WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

সিঙ্গাপুর টু মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুর টু মালয়েশিয়া

সিঙ্গাপুর টু মালয়েশিয়া

প্রকাশঃ জুন ২১, ২০১৬ সময়ঃ ৩:৩৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৩৫ অপরাহ্ণ

ইমাম হাসান সৌরভঃ

photo 3

আবার বিমানে উঠব- মনে হতেই শুরু হলো বাড়তি উত্তেজনা। ছোটবেলা থেকেই বিমানের প্রতি আমার ব্যাপক আকর্ষন। গত সাত আট বছরে অনেকবার, অনেকবার উঠেছি, এরপরও আকর্ষন এখনও কমেনি। নীচ দিয়ে বিমান গেলে এখনও আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি বিমানটি চোখের আড়াল না হওয়া পর্যন্ত।

বিমান যাত্রায় এবারের গন্তব্য সিঙ্গাপুর এবং পরে মালয়শিয়া। সিঙ্গাপুর এর আগে আরো তিনবার গিয়েছি। এবার নিয়ে চারবার। উদ্দেশ্যে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। নির্দিষ্ট দিন এয়ারপোর্টে হাজির। বোর্ডিং কার্ড নিয়ে ইমিগ্রেশন পার হতে গেলাম। বরাবরের মত এবারো কিছু উদ্ভট প্রশ্ন আর অযথা বিড়ম্বনা। ইমিগ্রেশনের এইসব কর্মকর্তাদের আধুনিক প্রশিক্ষন দিয়ে পাঠানোর দাবী অনেক পুরনো। কিন্তু কার্যকর কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করিনি এবারো।

বিমানে ওঠার পর প্রথম কয়েক ঘন্টা ভালোই কাটে। খানা-পিনার পাশপাশি পাশের লোকজনের সাথে কথায় কথায় দুই তিন ঘন্টা পার করে দেই অনায়াসে। শেষ দিকে অবশ্য কিছু বিরক্ত লাগে। ল্যান্ড করার আগের দশ পনের মিনিট খুবই অসহনীয় মনে হয়।

সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে গেলেই মন ভাল হয়ে যায়। পুরো এয়াপোর্টটি বেশ পরিপাটি। আর কর্মকর্তারা কাজ করেন দ্রুত। এ জন্যই গত কয়েক বছর বিশ্বের অনেক দেশের এয়ারপোর্টকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থান দখল করে আসছে চাঙ্গি এয়ারপোর্ট। ইমিগ্রেশন পার হয়ে প্রায় ভোর বেলা এয়ার পোর্টের বাইরে আসলাম দলবদলসহ। এ যেন আধুনিকতার মিশেলে একটি সাজানো বাগান। মুহুর্তে ক্লান্তি দূর হয়ে গেল।

আমাদের নিতে গাড়ী পাঠিয়েছেন কামাল আঙ্কেল। কামাল আঙ্কেল দুই যুগ ধরে সিঙ্গাপুরে আছেন। কনস্ট্রাকশন ব্যবসা ছাড়াও নানা রকমের ব্যাবসাপাতি নিয়ে বেশ ভাল আছেন তিনি। খুব বড় মনের মানুষ। তবে, এই ব্যবস্থাপনার জন্য কৃতজ্ঞ কামাল আঙ্কেলের ছেলে ছোট ভাই রাজিবের কাছে। গভীর রাতে তার দামী গাড়ীতে চড়ে রওয়না দিলাম সেরাঙ্গুন প্লাজা এলাকায়। ভোর রাতে একটি ভারতীয় রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। এত রাতেও রেস্টুরেন্টে অনেক মানুষ, মনে হচ্ছে সবে রাত শুরু হল। সবাই বন্ধু আর পরিবার নিয়ে খাবার খাচ্ছেন।

