নবান্নের আমেজে জমজমাট মাছের মেলা 

প্রকাশঃ নভেম্বর ১৯, ২০২৫ সময়ঃ ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

নবান্ন উৎসব ঘিরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার উথলি গ্রামে বসেছে কোটি টাকার জমজমাট মাছের মেলা। দুই শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলায় মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ভোর থেকেই উপচে পড়া মানুষের ঢল। শ্বশুর–জামাইয়ের মাছ কেনা–বেচা, বড় মাছ কেনার প্রতিযোগিতা, নতুন চালের পোলাও–পায়েশ, পিঠাপুলি—সব মিলিয়ে উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

স্থানীয় প্রবীণদের মতে, করতোয়া নদীর পাড়ে এ মেলার ইতিহাস দুই শতাধিক বছরের। শুধু উথলি নয়, আশপাশের অন্তত ৪০টি গ্রামের মানুষের মাঝে এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে বিশেষ উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। একই দিনে নন্দীগ্রাম ও কাহালুতেও অনুষ্ঠিত হয় অনুরূপ মাছের মেলা।

মেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো শ্বশুর ও জামাইয়ের বড় মাছ কেনার প্রতিযোগিতা। কে কত বড় মাছ কিনলো—এ নিয়ে গ্রামের মানুষের মাঝে চলে আলোচনা আর প্রশংসার ঢেউ। অনেকে মনে করেন, বড় মাছ কেনা ‘সম্মানের ব্যাপার’।

জামাই মো. জলিল উদ্দিন বলেন, “বড় মাছ কিনলে এলাকায় চর্চা হয়। এটাও আনন্দের অংশ।”

মেলায় ৫ থেকে ২৫ কেজি ওজনের রুই, কাতলা, বোয়াল, সিলভারকাপ, গ্লাসকার্প, মৃগেল, চিতলসহ নানা প্রজাতির মাছ ওঠে। প্রতি কেজির দাম ছিল ৩০০ থেকে ১,৫০০ টাকা পর্যন্ত। ২৫ কেজির বোয়াল বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১,৪০০ টাকা, ১৮ কেজির সিলভারকাপ ১,২০০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতাদের দাবি, এবার মেলায় বিক্রি হয়েছে এক কোটি টাকারও বেশি মাছ।

বিক্রেতা আল আমিন বলেন, “৩ শতাধিক বিক্রেতা মাছ তুলেছে। আমি দুপুর পর্যন্ত ১৯ মন মাছ বিক্রি করেছি।”

মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ জানান, “সকাল থেকে দিনভর চলে মেলা। মাছের সঙ্গে নানা খাবার আর পণ্যও বিক্রি হয়।”

মেলায় শুধু মাছই নয়—নতুন আলু, পানিফল, সবজি, মিষ্টি, দই, চিড়া, মুড়ি, কদমা, বাতাসা, খেলনা, নারীদের কসমেটিকস—সবই পাওয়া যায়। শিশুদের আনন্দ বাড়াতে রয়েছে নাগরদোলা।

উৎসবের দিনে উথলির প্রতিটি ঘরেই চলে রান্নাবান্নার ব্যস্ততা। লোকজ ঐতিহ্যে ভরপুর এই মেলা হাসি–উল্লাস, কোলাহল ও কেনাবেচায় পুরো এলাকাকে পরিণত করে এক উৎসবমুখর জনসমাগমে।

মেলা আয়োজক কমিটির দাবি—এটি শিবগঞ্জের সবচেয়ে বড় মেলা, আর এ বছরের লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি টাকা।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G