WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

ফুটবল জাদুকর সামাদ ফুটবল জাদুকর সামাদ

ফুটবল জাদুকর সামাদ

প্রকাশঃ জুন ১৬, ২০১৫ সময়ঃ ২:৫৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

shamadফুটবলের জাদুঘর বললেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে ম্যারাডোনা-পেলে কিংবা মেসি-রোনালদো’র নাম। কিন্তু আমাদের দেশেও যে একজন ফুটবলের জাদুকর ছিলেন, সে খবর অনেকেই রাখেন না। আজ থেকে অনেক অনেক বছর আগে সেই জাদুকর তার ফুটবলশৈলীতে এ দেশের ফুটবলকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়। কালের আবর্তে অনেকেই তার কথা ভুলে গেলেও তিনি যে এদেশের ফুটবলের সর্বকালের সেরা একটি নাম—এটা অস্বীকার করার কোনো উপায়ই নেই। বলা হচ্ছে বাংলার ফুটবল জাদুকর সামাদের কথা।

জাদুকর সামাদ নামে পরিচিত সেই মানুষটির আসল নাম সৈয়দ আবদুস সামাদ। ব্রিটিশ-ভারতের সময়কালে এই বাংলায় যিনি নিজেকে ফুটবল মাঠে আলাদা করেই চিনিয়েছিলেন। তার দুর্ভাগ্য, তার জন্ম হয়েছিল পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে অনগ্রসর এক ভূ-খণ্ডে। নয়তো, ফুটবল ইতিহাসের এক অনন্য নাম হিসেবে তাকে মনে করতো গোটা দুনিয়া।

১৮৯৫ সালে ব্রিটিশ-ভারতের বিহারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সামাদ। ছোটবেলা থেকেই তার ফুটবল প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটতে শুরু করে। পড়াশোনায় একেবারেই মনোযোগ ছিলনা সামাদের। সে কারণে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে পড়াশোনায় ইতি টানেন তিনি। এ সময়ই ফুটবল খেলাতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন তিনি। মাঠের সঙ্গেই গড়ে তোলেন সখ্যতা।
ইতিহাস বলে তার গতি ছিল চিতার সমতুল্য। ড্রিবলিং ছিল মনোমুগ্ধকর। পূর্ণিয়ার জুনিয়র একাদশে শুরু করে প্রথমেই মাত করে দেন সবাইকে। খুব অল্প বয়সেই কলকাতার বড় বড় ক্লাবের কোচ-ম্যানেজাররা তার বাড়িতে লাইন ধরেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই তিনি ফুটবল খেলতে পাড়ি জমান সে সময়ের সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও খেলাধুলা চর্চার পীঠস্থান কলকাতা মহানগরে।

এরপরের গল্পটা কেবল সামাদের এগিয়ে চলারই। ১৯১৬ সালে তিনি মাঠে নামেন শক্তিশালী ইংলিশ ক্লাব সামারসেটের হয়ে। তার খেলায় তিনি মুগ্ধ করেন ব্রিটিশদেরও।

তার ক্যারিয়ার ছিল দারুণ সমৃদ্ধ। ১৯২১ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত তিনি খেলেছেন বিখ্যাত ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের হয়ে। ১৯২৭ সালে তার দারুণ এক গোলেই ইংল্যান্ডের ম্যাশউড ফরেস্ট দলের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল।

সামাদ ভারতীয় জাতীয় দলের জার্সি গায়েও খেলেছেন। ১৯২৬ সালে তার হাতে তুলে দেয়া হয় ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব। তিনি সে সময় ভারতের হয়ে বার্মা (মিয়ানমার), সিলোন (শ্রীলঙ্কা), সুমাত্রা-জাভা-বোর্নিও (ইন্দোনেশিয়া), মালয় (মালয়েশিয়া), সিঙ্গাপুর, হংকং, চীন ও ইংল্যান্ড সফর করেন। চীনের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ভারত ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরেও তার দেয়া চারটি গোলে ৪-৩ গোলে অবিস্মরণীয় এক জয় পেয়েছিল। এছাড়া ১৯৩৩ সালে সামাদের নেতৃত্বে সর্বভারতীয় দল গ্রেট বৃটেনকে ৪-১ গোলে এবং শক্তিশালী ইউরোপিয় টিমকে ২-১ গোলে পরাজিত করেছিল। তার খেলা দেখে ঐ সময় স্কটিশ এক ফুটবলবোদ্ধার মন্তব্য ছিল, ‘সামাদ ইউরোপে জন্ম গ্রহণ করলে সে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে স্বীকৃতি পেতো।’ ঐ সময় ঔপনিবেশিক শাসনের জাতাকলে পড়ে কখনোই পাদ-প্রদীপের আলোয় আসা হয়নি বাংলার ফুটবল জাদুকর সামাদের।