10706461_853368551342153_1769411881_n

রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতেই একটি খোলা ট্রাকের পেছনে বেশ কয়েকজন বাঙালীকে বসে থাকতে দেখলাম। কামাল আঙ্কেলের গাড়ীর ড্রাইভার জহির জানালেন, এরা বাংলাদেশী শ্রমিক। ভোর বেলায় এদের এভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকের পেছনে করে বন্দরে নেয়া হয় কাজের জন্য। আবার গভীর রাতে ট্রাকের পেছনে করেই গাদাগাদি করে যার যার বাসায় পৌছে দেয়া হয়। এরা অল্প আয়ের শ্রমিক। সিঙ্গাপুরের মত খরুচে দেশে অল্প আয় দিয়ে কষ্টে দিন পার করে। ছোট ছোট রুমে এদের অধিকাংশই মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে জানালেন জহির ভাই। তবে, অনেক বাংলাদেশী ব্যবসা বানিজ্য করে বেশ উন্নত জীবন যাপন করছে বলেও জানালেন তিনি।

ভোরে হোটেলে চেক ইন করেই ঘুম। বিকালের দিকে বের হলাম মেরিনা বে’র দিকে। সিঙ্গাপুর আয়তনে প্রায় আমাদের ঢাকার সমান। এরপরও কত উন্নত। দেশের বাইরে একটু আফসোস লাগে, আমাদের দেশটা ওদের মত হতো। কত জাতি একসাথে বাস করে। কিন্তু মারামারি হানাহানির কোন খবর নাই। সবাই শুধু কাজের পিছে ছুটছে। আইনের প্রতি সবাই বেশ শ্রদ্ধাশীল। সিঙ্গাপুরে মাদকের ব্যাপারে বেশ কঠোর আইন বলবত। কথা প্রসঙ্গে কামাল আঙ্কেল জানালেন, বাংলাদেশ থেকে তার এক বন্ধু তার জন্য এগার প্যাকেট সিগারেট নিয়েছিল। ঐ লোকটি জানতেন না সিঙ্গাপুরে এক প্যাকেটের বেশী সিগারেট নেয়া নিষেধ, তাও প্যাকেট খোলা থাকতে হবে। আইন না জানার কারনে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠাল। খবর পেয়ে কামাল আঙ্কেল মোটা অংকের টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছিলেন। শুধু আইন মেনে চলায় আর পরিশ্রমের কারনেই সিংগাপুর আজ বিশ্বে মাথা উচু করে নিজেদের বর্হিবিশ্বে নিজেদের সম্মান জানান দিচ্ছে।

মেরিনা বে’র সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে গেলাম। শুধু মেরিনা বে’ই নয়, সিঙ্গাপুরে সৌন্দর্যের আরো বেশ কিছু জায়গা আছে। সাইট সিয়িংয়ের ছাদ খোলা বাসে চড়ে অল্প সময়ে এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘোরা যায়। খরচটা একটু বেশী এই যা।

দুই দিন সিঙ্গাপুর থেকে মালয়শিয়া গেলাম উডল্যান্ড বর্ডার দিয়ে। এবারও কামাল আঙ্কেলের লেক্সাস গাড়ির আতিথেয়তা পেলাম। আগেও দুইবার মালয়শিয়া গিয়েছি উডল্যান্ড বর্ডার দিয়ে। মালয়শিয়ান ইমিগ্রেশনে অবশ্য সিঙ্গাপুরের মত এত বেশী কড়াকড়ি নেই। ঝামেলা ছাড়াই পাড়ি জমালাম মালয়শিয়ায়। সীমান্তবর্তী এ শহরটির নাম জহর বাহরু। মালয়শিয়ার উন্নত শহরগুলোর মধ্যে একটি। চারিদিকে সারি সারি উচু দালান। দেখলেই বোঝা যায় দ্রুত উন্নত করছে দেশটি। মালয়শিয়া আর সিঙ্গাপুরে সংস্কৃতি অনেকটা এক। সিঙ্গাপুরে ইংরেজীর প্রচলনটা বেশী, তবে মালয়শিয়ায় ইংরেজী তেমন চলেনা। এছাড়া মালয় ভাষা, চায়নীজ মান্দারিন আর তামিল-এদিকটায় দুই দেশ প্রায় সমানে সমান।

