

পথিমধ্যেই আবহমান গ্রামীণ বাংলার দৃশ্য যে কোন গোমরা মানুষেরও মন ভালো করে দেবে। পাহাড়ের কোল ঘেষে অবশেষে পৌছলাম লাউচাপড়া অবসর বিনোদন কেন্দ্রে। গেটের সামনেই বিশাল গাছকাটা উৎসব দেখে মনটা একটু খারাপ হল। তবু সারা বাংলাদেশে এটাই বাস্তবতা। প্রবেশপথের পাশেই কৃত্তিম লেক। তার পাশেই চমৎকার রেস্ট হাউজ। কিছুদূর এগিয়ে ওয়াচটাওয়ারে উঠলাম। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। দূরে দেখা যাচ্ছিলো ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আকাশ ছোঁয়া সব পাহাড়। পাহাড়ে রয়েছে নানা বর্ণের পাখি।

শুনেছি বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে মেঘালয় থেকে এখানে নেমে আসে বুনো হাতির দল। কাছেই রয়েছে গারোদের একটা ছোট গ্রাম। সময়ের অভাবে যাওয়া হল না সেদিকে। ভ্রমণার্থীরা লাউচাপড়া গেলে ঘুরে আসতে পারেন গারোদের গ্রামে। সরকারী সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই স্থানকে গড়ে তোলা যাবে দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে। তবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা অনেক ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কৃত্তিম করে তোলে। তাই এসব না হলেই বরং এখন বেশি ভালো লাগে।0101দদ

দুপুর হয়ে আসলো। ক্ষুধায় নারীভুড়ি জ্বলছে। যেতে হবে আরো বহু পথ তাই বের হয়ে আসলাম সেখান থেকে। ভ্যানে করে ফিরলাম লাউচাপড়া। সেখান থেকে নসিমনে আবার বখশীগঞ্জ বাজার। পরবর্তী গন্থব্য ইসলামপুরের কাঁসারীপট্টি। বাজারেই খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। নসিমনে চড়ে কিছুদূর এসে তিন রাস্তার মাথায় নামলাম। খোঁজ নিয়ে জানলাম এখান থেকেই ইসলামপুরের মোটর সাইকেল পাওয়া যায়। কিছুক্ষণ বসে চা পান করে মোটর সাইকেল ভাড়া করে রওয়ানা হলাম ইসলামপুর বাজারের উদ্দেশ্য। ঘাট পর্যন্ত ভাড়া ১২০ টাকা।

কিছুদূর গিয়ে দেখলাম সামনের ব্রীজের কাজ চলছে তাই যান চলাচল বন্ধ। তাই বলে তো মোটর সাইকেল থেমে থাকবে না। পার্শ্ববর্তী ধান খেতের মাঝখানের মাটির রাস্তা ধরে চলতে লাগলো মোটর সাইকেল। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির ভেতর দিয়ে ঘুরে পৌছলাম ইসলামগঞ্জ বাজারের এপাড়ে নদীর ঘাটে। পথে বেশ কিছু জায়গায় দেখলাম পাট সংগ্রহের কাজ চলছে।

02021

এই অঞ্চলে এখনো বেশ ভালো পরিমান পাট উৎপাদন হয়। খোলা মাঠের কিছু জায়গায় দু চারটে ঘোড়াও দেখলাম। সেখান থেকে নৌকায় নদী পার হয়ে রিক্সা নিয়ে গেলাম ইসলামপুরের বিখ্যাত কাসারীপট্টিতে। বিকেল হয়ে এসেছে তাই সবার কাজ প্রায় শেষের দিকে।

এখন আর মাত্র অল্প কয়েকটি পরিবার এই এলাকার বিখ্যাত কাসার জিনিসপত্র তৈরির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। কথা বলে জানতে পারলাম ঢাকা থেকে পাঠানো পুরনো কাসার ভাঙ্গা টুকরো থেকেই তৈরি করা হয় চমৎকার সব তৈজসপত্র। কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও কাঁসার জিনিসপত্র এখনো বেশ আভিজাত্য বহন করে চলছে। কাঁসারীপট্টি থেকে রিক্সা নিয়ে গেলাম ইসলামপুর বাজার।

