WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি, বর্ষায় প্রাণহানির আশঙ্কা পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি, বর্ষায় প্রাণহানির আশঙ্কা

পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি, বর্ষায় প্রাণহানির আশঙ্কা

প্রকাশঃ মার্চ ১৪, ২০১৭ সময়ঃ ১০:০০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:২৮ অপরাহ্ণ

বিপ্লব পার্থ, চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে চরম ঝুঁকির মধ্যে বাস করছেন লক্ষাধিক লোক। পাহাড় ধসে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হলেও ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস বন্ধ হচ্ছে না। পাহাড় ও দেয়াল ধ্বসের ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সে তদন্ত কমিটি বিভিন্ন সুপারিশও প্রদান করে। কিন্তু সুপারিশের বাস্তবায়ন হয় না।

ফলে বর্ষা মৌসুমে প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড় ধ্বসে ব্যাপক প্রাণহাণির আশঙ্কা রয়েছে। বর্ষা মৌসুম আসলে তরঘরি করে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলেও বর্ষার পর বিষয়টি ভুলে যান প্রশাসন। দিনের বেলায় প্রশাসনের উচ্ছেদের তোপে পরিবারগুলো পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরে গেলেও তাদের পুনর্বাসন না করায় তারা পুনরায় ফিরে আসে পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ ঢালে।

বড় ধরণের দুর্ঘটনার পর এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তোড়জোড় দেখা গেলেও কিছুদিন পর আবার সব স্বাভাবিক হয়ে যায়।

পরিবেশ আন্দোলনকর্মীরা বলছেন প্রশাসনের উদাসীনতা, রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের লেজুড়বৃত্তি, তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না করা, পাহাড় ধ্বস রোধে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা ও সমন্বিত উদ্যোগ না থাকায় প্রাণহানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর প্রশাসন বলছে, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পাহাড় মালিকদের উদাসীনতা, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ না থাকা, বিভিন্ন সরকারী সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও রাজনৈতিক চাপের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরিয়ে নেয়া ও পুনর্বাসনে সফলতা আসছে না।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, নগরীর ১১টি পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ৬৬৬টি পরিবার বসবাস করছে। এর মধ্যে নগরীর এ কে খান মালিকানাধীন পাহাড়ে ১৮৬ পরিবার, ইস্পাহানি পাহাড়ের দক্ষিণ পাশে হারুন খানের পাহাড় ও বায়তুন আমান সোসাইটির কাছে পাহাড়ে ৫টি, কৈবল্যধাম বিশ্ব কলোনি পাহাড়ে (পানির ট্যাংক) ২৭টি, লেকসিটি আবাসিক এলাকার পাহাড়ে ১২টি, আকবর শাহ আবাসিক এলাকা পাহাড়ে ২২টি, পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছাকাছি সিটি কর্পোরেশন পাহাড়ে ১১টি, ফয়েজ লেক আবাসিক এলাকার কাছাকাছি পাহাড়ে ৯টি, ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট একাডেমির উত্তর পাশে মীর মোহাম্মদ হাসানের মালিকানাধীন পাহাড়ে ৩৮টি, নাসিরাবাদ শিল্প এলাকা সংলগ্ন পাহাড়ে ৩টি, জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটি সংলগ্ন পাহাড়ে ৩৩টি, মতিঝর্ণা ও বাটালি হিল পাহাড়ে ৩২০টি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। এ ১১টি পাহাড় ছাড়াও আরো ১৪টি পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে।

তবে সরেজমিন পরিদর্শনে পরিবারের সংখ্যা অনেক বেশি। মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, খুলশী, লালখান বাজার, পাহাড়তলী, টাইগার পাস, আমবাগান, বাটালি হিল রেলওয়ে কলোনী, পাহাড়তলী রেল কলোনী, বায়েজিদ বোস্তামি, হাটহাজারী উপজেলার ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী সিটি কর্পোরেশন ওয়ার্ডের শাহ আমানত কলোনি, জঙ্গল পাহাড়তলী, কাছিয়াঘোনা, লেবু বাগান, ভাটিয়ারীসহ সীতাকুন্ডের সলিমপুর, লতিফপুর ও রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন পাহাড়গুলোর পাদদেশ ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে লক্ষাধিক মানুষ।

পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীরা অধিকাংশই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা গার্মেন্ট শ্রমিক, রিকশাওয়ালা কিংবা গরিব দিনমজুর ও খেটে খাওয়া অসহায় নিঃস্ব মানুষ। অল্প টাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে তারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে পাহাড়ের পাদদেশে।

