WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

‘মা’------হাসান মিসবাহ ‘মা’------হাসান মিসবাহ

‘মা’——হাসান মিসবাহ

প্রথম প্রকাশঃ মে ৮, ২০১৫ সময়ঃ ৪:১৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:১৬ অপরাহ্ণ

SaifHasnat_1399739279_1-momআপনি যাওয়ার পর থেকে একটওু ঘুমায়নি। খায়নি পর্যন্ত,একজন নার্স বলল।

দেখো মা, আমি তো এসেছি। এই প্রমিজ করলাম, তোমাকে রেখে আর কোথাও যাবনা।

কোনো কাজ হয় না। শশী তার মায়ের গলা ছাড়ে না। চুপচাপ নির্বিকার। কোনো কথাও বলে না।

তোমার জন্য নতুন জামা আনতে গিয়েছিলাম। তাই তো কাল আসতে পারি নি। দেখো তো, কোন জামাটি তোমার বেশি ভালো লাগে?
উত্তর আসে না।

আইসক্রীম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।আহ, কী মজার আইসক্রীমটা। তুমি না খেলে নয়নকে দিয়ে দিবো কিন্তু!

আরো শক্ত করে গলা জাপটে ধরে শশী। পাশ থেকে একজন নার্স ওকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে  ব্যর্থ হয়।
শশী, তোমার নানী ফোন করেছে। নাও নাও কথা বলো। নাও মা।

ফোন হাতে নেয় না শশী।কানে ধরা হলেও কথা বলে না। ও পাশ থেকে শশীর নানী কথা বলেই যাচ্ছেন। কথা বলা তো দুরের কথা, সে একটু নড়াচড়াও করে না।

এমনিতে ভীষণ চঞ্চল শশী। অনেক কথা বলে। চারপাশটা মাতিয়ে রাখে সারাক্ষণ। ওর কী হয়েছে কেউ বুঝতে পারে না। অনেক চেষ্টা করেও কথা বলাতে পারলো না কেউ।

কেটে গেল বেশ কিছু সময়। শশীকে আলতো করে জাপটে ধরে মিতু। শশীও আরো জোরে চেপে ধরে মিতুর গলা। একটু পর মিতু শশীর কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলে, শশী,  লাগছে তো মা। উঃ ব্যথা পাচ্ছি। গলাটা ছেড়ে দাও মা।

গলা ছেড়ে দেয় শশী। মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে কেমন করে। মিতুর কপালে একটা চুমু দেয় পরম আদরে। মিতুও দেয়। মিতুর বুকে মাথা রেখে আবার চুপ হয়ে যায় শশী।

মিতু ও নার্সরা অনেক কথা জিজ্ঞেস করে শশীকে। খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে সে।
দুপুরের পরে কয়েকজন সাংবাদিক আসে। ছবি তোলে মা-মেয়ের। ক্যামেরার ফ্য¬াশ আর খট খট শব্দে ঘুম ভাঙ্গে শশীর। এদিক

সেদিক চেয়ে দেখে বলে, দাঁড়াও দাঁড়াও আমার নতুন জামাটি পরি, তারপর ছবি তোলো।

নতুন জামা পরে অনেক ছবি তোলে শশী। একজন সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করে, তোমার মা কোথায়?
শশী মিতুর গলা জড়িয়ে ধরে বলে, এই তো আমার মা !

তোমার বাবা? তুমি এখানে এলে কিভাবে? আরেকজন বলে।
বাবা ! হঠাৎ উদাস হয়ে যায় শশীর মুখ। স্মৃতি হাতড়ে কিছু একটা খোঁজার চেষ্টা করে সে।
মামনি,মামার কাছে যাও তোএকটু। শশীকে স্মরণের কাছে দেয় মিতু। সে বুঝতে পারে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর নেই শশীর কাছে। ma

আর সে প্রশ্ন যে শশীকে অনেক আঘাত করেছে তা সে বুঝতে পারে।
শশীকে নিয়ে হাসপাতালের বেলকনিতে দাঁড়ায় স্মরণ। মিতু সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেয়।