ইসলামপুর বাজার থেকে হঠাত করেই ইচ্ছা হল মেলান্দহের বিখ্যাত ধ্র্যুব জ্যোতি ঘোষ মুকুল দা’র সাথে দেখা করার। ফোনে যোগাযোগ করে আসার আগ্রহের কথা জানাতেই তিনি বললেন চলে আসতে। সিএনজিতে রওয়ানা হলাম মেলান্দহ।

তার আগে ধ্রুব জ্যোতি ঘোষের একটু পরিচয় দিয়ে নেয়া প্রয়োজন। ধ্রুব জ্যোতি ঘোষের কথা প্রথম শুনেছিলাম জামালপুরের ছড়াকার মাসুম হাবিবের কাছে। পরবর্তীতে আলোকচিত্রী হামিদুল হকের মৃত্যুর পরে জাদুঘরে আয়োজিত এক স্বরণানুষ্ঠানে তার সাথে আমার প্রথম দেখা হয়। সেদিনই নিজ থেকে আমন্ত্রন নিয়েছিলাম তার বাড়িতে যাওয়ার। একাধারে চিকিৎসক, কবি, মাউন্টেইনার, ডিজাইনার, ভাস্কর নানা পরিচয়ের অধিকারী এই সত্তোরোর্ধ মানুষটি। মজার ব্যাপার হলো শারীরিক ফিটনেস দেখে কেউ ধারনাই করতে পারবে না তার বয়স সম্পর্কে। মেলান্দহে তার বাড়িটি সংস্কৃতি চর্চার এক অন্যতমস্থল।

বাড়ির আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে তার হাতের শিল্পের ছোয়া। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি থেকে শুরু করে নানা ম্যুরাল, ও চমৎকার স্থাপত্যশিল্প রয়েছে সেখানে। এর আগে এখান থেকে এসে ঘুরে ঘুরে গেছেন বাংলাদেশ ও কলকাতার সাহিত্যাঙ্গনের প্রখ্যাত নানা ব্যক্তিত্ব। এই বয়সেও স্বপ্ন দেখেন পৃথিবীর সবচেয়ে প্রবীন ব্যক্তি হিসেবে এভারেস্ট জয় করার।

ভ্রম্মপুত্র নদী

মেলান্দহে পৌছে মুকুল ডাক্তারের বাড়ির কথা বলতেই রিক্সাওয়ালা নিয়ে আসলো তার বাড়িতে। সদর দরজায় অভ্যর্থনা জানালেন তিনি। ঘুরিয়ে দেখালেন নিজের নানা স্থাপত্য ও কারুকাজ। চা নাস্তা খাওয়ার ফাঁকে অনেক কথা হল তার সাথে। নিজের রিডিং রুমে নিয়ে গিয়ে দেখালেন বিভিন্ন সময়ের অনেক ছবি। মাস তিনেক আগেই এভারেস্টের অন্নপূর্ণা-১ বেস ক্যাম্প ঘুরে এসেছেন। দেখালেন সেসব ছবি। এই বয়সী একজন মানুষের এতোটা উদ্যোম সবার জন্যই আসলে বিশাল অনুপ্রেরণা হতে পারে।

সন্ধ্যা হয়ে আসছে। ফিরতে হবে অনেকদূর তাই বিদায় নিলাম দাদার কাছ থেকে। মেলান্দহ বাজার থেকে সিএনজিতে উঠলাম। ফিরে আসলাম গন্থব্যস্থল জামালপুর শহরে। এবারের মত শেষ হল মিশন জামালপুর। মাথায় ঘুরছে পরের দিনের গন্থব্য শেরপুর।

ফরিদ ফারাবী, লেখক/পর্যটক

প্রতিক্ষণ/এডি/কেএইচ

===

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G