WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

ধান কাটার যন্ত্র উদ্ভাবন করল আমির ধান কাটার যন্ত্র উদ্ভাবন করল আমির

ধান কাটার যন্ত্র উদ্ভাবন করল আমির

প্রকাশঃ জানুয়ারি ৩১, ২০১৫ সময়ঃ ৪:৩০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৩২ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডটকম:

krishi

ক্ষেতভরা সোনালি ধান দেখে আনন্দে মন নাচে কৃষকের। একই সঙ্গে একটু দুরুদুরু ভাবও থাকে। ধান পাকার মৌসুমে যখন-তখন ঝড়বৃষ্টি বা শিলায় ফসল নষ্ট হয়। এ জন্য ভালোয় ভালোয় ধান কেটে ঘরে তুলতে হন্যে হয়ে ওঠেন কৃষকেরা।

কিন্তু ধান কাটা মাঝেমধ্যে বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়ায়। বোরো বা আমন মৌসুমে সব ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করে। এতে এলাকার মজুরেরা একসঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন তাদের কাছে ধরনা দেওয়া এক ঝক্কি। কাজটি যদি সুবিধাজনক এক যন্ত্রের ওপর চাপানো যায়, তাহলে ধান কাটা নিয়ে আর দুর্ভাবনা নেই।

ধান ও গম কাটার সময়, খরচ ও শ্রম বাঁচিয়ে উৎপাদন খরচ কমাতে ধান ও গম কাটার যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। এ চিন্তা মাথায় রেখে বগুড়া শহরের আমির হোসেন ধান কাটার এমন এক যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন, যা টেকসই ও হালকা; আর দামেও কম। এটি কৃষকদের শুধু মজুরসংকট থেকেই বাঁচাবে না, আনুষঙ্গিক ব্যয়ও কমাবে।

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রহিম ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ। ছোটখাটো বিভিন্ন কলকারখানার যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয় সেখানে। আমির হোসেন নিজেই তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কারিগর। এই কারিগরি গুণ বাবার কাছ থেকে পাওয়া।

আমির হোসেন জানান, ১৯৪০ সালে তাঁর বাবা ধলু মেকার এই কারিগরি কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় তিনি একটি সাইরেন যন্ত্র তৈরি করেছিলেন। ১৯৭৮ সালে এসএসসি পাস করে আমির বাবার ব্যবসায় যোগ দেন। ১৯৮৮ সালে বাবা মারা গেলে আমির ব্যবসা পরিচালনার ভার নেন।

শুরু থেকেই আমির উদ্ভাবনী প্রতিভার পরিচয় দিয়ে আসছেন। তাত্ত্বিক কোনো কারিগরি জ্ঞান তাঁর নেই। নেই প্রযুক্তিবিষয়ক উচ্চতর প্রশিক্ষণ। স্রেফ হাতে-কলমের অভিজ্ঞতা ও উদ্ভাবনী মেধা কাজে লাগিয়ে তিনি একের পর এক বিভিন্ন যন্ত্র তৈরি করে যাচ্ছেন।

সর্বপ্রথমে তিনি চিকন সেমাই উৎপাদনের একটি যন্ত্র তৈরি করেন। স্বল্প পুঁজির অনেক ব্যবসায়ী এ যন্ত্র ব্যবহার করে উপকার পাচ্ছেন। তাঁর উদ্ভাবিত ‘বগুড়ার চিকন সেমাই মেশিন’ এখন সারা দেশে প্রচলিত। তাঁর তৈরি ইটভাঙা ও ইট তৈরির যন্ত্রও সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এবার তিনি কৃষকদের কষ্ট লাঘবে উদ্ভাবন করেছেন ধান কাটার যন্ত্র, যার নাম দিয়েছেন ‘কলের কাঁচি’।

আমির জানান, ‘মূলত ধান কাটার জন্য এই যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি দিয়ে গম, ভুট্টা, পাট, আখসহ অন্যান্য শস্যও কাটা যাবে।’

কোনো যন্ত্র একবার মনে ধরলে অবিকল সে-রকম যন্ত্র বানানোর চেষ্টা করেন আমির হোসেন। এটি তাঁর শখ। বছরখানেক আগে তিনি গাজীপুরে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে গিয়ে ধান কাটার একটি যন্ত্র দেখেন। যন্ত্রটি বেশ বড়। আমির জানতে পারেন, বিদেশ থেকে এটি প্রায় ১২ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে। যন্ত্রটি তাঁর মনে ধরে। স্বল্পমূল্যে চাষিদের এমন একটি যন্ত্র উপহার দেওয়ার কথা ভাবেন তিনি।

বাড়ি ফিরে আমির তাঁর মেয়ে আশার সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করেন। আশা বগুড়া সরকারি আযিযুল হক কলেজের শিক্ষার্থী। যন্ত্রের নকশা তৈরির ওপর স্বল্পকালীন প্রশিক্ষণ রয়েছে তাঁর। বাবার কথামতো ধান কাটার যন্ত্রের একটি নকশা তৈরি করেন তিনি। আমির নকশামতো যন্ত্র তৈরিতে নেমে পড়েন। প্রায় এক বছর ধরে এই মেধা ও শ্রম দিয়ে তিনি তৈরি করেন ‘কলের কাঁচি’।

এই কলের কাস্তে তৈরিতে আমির দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে পাইপ, কার্বন স্টিল পেনিয়াম, কার্বন স্টিল ব্লেড রয়েছে। যন্ত্রে জুড়ে দেওয়া হয়েছে দেড় অশ্বশক্তির পেট্রলচালিত ইঞ্জিন।

আমির আরও জানান, তাঁর ‘কলের কাঁচি’ দিয়ে দুই ঘণ্টায় এক একর জমির ধান কাটা যাবে। প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ হবে ৬০—৭০ টাকা। যন্ত্রটি তুলনামূলকভাবে হালকা হওয়ায় এটি দিয়ে পূর্ণবয়স্ক যে কেউ সহজে ক্ষেতের ফসল কাটতে পারবেন। তিনি জানান, কৃষকেরা এখন যন্ত্রটি আট হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় কিনতে পারবেন। যন্ত্রটি আরও সস্তা ও আধুনিক করতে তিনি কৃষি ও শিল্পমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে কৃষক পাঁচ-ছয় হাজার টাকায় এটি কিনতে পারবেন।

জমির আইল দিয়ে ছোট একটি যন্ত্র নিয়ে আমির হোসেন যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন উপস্থিত নারী-পুরুষেরা বলাবলি করছিল, ‘এই যন্ত্র দিয়ে কেংকা করে ধান কাটপি?’

পরে আমিরের সাফল্যে সবাই অভিভূত হন।

জয়পুরপাড়ার বৃদ্ধ কৃষক হাছেন আলী বলছিলেন, ‘জিংকা করে এই যন্ত্র দিয়ে ধান কাটা দেকালো, তাতে হামাগোরে ধান কাটতে বেশি ট্যাকা লাগবি না। কী সুন্দরভাবে ধান কাটিচ্ছে, আর সেগুলো ধীরে ধীরে পড়ে যাওচে। ইংকা জিনিস কেনা লাগবি।’

সরকারি সহযোগিতায় এই যন্ত্র সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হলে ধান কাটার সময় যে শ্রমিকসংকট দেখা দেয়, তা থাকবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিক্ষণ/এডি/মাসুদ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G