মা ছাড়া আর কারো কথা বিশ্বাস করে না শশী। মায়ের প্রতিটি কথা শোনে সে। মাকেও শুনতে হয় তার সবকথা। না হলে ভীষণ মন খারাপ করে। সবটুকু সময়ই মায়ের কাছে থাকে। এর বাইরের জগত বলতে মামা স্মরণ। এই দুই নিয়েই শশীর বর্তমান পৃথিবী।
সন্ধ্যা প্রায়। দিন আর রাতের টানাটানিতে ক্লান্ত সুর্য। হাসপাতালের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে সুর্যের বিদায় দেখছিল মিতু। সময় আর মানুষের জীবনের নিরন্তর রং বদল ওর মনকে বিষণœ করে তোলে। মনের ক্যানভাসে ভাসে নতুন শঙ্কার মেঘ। সে মেঘের বিস্তার আর বেশি দুর হয় না। ‘মা’ ডাকে আপাতত কেটে যায় সে মেঘ।

শশীর কাছে আসে মিতু। বেডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক নারীকে দেখিয়ে দিয়েশশী বলে, দেখো মা, সে বলছে সে নাকি আমার ছোট মা। সে মিথ্যে বলছে, তাই না মা !

পাশ থেকে আরেকজন বলে,দেখো মামনি দেখো,  আমি তোমার রায়হান আংকেল।
চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ। মানুষগুলোর কথা নিয়ে ভাবার কোনো চেষ্টাই নেই শশীর মধ্যে। সে দেখে, মানুষগুলো কাঁদছে। মায়ের দিকে তাকায় শশী। কথা বলে না। মায়ের বুকে মাথা লুকোয় চুপচাপ।

তারা মিথ্যে বলে নি মা। মায়ের কথায় কান দেয় না শশী। তবে একবার শুধু তাকায় মায়ের মুখের দিকে।

আর আট দিন পরেই মিতার সাথে রনির বিয়ে। এরিমধ্যে গেল রাতের একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘুম হারাম করে দিয়েছেরনির। মিতার একটি মেয়ে সন্তান আছে। অসুস্থ্য। সে সন্তানকে নিয়ে সে এখন হাসপাতালে। তার মেয়ের সাথেও কথা বলেছে রনি। অথচ মিতা এ সবের কিছুই বলেনি তাকে। হবু স্ত্রী এক সন্তানের মা, এটা সে কিছুতেই মানতে পারছে না।

সে দিন রাতের ঐ ঘটনার পর ফোন বন্ধ করে রাখে রনি। অন্যরকম অস্থিরতায় কেটে গেছে তিন দিন। অফিসেও যায়নি। মিতার সাথে তার আগে থেকে জানাশোনা থাকলেও এ অবস্থায় তাকে সে বিয়ে করতে পারবে না।

অফিসের কাজে ঢাকা যায় রনি। এ কয়দিনে মিতা তাকে অনেক বার ফোন দিলেও রিসিভ করেনি সে।
ঢাকা গিয়ে মিতাকে ফোন দেয় রনি। ফোন বন্ধ।মিতাকে তার অপারগতার কথা জানাবে সে। তার পক্ষে এ বিয়ে করা সম্ভব নয়।
পরের দিন হাসপাতালে যায় রনি। কিন্তু ১২ নম্বরবেডে অন্য রোগী। নার্সরা জানায়, শশীকে তার আত্মীয়রা নিয়ে গেছে।
মিতার ব্যাপারে জানতে চাইলেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি নার্সরা।

মিতার আবাসিক হলে যায় রনি। ওয়েটিং রুমে মিতার নাটকের দলের এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়। নাম কমল। নানা কথার এক ফাকে তার কাছে শশীর বিষয়ে জিজ্ঞেস করে সে। কমল জানায়, সাভারের ভবন ধ্বসের দুই দিন পর তাদের নাটকের দল শশীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। তার মা মারা গেলেও শশীকে তার মায়ের কোল থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

তার বাবা এখনো নিখোঁজ।উদ্ধারের ৬ ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে শশীর। তখন সে হাসপাতালে মিতার কোলে ছিল। এরপর মিতাকে মা বলে ডাকে।

মিতা আসে। কথা বলে নাকেউ । চুপচাপ কমলের পাশে বসে।কেটে যায় বেশ কিছু সময়।
মিতা বলে, মেয়েকে আনতে যাচ্ছি। নাটোর। আমাকে ছাড়া গেল ২দিন কিছুই খায়নি মেয়েটি।
বের হয়ে যায় মিতা। নির্বাক চেয়ে থাকে রনি। সাহস হয় না কিছু বলার।

 হাসান মিসবাহ                                                                      
সাংবাদিক                                                                                                                                         

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G