১৯৩৩ সালে সামাদ ক্যারিয়ারের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে যোগ দেন কলকাতা মোহামেডানে। নিজের সেরা সময় পার করে আসার পরেও মোহামেডানকে তিনি প্রায় একক কৃতিত্বে টানা পাঁচবার কলকাতা সিনিয়র ডিভিশন লীগে চ্যাম্পিয়ন করেন। এসময় আইএফএ শিল্ডও ঘরে তুলেছিল মোহামেডান।
খেলার মাঠে মাঝে মাঝে অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিতেন সামাদ। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছিল একবার ইন্দোনেশিয়ায়। সর্বভারতীয় ফুটবল দল গিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার জাভায়। খেলা চলাকালে ইন্দোনেশিয়ার বেশ ক’জন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে তীব্র শট করলেন সামাদ। বল গোলপোস্টের ক্রসবারে লেগে ফিরে এলো মাঠে। বিস্মিত হলেন তিনি। গোল হলো না কেন! কিছুক্ষণ পর আবারো সামাদের তীব্র শটের বল ইন্দোনেশিয়ার গোলপোস্টের ক্রসবারে লেগে ফিরে এলো। এবার সামাদ রেফারিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন, ‘‘গোলপোস্টের উচ্চতা কম আছে। তা না-হলে, আমার দুটো শটেই গোল হতো।’’ ফিতে দিয়ে মেপে দেখা গেল সত্যিই গোলপোস্টের উচ্চতা স্ট্যান্ডার্ড মাপের চেয়ে চার ইঞ্চি কম!

আরেকবার মাঠের মধ্যস্থল থেকে বল নিয়ে সব খেলোয়াড়কে বোকা বানিয়ে বল ড্রিবলিং করে নিক্ষেপ করলেন গোলে, বল গোলে প্রবেশ না করে গোলপোস্টের কয়েক ইঞ্চি ওপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে রেফারি বাঁশি বাজিয়ে বলকে আউট ঘোষণা করলেন; কিন্তু সামাদ তা গোল হয়েছে বলে চ্যালেঞ্জ করলেন। আমার শটে নিশ্চিত গোল হয়েছে। সামাদের শটের মেজারমেন্ট কোনোদিন ভুল হয়নি। গোলপোস্ট উচ্চতায় ছোট। মেপে দেখা গেল সত্যিই তাই। ফুটবল নিয়ে সেই কিশোর বয়স থেকে অনুশীলন করতে করতে সামাদ পরিণত হয়েছিলেন ফুটবলের এক মহান শিল্পীতে। একবার খেলার আগ মুহূর্তে মাঠের চারদিকে পায়চারী করে এসে সামাদ ক্রীড়া কমিটির কাছে অভিযোগ করলেন এ মাঠ আন্তর্জাতিক মাপ হিসেবে ছোট বিধায় এ মাঠে আমাদের টিম খেলতে পারেনা। পরে মাঠ মাপার পর তার অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়। তার খেলোয়াড়ী জীবনের এমন বহু ঘটনা আজও দেশ-বিদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অগণিত সামাদ ভক্তের মুখে মুখে।

কথিত আছে, ফুটবল জাদুকর সামাদের সোনার মূর্তি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে। আমরা বিশ্বনন্দিত ফুটবল যাদুকর সামাদকে কতটুকু মূল্যায়ন করছি? মূল্যায়ন বলতে, পার্বতীপুর শহরের ইসলামপুর কবরস্থানে সমাহিত করার দীর্ঘ ২৫ বছর অবহেলিত ও অরক্ষিত থাকার পর ১৯৮৯ সালে ৫২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিসৌধ। তার স্মরণে একটি ডাক টিকেট। আর, পার্বতীপুরে রেলওয়ের নির্মিত একটি মিলনায়তন। যার নাম রাখা হয়েছে “সামাদ মিলনায়তন”।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G