জহর বাহরু থেকে গেলাম সেলাসা জায়া এলাকায়। এখানে আমাদের কয়েকজন বাংলাদেশী বন্ধু আছে। তাদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ। আশেপাশে ঘোরাফেরা আর কেনাকাটায় দুই দিন পার করে দিলাম। এই এলাকাটায় অনেক বাংলাদেশী আছে। তবে, কুয়ালালামপুরের মত এত পলেটিক্স নেই। নেই তেমন ব্যাপক লোক সমাগম। জীবন যাত্রার মানও খারাপ নয়, তাছাড়া সিঙ্গাপুর কিংবা কুয়ালালামপুর থেকে খরচ অনেক কম। সব মিলিয়ে রাজধানী শহর থেকে ভালই আছেন এখানকার লোকজন। পরদিন গেলাম কুয়ালালামপুর। কুয়ালামপুর অনুষ্ঠান শেষ করে আবার সেলাসা জায়া। সময় কম থাকায় রাজধানীতে ঘুরে দেখার সময় পাইনি।

10583274_853368588008816_758959225_n

তিন দিন মালয়শিয়া থেকে আবার সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মালয়শিয়ান ইমিগ্রেশন পার হলাম কোন ঝামেলা ছাড়াই। কিন্তু বিড়ম্বনা শুরু হলো সিঙ্গাপুর ইমিগ্রেশনে। বন্ধুরা আমাকে আগেই সতর্ক করেছিলেন, চাঙ্গি এয়ারপোর্টের তুলনায় অনেক বেশী কঠোর উডল্যান্ড ইমিগ্রেশন। হাড়ে হাড়ে টের পেলাম।

প্রশ্নবানে জর্জরিত করলো। কত রকম প্রশ্ন ! স্মার্টলি উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলাম। অবশেষ সিঙ্গাপুর ঢোকার ছাড়পত্র পেলাম। তবে, এবার আরেক বিড়ম্বনা। মেশিনে স্ক্যান করার পরও মালপত্র বোঝাই দুইটি লাগেজ খুলতে বললো পুলিশ। বলে কি ! এইগুলো খুলে আবার ঢুকাতে দেড় দুই ঘন্টার হ্যাপা। নিজেদের পরিচয় দিয়ে খুব বিনয়ের সাথে বুঝিয়ে বললাম। এরপরর গাইগুই করে আবার স্ক্যান করতে বললো। তুব ভাল। আবার স্ক্যানিংয়ে মেশিনে দিলাম। এবার ছাড় পেলাম।
এবার সিঙ্গাপুরে থাকব একদিন। রাতে ব্যাপক আড্ডা হলো পুরনো আর কিছু বন্ধুর সাথে। তপন ভাইয়ের সাথে ঢাকায় একটি টেলিভিশন স্টেশনে কাজ করেছি অনেক দিন। এখন সিঙ্গাপুরে একটি আইটি ফার্মে কাজ করছেন। ভাবিকেও নিয়ে গেছেন কয়েকমাস আগে। ভাবী কাজ করছেন মোস্তফা সেন্টারে। ভাবীসহ তপন ভাই, আরেক আইটি এক্সপার্ট আসাদ ভাই আর তাদের এক বন্ধু ও ভাবীসহ গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা, গল্প, গান বাজনা আর একটি ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্টে খানা পিনা। সবাই যার যার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন। সব মিলিয়ে স্মরনীয় একটি রাত কাটালাম।

পরদিন রাতে ঢাকার ফ্লাইট। দিনে কামাল আঙ্কেলের সাথে তার বাসার নীচে ম্যাগডোনাল্ডসে লাঞ্চ সারলাম। হাতে এখনো অনেক সময় আছে। এ সময় তাঁর ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলো ঘুরে ঘুরে দেখলাম। সামান্য কিছু কেনাটাকাও হল। বিকালের মধ্যে ব্যাগ গুছিয়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

হাতে সময় থাকা চাঙ্গি এয়ারপোর্টের এপার ওপার ঘুরে দেখলাম। তাদের কর্মকান্ড দেখে আমি না যে কেউ মুগ্ধ হলাম। ভাবলাম, কেন তারা বিশ্বের প্রথম সারির এয়ারপোর্টের মর্যাদা পায়। বিমানে চার ঘন্টার আকাশ ভ্রমন শেষে এক সপ্তাহ পর ঢাকায় পা রাখলাম। আবার এখনকার ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনা। এরপরও দেশে ফেরা সব সময়ই মধুর। অন্যের দেশ যত উন্নতই হোকনা কেন, এটা আমার দেশ, আমার প্রিয় জন্মভূমি।

 

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G