জাবির নয় শিক্ষকের পদত্যাগ

প্রথম প্রকাশঃ মার্চ ২২, ২০১৬ সময়ঃ ৬:৪৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৪৩ অপরাহ্ণ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক:

jahangirnogor Universityজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে নয় শিক্ষক পদত্যাগপত্র দাখিল করেছে।নিরাপত্তাহীনতা, ক্ষমতাধর ছাত্রের একের পর এক অসৌজন্যমূলক আচরণের কথা উল্লেখ করে একত্রে পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি)  নয় শিক্ষক।মঙ্গলবার দুপুরের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে এ নয়জন শিক্ষক পদত্যাগপত্র জমা দেন।পদত্যাগপত্র জমাদানকারী সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ কামালউদ্দিন হল প্রশাসনের দায়িত্বে কর্মরত।

পদত্যাগপত্র জমাদানকারী শিক্ষকগণ হলেন—হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজিবুর রহমান, ওয়ার্ডেন এইচ এম সাদত ও মো. খোরশেদ আলম, আবাসিক শিক্ষক মো. ফখরুল ইসলাম ও মো. মিজানুর রহমান, সহকারী আবাসিক শিক্ষক মো. তাজউদ্দিন সিকদার, মো. মোজাম্মেল হোসেন, কাজী রাসেল উদ্দিন ও সুব্রত বণিক।

শিক্ষকরা পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন, “গত ২১/০৩/২০১৬ তারিখ মধ্যরাতে হলের কতিপয় ক্ষমতাশালী ছাত্রের নেতৃত্বে হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও চরম অসম্মানজনক ভাষা প্রয়োগে একটি মিছিল বের করা হয়। ফলে একটি চরম ভীতিকর ও নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়”।

আরো উল্লেখ করা হয়, “হলের প্রধান বাবুর্চির মৃত্যুতে সৃষ্টি হওয়া শূন্যপদে ছাত্রদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য দীর্ঘদিন ধরে হল প্রশাসনকে চাপ দিয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে তারা হল প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। তাদের হুমকির কারণে হলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে অফিসে বসতে পারেননি। হলে আবাসিক শিক্ষকগণ বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করতে গেলে তারা বাধার সৃষ্টি করে। এমতাবস্থায় নতুন ছাত্রদের আবাসন প্রক্রিয়া চরমভাবে বিঘ্ণিত হচ্ছে”।

এ ছাড়া পদত্যাগপত্রে দুই-থেকে তিন বছর আগে শিক্ষাজীবন শেষ হওয়া ছাত্রদের প্রভাবশালী ছাত্রদের প্রশ্রয়ে হলে অবস্থান এবং ধারাবাহিকভাবে হলের শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগও করেন শিক্ষকরা।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে পূর্বে থেকেই ক্ষোভ দানা বেধেছিল। সোমবার প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপাচার্যকে স্মারক লিপি দেয় শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে হল প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বাবুর্চি নিয়োগ,হলের বাবুর্চি দিয়ে প্রাধ্যক্ষের বাসার কাজে লাগানো, ডাইনিং ও হলের সামনে খাবারের মান নিম্ন হওয়া, খাবারের মান নিয়ন্ত্রণে তদারকি না করা, চলতি শিক্ষাবর্ষের অতিরিক্ত শিক্ষার্থী বরাদ্দ নিয়ে কৃত্রিম আবাসন সংকট তৈরি করা, হলের প্রথম পুনর্মিলনীতে অসহযোগিতামূলক আচরণ করা, শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সরঞ্জাম সরবরাহ না করা, ডাইনিং খুলে না দেওয়া, প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে দেখতে না যাওয়া, মাঠ সংস্কার না করা, শৌচাগারে পানি না থাকা, কল নষ্ট থাকা, লাইট নষ্ট থাকাসহ বেশকিছু অভিযোগ করে তাঁর পদত্যাগ দাবি করে।

শিক্ষকদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কি না  জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, “উনারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে গ্রহণ হবে কি না সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি। উনাদেরকে হল প্রশাসন চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছি আমরা”।

দায়িত্বপালনের বিষয়ে জানতে চাইলে পদত্যাগী হল প্রশাসনের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজিবুর রহমান বলেন, “আমরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। এখন থেকে আমাদের আর কোনো দায়-দায়িত্ব নেই”।

প্রতিক্ষণ/এডি/কেএইচ

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G