নিজেই তৈরি করুন বনসাই

প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৫ সময়ঃ ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ

লাইফস্টাইল ডেস্ক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

imagesপ্রাণের স্পন্দন আর শিল্পকর্মের নান্দনিকতা এক সুতোয় প্রকাশ পায় বলেই বনসাই জীবন্ত শিল্পকর্ম হিসেবে পরিচিত। নগরে ইটের স্থাপনার মধ্যে এক টুকরো সবুজের উপস্থিতি এবং স্বল্প পরিসরে সহজ যত্ন-আত্তিতে বনসাই সংগ্রহ করা যায় বলেই বৃক্ষপ্রিয় মানুষের কাছে বনসাইয়ের কদর যেন একটু বেশিই।

বহু বছর আগে চীন দেশে এই শিল্পের সূচনা হলেও পরবর্তী আজকাল শৌখিন সংগ্রহের পাশাপাশি ঘর সাজাতে এবং অন্যান্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজে বনসাই ব্যবহার করা হয়। মূল গাছের সব বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখে, অগভীর ছোট পাত্রে বৃক্ষজাতীয় গাছের ক্ষুদ্র সংস্করণ গড়ে তোলার কাজকেই বনসাইশিল্প বলা হয়। ক্ষুদ্র এই সংস্করণটিই বনসাই হিসেবে পরিচিত।

নিজেই তৈরি করুন বনসাই:

যে গাছটির বনসাই তৈরি করবেন, সেটার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ভালোভাবে জেনে নিন। নির্বাচিত গাছের বীজ থেকে চারা তৈরি করে নিতে পারেন অথবা নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করে তা থেকে বনসাই তৈরি করতে পারেন। বনসাইয়ের মাটি তৈরির ক্ষেত্রে দো-আঁশ বা পলিমাটির সঙ্গে পরিমিত জৈব সার ব্যবহার করুন।

পানি নিষ্কাশন ও গাছের বৃদ্ধি রোধে বিশেষভাবে তৈরি টবেই বনসাইয়ের চারা রোপণ করতে হবে। এই টবের নিচের দিকে পানি নিষ্কাশনের এবং কিনারা বরাবর দুই বা ততোধিক ছিদ্র থাকে, যা তার পেঁচিয়ে গাছের বৃদ্ধি কমিয়ে রাখে।

কিছুদিন বৃদ্ধির পর গাছটির জন্য উপযুক্ত আকৃতি নির্ধারণ করে ডালপালায় তার পেঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি নিয়মিত অবাঞ্ছিত ডাল-পাতা ছাঁটাই করতে থাকুন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি হবে আপনার বনসাইটি। ঢাকার পাশাপাশি রাজশাহীতেও বনসাইয়ের প্রসার ব্যাপক।

একটু আন্তরিকতাপূর্ণ দেখভাল আপনার বনসাইটিকে আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এ ক্ষেত্রে খুব বেশি ঝামেলার দরকার হয় না। আপনাদের জন্য বনসাইয়ের পরিচর্যার নিয়ম সমূহ জানানো হল:

১.  গাছকে নিয়মিত খাবার দিন। যেমন, কালো মাটি, বালু বা ইটের চূর্ণ, সরিষা বা নীলের খোসা ইত্যাদি।

২. বনসাই অতিরিক্ত পানিবদ্ধতা এবং রোদ— কোনোটাই সহ্য করতে পারে না। তাই এ বিষয়ে খেয়াল রাখুন।

৩. বনসাই ধুলা-ময়লামুক্ত রাখতে পানি দিয়ে পাতা ও ডাল মুছে দিন।

৪. টবের মাটিতে পোকামাকড় কিংবা ছত্রাকের প্রাদুর্ভাব হলে সঠিক মাত্রায় ওষুধ প্রয়োগ করুন।

৫. এমন স্থানে রাখুন, যেখানে আলো-বাতাস চলাচল করে কিন্তু লোকজনের যাওয়া-আসা কম।

৬. নির্ধারিত আকৃতি ঠিক রাখতে নির্ধারিত ডালপালা বাদে ছাঁটাই করুন।

৭. বেশি ব্যস্ত থাকলে সঠিক মাত্রায় তরল বা স্পেস সার প্রয়োগ করতে পারেন।

৮. অবশ্যই প্রতি এক বছর অন্তর টবের মাটি পরিবর্তন করুন।

৯. গাছের ছাঁটাইসহ অন্যান্য কাজে বনসাই পরিচর্যার জন্য নির্ধারিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন।

আপনার বনসাইটি কোনো কারণে বনসাইটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলে, যেখান থেকে কিনেছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।ব্যক্তিগতভাবে বনসাই সংগ্রহ করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলুন।খেয়াল রাখবেনকখনোই শুধু দামের ভিত্তিতে বনসাইয়ের ভালো-মন্দ নির্বাচন করবেন না।

বনসাই ক্রয়কালে খেয়াল রাখুন—

#বনসাইটির রুট বেইস ভালো কি না?

#প্রাকৃতিকভাবেই গাছটি সৌন্দর্য প্রকাশ করছে কি না।

#গাছের বাকলে বয়সের ছাপ স্পষ্ট কি না। ভালো

#বনসাইয়ের মূল কাণ্ড মসৃণ ও দাগমুক্ত হয়।

#বনসাইটি আদি বৃক্ষের বৈশিষ্ট্য বহন করে কি না।

শিল্পকর্মের সঙ্গে আপনার সম্পৃক্ততা নিরেট গৃহসজ্জার বস্তু থাকে না, এটি আপনারই একটি অংশ হয়ে ওঠে। সবুজের উপস্থিতি আপনাকে শত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রশান্ত রাখে এবং আরও উদ্যমী করে তোলে। একটি প্রাণের উপস্থিতিই অন্য একটি প্রাণের উৎসাহ জোগায়। এই বনসাই হতে পারে আপনার সেই প্রাণের উৎস।

প্রতিক্ষণ/এডি/আফেরাজা মুমু

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G