WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে শামীমের উদ্ভাবন! ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে শামীমের উদ্ভাবন!

ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে শামীমের উদ্ভাবন!

প্রকাশঃ এপ্রিল ১৫, ২০১৫ সময়ঃ ৮:১৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

Zahirul_Sidiquiসুনামগঞ্জের লজিং মাস্টার শামীম! হাওড়াঞ্চলের ছোট্ট এক গ্রামে দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম তার। থাকা-খাওয়ার পর পড়ালেখাটা তখন বিলাসিতা সেখানে। তবে নাছোড়বান্দা শামীম। প্রাথমিক তো শেষ করলেন, লজিং থেকে পড়ালেখা চালালেন মাধ্যমিকেও। লজিং সুবিধা যে বছর নেই, তো পড়া সে বছর বন্ধ! যারা সীমাবদ্ধতার দোহাই দিয়ে পার পেতে চান, আজ তাদের এই শামীমের গল্প শোনাব।

জয়শ্রী প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনার শুরু। এরপর লজিং থেকে থেকে সিলেট শহরতলির মোগলা বাজারের রেবতি রমন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৯৫ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে পাস করেন এইচএসসি । এরপর ভর্তি হন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে।

সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাস। অনেক গুণী শিক্ষকের ভিড় আর অনেকের সাথে পরিচয়, যা বাড়িয়ে দেয় তার অজানাকে জানার আগ্রহকে। স্নাতকের পর স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ভৌত রসায়নে। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশে পাখা মেলেছে তার ইচ্ছেগুলো। তিনি ছিলেন মুক্ত মনা সাংস্কৃতিক কর্মী। শিল্প-সাহিত্যের সমঝদার। এখানে মানবতার প্রথম পাঠ তাকে গবেষণায় করে তুলেছে আরও নিবেদিত।আর গবেষণাকেই সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে পাড়ি জমান দক্ষিণ কোরিয়ার পুসান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্লেষণী রসায়নে পিএইচডি করতে। তার পিএইচডি গবেষণাপত্র পৃথিবীর নামকরা সব জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ উনিভার্সিটিতেও বেশ কিছুকাল গবেষণা করেন তিনি।

মূলত প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার শনাক্তকরণের ডিভাইস ডেভেলপমেন্টের উপর কাজ করেন তিনি। কিভাবে ক্যান্সারের মতো অতি ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসাকে স্বল্প খরচে করা সম্ভব তার উপরেই এই বিজ্ঞানীর কাজ। তিনি বলছিলেন, ২০১৪ সালে চালানো এক জরিপে দেখা যায়, আমেরিকাতে প্রতি বছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ মারা যায় ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে। এটি এমন একটি ঘাতক ব্যাধি যেটি অজ্ঞাতসারে শরীরের ভিতর বৃদ্ধি পায় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধরা পড়ে শেষ পর্যায়ে এসে, যখন চিকিৎসার মাধ্যমে এটি পুরোপুরি নিরাময় করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা সম্ভব হলে শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ক্যান্সার নিরাময় করা সম্ভব।

বাংলাদেশের মতো নিম্ন আয়ের দেশের মানুষদের কাছে সহজলভ্য হবে এমন একটি যন্ত্রের মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার শনাক্তকরণের স্বপ্ন নিয়ে তিনি ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ান রিসার্চ কাউন্সিল থেকে ৩ লাখ ৭২ হাজার ডলারের অনুদান পান। সেই অর্থায়নে তার নেতৃত্বে একদল গবেষক এমন একটি ডিভাইস বানান, যার মাধ্যমে মানব রক্তের অভ্যন্তরে অবস্থিত অতি বিরল এক ধরনের কোষ (সার্কুলেটিং টিউমার সেল বা সিটিসি) সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা যায়। আর এই কোষ প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সার রোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য বহন করে। এই ডিভাইসের কার্যকারিতার মূলে আছে ন্যানোশেয়ারিং নামের এক ধরনের পদ্ধতি।