নগরীর বাটালি হিলে বসবাসরত বাসিন্দা সানোয়ারা প্রতিক্ষণকে বলেন, কুমিল্লা থেকে তার বাপ দাদা প্রায় ৪০ বছর আগে এখানে এসে বসতি স্থাপন করে। পরবর্তীতে এ এলাকায় তার বিয়েও দেওয়া হয়। গরীব বলে বেশি টাকা দিয়ে ভাড়া বাসায় থাকা সম্ভব নয় বলে এখানে থাকেন বলে জানান ফেনি থেকে আসা আবদুল মালেক নামে এক রিকশাচালক বলেন, এখানে বসবাসকারী সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। কম টাকায় এখানে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানিসহ সব রকম সুবিধা আছে। তাই মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে আমরা বসবাস করছি।

বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ও দেওয়াল ধ্বসে গত আট বছরে প্রায় ২০৫ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ২০০৭ সালের ১১ জুন স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধসে চট্টগ্রামে ১২৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট লালখান বাজারের মতিঝর্ণা এলাকায় পাহাড় ধসে মারা যান ১১ জন, ২০০৯ ও ২০১০ সালে নগরীর পাহাড়তলী, সিআরবি, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে মারা যান আরও ১৫ জন। ২০১১ সালের ১ জুলাই পাহাড় ধ্বসে একই পরিবারের ৮ জনসহ বাটালি পাহাড়ের রিটেইনিং দেয়াল ধ্বসে ১৭ জন মারা যান। ২০১২ সালে ১৭ জুন নগরীর ফিরোজ শাহ কলোনিসহ বিভিন্ন এলাকায় ২৩ জন মারা গেছে। ২০১৩ সালে পাহাড় ধসে ও দেয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৫ জনের। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে মারা গেছে ৫ জন। ২০১৬ সালে মারা গেছে ৩ জন। ২০০৭ সালে পাহাড় ধ্বসের ঘটনার পর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি ২৮টি কারণ নির্ধারণ করে ৩৬টি সুপারিশ প্রণয়ন করে। তবে সুপারিশগুলো আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল- পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখা, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে পাহাড়ে পুলিশ ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকা, পাহাড়ে কাঁটাতারের ঘেরা দেয়া এবং সামাজিক বনায়নের আওতায় আনা, উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য আধুনিক ও উন্নতমানের সারঞ্জামাদি ক্রয় করা ইত্যাদি। গত আট বছরে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৬টি সভা হয়েছে। শুধু সভায় আলোচনা ও বর্ষা মৌসুমে কয়েকদিন উচ্ছেদ কার‌্যক্রম পরিচালনা করে সীমাবদ্ধ থাকে কমিটির কার্যক্রম।

অভিযোগ রয়েছে, পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানি এড়াতে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের নানা চাপের কাছে বারবার পরাভূত হচ্ছে প্রশাসন। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের পুনর্বাসন ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে প্রশাসনের আন্তরিকতা থাকলেও সরকার ও বিরোধী দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরায় বাধা হয়ে দাঁড়ান। পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী শরীফ চৌহান প্রতিক্ষণ বলেন, ‘বিভিন্ন সময় পাহাড় ধ্বসের ঘটনার পর তদন্ত কমিটি হয়। তারা বিভিন্ন সুপারিশও করেন। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে নানা তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুম শেষ হলেই সংশ্লিষ্টদের আর কোনো খবর থাকে না।’ কমিটির সুপাশিগুলো বাস্তবায়ন এবং পাহাড় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির ঘটনা রোধ করা যেত বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো.সামসুল আরেফিন প্রতিক্ষণকে জানান, প্রায় ৪০-৫০ বছর আগে থেকে বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে বসতিগুলো গড়ে উঠেছে। অনেকগুলো ভবন চার পাঁচতলা বিশিষ্ট। রাজনৈতিক দলের নেতারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অবৈধভাবে পাহাড়ের পাদদেশে বস্তি তৈরী করে ভাড়া দেয়। ফলে অনেক সময় প্রশাসন চেষ্টা করলেও তাদেরকে উচ্ছেদ করতে পারে না।

বর্ষা মৌসুম আসলেই পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক হয়। কিন্তু সারা বছর নিশ্চুপ থাকে কেন এমন প্রশ্নে জেলা প্রশাসক বলেন, সারা বছর পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি নিশ্চুপ থাকে সেটি সত্য কথা নয়। তবে জোরালো কার‌্যক্রম থাকে না এটি সত্য। কারণ চট্টগ্রামের পাহাড়গুলোর মালিক জেলা প্রশাসন না। পাহাড় মালিকরা বর্ষা মৌসুমে নিজেদের দায় এড়াতে উচ্ছেদ অভিযানের আমাদেরকে অনুরোধ করে। আর সারা বছর তারাই বসতি তৈরী করে সেগুলো ভাড়া দেয়।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G