WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

কট্টর দু’শ্রেণীর উত্থানে নষ্ট হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কট্টর দু’শ্রেণীর উত্থানে নষ্ট হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি

কট্টর দু’শ্রেণীর উত্থানে নষ্ট হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি

প্রকাশঃ জুন ১, ২০১৭ সময়ঃ ১২:৪৭ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ

এখনও আমার গ্রামে মুয়াজ্জিনের আযানের সুরে বিমোহিত হয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম মসজিদে ছুটে যান। আর আযান শেষ হবার পর পরই দাসবাড়ির জগৎবাবুর (জগৎ চন্দ্র দাস)বাড়িতে ঘন্টা বাজে। একদিকে মসজিদে মাগরিবের নামায, অন্যদিকে উলুধ্বনিতে দাস বাড়িতে প্রার্থনা। আজ পর্যন্ত এই ধর্মাচরণের কোন ব্যাত্যয় দেখিনি। কখনও এ নিয়ে গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবারটির সাথে কারো কোন বিরোধ লক্ষ্য করা যায়নি।

এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তাদেরকে জীবনবাজি রেখে সবাই রক্ষা করেছে। সে ঋণ তাঁরা এখনও ভুলে যায়নি। গ্রামের যেকোন উৎসব-অনুষ্ঠানে তাঁরা স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে, আর তাদের যেকোন অনুষ্ঠানে আমরাও আনন্দ ভাগাভাগি করি। কখনও মনে হয়নি তারা অস্পৃশ্য বা ভিন্ন কেউ, দূরের কেউ। লক্ষ্য করার মতো বিষয় হলো, এত বছরেও কেউ কারো বিশ্বাসের অনুভূতিতে আঘাত করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না ইন-শা-আল্লাহ। বাংলাদেশে ৬৮ হাজার গ্রামের চিত্র এমনই।

পাশ্ববর্তী দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের যে উদাহরণ রয়েছে সেগুলো বিশ্লেষণ করলে আমরা সহজেই অনুধাবন করতে পারবো; সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত হচ্ছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।(কিছু বিছিন্ন ঘটনা আছে, থাকবে)।

শুধু এটুকু বলবো ভূ-রাজনৈতিক কারণে হাজার বছর ধরে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ধর্মের মানুষের পাশাপাশি থাকার ফলে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানের যে জায়গাটি তৈরি হয়েছে তা এক কথায় অতুলনীয়। এদেশের মাটি ও মানুষের ভেতর থেকে উঠে আসা যে সংস্কৃতি তা আমাদের রক্তের সাথে মিশে গেছে। সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার যেমন ঠাঁই নেই, তেমনি ধর্মীয় উগ্রবাদের সুযোগও নেই। মুয়াজ্জিনের আযানের সুরে আমরা যেমন মসজিদে ছুটে যাই, ঠিক তেমনি ঢোলের বাদ্যে আমাদের রক্তও আনন্দে টগবগ করতে থাকে। জারি, সারি, মুর্শিদী, ভাটিয়ারী ও বাউল গানের সুর আমাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে; সুরের টানে আমরা সারারাত জেগে থাকি। আবার একইসাথে ফজরের আযান শুনে মসজিদে গিয়ে নামায শেষে স্রষ্টার জিকির সেরে বাড়ি ফিরি। এই অভ্যাস- ঘন্টা, দিন বা মাসের নয়; হাজার বছরের যাপিত জীবনের প্রতিচ্ছবি এটি।

কিন্তু বর্তমান নগর সংস্কৃতিতে আমরা এসব কী দেখতে পাচ্ছি? উগ্রবাদ, হানাহানি আর সাম্প্রদায়িক উস্কানি। দু:খজনক হলেও সত্য, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে কট্টর দুটো শ্রেণীর উত্থান হয়েছে। একশ্রেণী আধুনিকতার নামে অপ-সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মাধ্যমে উস্কানী ছড়াচ্ছে। আরেক শ্রেণী তাদের উস্কানিতে সাড়া দিয়ে ধর্মযোদ্ধার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। সামগ্রিকভাবে এটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দেশের জন্য শুভ লক্ষণ নয়।

দুপক্ষেরই এ কথা ভেবে দেখা উচিত যে- এদেশে যেমন লালন ফকির, আব্বাস উদ্দীন, আব্দুল আলীমের মতো সংগীতজ্ঞের দর্শনকে মানুষ স্বাগত জানিয়েছে; ঠিক তেমনি হযরত শাহজালাল, হযরত শাহপরানের মতো সুফি সাধকদেরও তারা বুকে টেনে নিয়েছেন। সুতরাং কথিত আধুনিকতার দোহাই দিয়ে, প্রগতিশীলতার কথা বলে যারা বাস্তবে -ভার্চুয়াল জগতে নোরাংমিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন- আর সুকৌশলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধাতে চাচ্ছেন; তারা কখনও এদেশে সুবিধা করতে পারবেন না। এদেশের সাধারণ মানুষ তাদের কখনও গ্রহণ করেনি, করবেও না। ঠিক একইসাথে যারা ধর্মের রক্ষক বলে মনগড়া সব বক্তব্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চান, উগ্রবাদী বিষবাষ্প ছড়াতে চান; তাদেরকেও এদেশের মানুষ কখনও গ্রহণ করবে না।

এই দু’পক্ষেরই মনে রাখা উচিত- মাটি ও মানুষ থেকে উঠে আসা আবহমান যে সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে হাজার বছর ধরে লালন করা হচ্ছে ; সেখানে ধর্মভীরু মানুষ আছে, কিন্তু তারা ধর্মান্ধ নয়। একইসাথে আধুনিক–রুচিশীল যে দেশজ সংস্কৃতিকে এদেশের মানুষ তাঁদের হৃদয়ে ধারণ করছেন; সেই সংস্কৃতি তাঁদের যাপিত জীবনের প্রতিচ্ছবি। যেখানে উগ্রবাদের প্রশ্রয় নেই, অপ-সংস্কতিরও ঠাঁই নেই।

কট্টর যে দুটি শ্রেণীর কথা বলেছি; তাদের সংখ্যা বেশি নয়, হাতে গোনা। অথচ এদেরই একদল প্রতিনিয়ত প্রগতিশীলতার নামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করছে, আরেকদল তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে তৎপর হয়ে উঠছে। তাদের দু’পক্ষের উস্কানিতেই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে। আবার রাতের আাঁধারে মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত এবং গির্জার পাদ্রী খুন হয়। মুহূর্তেই আগুনে ঘি ঢালার মতো ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণা- বিদ্বেষ। এর খেসারত দিতে হচ্ছে হাজার বছর ধরে সম্প্রীতির অপূর্ব মেল-বন্ধনে আবদ্ধ সকল বাঙালীকে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন?

 

রাকিব হাসান

সম্পাদক, প্রতিক্ষণ ডট কম

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G