তিনি গবেষক হিসেবে বড় স্বীকৃতি পান ২০০৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার পুসান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ব্রেইন কোরিয়া ২১’ নামের শ্রেষ্ঠ গবেষণা পদকটি পাওয়ার মাধ্যমে। সে বছর কোরিয়ার বিভিন্ন বিজ্ঞান সাময়িকীতে তার যেসব গবেষণা নিবন্ধ ছাপা হয়, তার ওপর ভিত্তি করেই দেওয়া হয় ওই পদক। ২০০৭ সালে পিএইচডিতে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য হন পুসান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ছাত্র। গবেষণায় নিবেদিত থাকার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১১ ও ২০১২ পর পর দুইবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়ার সংসদ ভবনে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানান অনুদানপ্রাপ্ত কৃতী বিজ্ঞানীদের, সেখানে তিনিও ছিলেন।

তার উদ্ভাবিত ডিভাইসকে সাধারণ মানুষের ব্যবহার উপযোগী করার প্রয়াস হিসেবে গত ১৭ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল থেকে ৪ লাখ ১১ হাজার ডলার অনুদান পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি, এই অনুদানের মাধ্যমে স্বল্প মূল্যের একটি যন্ত্র তৈরি করতে পারব, যেটি ক্যান্সার শনাক্তকরণের গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড যন্ত্র হিসেবে পৃথিবীর সর্বত্র ব্যবহার করা সম্ভব হবে।’

শামীম বলেন, এই যন্ত্রটি যেমন বিভিন্ন পর্যায়ের ক্যান্সার শনাক্তকরণে ব্যবহার করা যাবে, তেমনি এর মাধ্যমে চিকিৎসকেরা ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার বিভিন্ন পর্যায়ে শরীরে ক্যান্সারের বৃদ্ধি অথবা হ্রাস পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। যার ফলে রোগীর চিকিৎসা সঠিক পথে এগোচ্ছে কি না সেই ব্যাপারে চিকিৎসকরা সঠিক ধারণা পাবেন।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর বায়োইঞ্জিনিয়ারিং এবং ন্যানোটেকনলজিতে একজন আসোসিয়েট গ্রুপ লিডার এই বাঙালী ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তের এক ডিভাইস আবিষ্কার করেছেন। নেচার পাব্লিশিং গ্রুপের সায়েন্টিফিক রিপোর্ট, আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির জার্নালসহ কয়েকটি বিখ্যাত জার্নালে তা প্রকাশিত হয়েছে এবং ইতোমধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের প্যাটেন্ট লাভ করেছেন শামীম।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা এই লজিং শামীমের পুরো নাম মুহাম্মদ জহিরুল আলম সিদ্দিকী। অস্ট্রেলিয়ায় স্ত্রী সিরাত সিদ্দিকী, ছেলে ইওয়ান ও মেয়ে রিদাকে নিয়ে ড. সিদ্দিকীর সুখের সংসার। সদিচ্ছা থাকলে আর তার সাথে পরিশ্রম যোগ হলে সব সম্ভব বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

বাংলাদেশের তিন জন আবু সিনা শুভ, শুভাশীষ টিটু, মোস্তাক আহমেদসহ ভারতীয়, চায়নীজ, সিঙ্গাপুরিয়ান এবং অস্ট্রেলিয়ান ৮ জন ছাত্র পিএইচডি করছেন তার তত্ত্বাবধানে। বাংলাদেশকে নিয়ে তিনি অনেক স্বপ্ন দেখেন। মন থেকে অনুভব করেন কিছু করার তাগিদ। সুযোগ পেলে বাংলাদেশে গড়তে চান একটা স্বপ্নের ল্যাব, যেখানে শুধু বাংলাদেশি নিবেদিতপ্রাণ গবেষকেরা কাজ করবেন। অবদান রাখবেন বিজ্ঞানের মৌলিক ও প্রায়োগিক শাখায়। এই ল্যাব একদিন হবেই—এই বিশ্বাস তার আছে। আমরাও আশা করি ড. সিদ্দিকীর সাফল্য একদিন বাংলাদেশের সম্মানকে নিয়ে যাবে এক নতুন উচ্চতায়।

প্রতিক্ষণ/এডি/এআই

 

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G