ঘুরে আসুন খানজাহান আলী সমাধিসৌধ

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১৮, ২০১৫ সময়ঃ ৭:৫৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:৫৮ অপরাহ্ণ

ষাটঅনলাইনডেস্ক,প্রতিক্ষণ ডট  কম
খানজাহান আলী (রহ.),যাকে বলা হতো রাজনৈতিকেআউলিয়া। রাজ্য শাসন ও ধর্ম প্রচার ছিল তার দায়িত্ব ও কর্তব্য, সুফিসাধনা ছিল তার নেসা, প্রজার কল্যাণ ছিল তার লক্ষ্য এবং শিল্পসমৃদ্ধ স্থাপনা নির্মাণ ছিল তার আনন্দ।

মুলত তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত নির্মাতা। সমগ্র দক্ষিণবঙ্গের পথে-প্রান্তরে রয়েছে তার অসংখ্য কীর্তিমাখা নিদর্শন। বাগেরহাট শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং খুলনা শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত খানজাহান আলী (রহ.) সমাধিসৌধ । খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়ক থেকে ৩০০ গজ দূরে এর অবস্থান। বাস থেকে নেমে এইটুকু পথ আপনাকে হেঁটে যেতে হবে।

পথের পাশে রয়েছে সারি সারি দোকান। দূর থেকে স্থানটি টিলার মতো স্থান উঁচু মনে হবে। ধারণা করা হয় খাঞ্জালি দীঘিটি খননের ফলে যে বিপুল মাটির স্তূপ জমা হয়, তার ওপর এই স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এই সমাধিতে প্রবেশের সময় আপনার চোখে পড়বে একটি আকর্ষণীয় উঁচু ফটক। এই ফটক পার হলেই সমাধিসৌধটি আপনার দৃষ্টিগোচর হবে।

এই সমাধিসৌধের প্রবেশপথ রয়েছে দুটি। পূর্বদিকের প্রবেশপথটি কারুকার্যময়। তবে সবসময় বন্ধ থাকে। দক্ষিণের প্রবেশপথটি সবসময় খোলা থাকে। বর্তমানে এই সমাধিটি খানজাহান আলী (রহ.) মাজার কমপ্লেক্স নামে পরিচিত। এই কমপ্লেক্সের ভেতর আপনি আরও দেখতে পাবেন নজরকাড়া এক গম্বুজবিশিষ্ট একটি বিশাল মসজিদ।

খানজাহান আলীর (রহ.) সমাধিসৌধের নির্মাণশৈলী ও নির্মাণসামগ্রী আপনাকে বিস্মিত করবে। এর উপরের অংশটি ইট নির্মিত একটি অর্ধবৃত্তাকার বিশাল গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। চারকোণে চার-চারটি কুইঞ্চ গম্বুজটির ভার বহন করছে। কুইঞ্চের কোণে ৪টি টাওয়ার রয়েছে। এতে রয়েছে ঘুরানো ত্রিমাত্রিক বাঁকানো কার্নিশ।

বৈশিষ্ট্যে তা বাংলার স্বকীয় স্থাপত্য রীতির পরিচয় বহন করে। এই সমাধিসৌধের গোলাকৃতির টাওয়ার, দেয়ালের খালি গাত্রাদেশ এবং খিলানের নির্মাণরীতি বাইরে থেকে আগত।

সমাধিসৌধের নিচের দিকটি পাথরে নির্মিত। লক্ষ্য করলে দেখবেন বড় বড় খাজকাটা পাথর দ্বারা তা নির্মিত হয়েছে। সমাধিসৌধের ভেতরে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন খানজাহান আলী (রহ.) কবরটি কালো পাথরে নির্মিত। তাতে ফার্সি ভাষায় বিভিন্ন উদ্ধৃতি লেখা রয়েছে।

সমাধিসৌধের বাইরে রয়েছে এক গম্বুজবিশিষ্ট একটি বিশাল মসজিদ। নির্মাণকাল ১৪৫০ সাল। এই মসজিদে খানজাহান আলী জুমার নামাজ পড়তে আসতেন এবং নামাজ শেষে এখানে বিচারকাজ করতেন।

যেভাবে যাবেন
প্রতিদিন অসংখ্য বাস মতিঝিল, গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে বাগেরহাট-খুলনা যাতায়াত করে। এসি-নন এসি ও সাধারণ কোচ সব ধরনের বাসই পাবেন। সময় লাগে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা।

থাকার ব্যবস্থা
বাগেরহাটে তেমন থাকার সুব্যবস্থা এখনও গড়ে ওঠেনি। মাজার কমপ্লেক্সেও থাকার মতো বাসা ভাড়া পাওয়া যায় না। তবে খুলনা থেকে বাগেরহাটে আসতে সময় ১ ঘণ্টা লাগবে এ কারনে খুলনাতেই থাকা ভালো। তাই ঘুরে আসুন প্রত্মতাত্ত্বিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাগেরহাটে।

প্রতিক্ষণ/এডি/মন্ডল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G