WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

অদম্য মতিনের পথচলা অদম্য মতিনের পথচলা

অদম্য মতিনের পথচলা

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬ সময়ঃ ২:১৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৪৪ অপরাহ্ণ

তহিদুল ইসলাম (জাবি প্রতিনিধি)

motin

পৃথিবী যার কাছে বৈচিত্র্যহীন, প্রতি পদে হতে হয় বাঁধার সম্মুখীন। তবুও দমে যায়নি ছেলেটি, ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন অসংখ্য মেধাবীদের মাঝে। হ্যাঁ, তেমনি একজন মানুষের কথা বলছি। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মতিন। জন্মগতভাবে দুটি চোখ না থাকা সত্ত্বেও যিনি পড়াশুনা করছেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে। শুধু লেখা পড়া নয়, সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেও রয়েছে মতিনের পদচারণা।

মতিন ভালো বাঁশি বাজাতে পারেন, পারেন হারমনিয়াম বাজাতে ও গান গাইতে। অসম্ভব প্রতিভাধর মতিনের জন্ম ১৯৯৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বাঞ্চারামপুর থানার আশরাফবাদ গ্রামে। ছোটবেলায় যখন সমবয়সীরা স্কুলে দূরন্তপনায় মেতে উঠত, তখন মতিনকে থাকতে হয়েছে বাড়িতে। উঠানই ছিল তার বিচরণক্ষেত্র।

পিতার আর্থিক অনটনের কারণে ছেলেবেলার সেই সময়টায় স্কুলে ভর্তি হতে পারেননি মতিন। তবে জ্ঞান পিপাসু মতিনকে আটকে রাখতে পারেনি অর্থ। বোন যখন পড়তে বসতেন, মতিন তখন পাশে বসে পড়া শুনতেন আর মুখস্ত করতেন। লেখাপড়ার প্রতি মতিনের এই আগ্রহের কথা শুনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাকে ২০০০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেয় এবং থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় আসমাতুন্নেছা এবিসি অন্ধ কল্যাণ ছাত্রাবাসে

লেখাপড়া এবং থাকা খাওয়ার যাবতীয় খরচ বহন করত এ্যাসিস্টান্স ফর ব্লাইন্ড চিলড্রেন নামক একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন মতিন ছাত্রাবাস থেকে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতেন। এই বিদ্যালয় থেকেই মতিন ২০১০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। এরপর মতিন নিজ খরচে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন।

আর্থিক খরচ মেটাতে না পারায় লেখাপড়া যখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, তখন মতিনের সাহায্যে এগিয়ে আসে ডাচ বাংলা ব্যাংক। এখান থেকেই মতিন ২০১২ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার আগে মতিনকে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যখন সহপাঠীরা বিভিন্ন কোচিং-এ ভর্তি হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকে তখন অর্থের অভাবে কোচিং-এ ভর্তি হতে পারেননি মতিন।

এক দিন এক শুভাকাঙ্খী মতিনকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি গাইড রেকর্ড করে পাঠিয়ে দেয়। যে পরিশ্রম করতে জানে, সাফল্যতো তার কাছেই ধরা দেয়। প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষায় পরিশ্রমের ফলাফল পান। ভর্তির সুযোগ পান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা চিন্তা করে মতিন ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও মতিনকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আর্থিক সমস্যার পাশাপাশি যুক্ত হয় বইয়ের সমস্যা।

মতিন যখন স্যারদের দেয়া ডজন ডজন বইয়ের লিস্টের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তখন তার সাহায্যে এগিয়ে আসে একই বিভাগের ছাত্র মেহেদী হাসান। তিনি তাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছেন। কখনো মেহেদীর সাহায্যে টেপ রেকর্ড করে কখনো বা ব্রেইল পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে, এভাবেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন মতিন। বর্তমানে মতিনকে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছে ডাচ বাংলা ব্যাংক এবং পিডিএফ নামক একটি সংগঠন।

উল্লেখ্য, মতিন পিডিএফের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তার মতো প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সময় পেলে তিনি বন্ধুদের সাথে বিকাল বেলায় ঘুরতে বের হন ক্যাম্পাসে। বাঁশির সুরে মুগ্ধ করতে বন্ধু মহলে জনপ্রিয় মতিনের জুড়ি নেই। বন্ধুদের আবদার মেটাতে মাঝে মাঝে বাঁশি বাজিয়ে শোনান তিনি। মতিন একবার করে বুয়েট এবং জাবি মুক্তমঞ্চে স্টেজ শোতে দর্শকদের বাঁশি বাজিয়ে শুনিয়েছেন। মতিনের ইচ্ছা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিয়ে সমাজের সুবিধা বঞ্চিতদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিবেন। আত্মনিয়োগ করতে চান সমাজ কর্মে।

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G