WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

গ্রেসামের বিধি এবং আমাদের করোটি গ্রেসামের বিধি এবং আমাদের করোটি

গ্রেসামের বিধি এবং আমাদের করোটি

প্রকাশঃ অক্টোবর ২৭, ২০১৫ সময়ঃ ৩:১৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:১৫ অপরাহ্ণ

floraসময়কাল ১৫০০ শতাব্দী, ইংল্যান্ডে রানী প্রথম এলিজাবেথ রানী হয়ে বসে আছেন। সেই সময়ে বাজারে নানা প্রকার নিকৃষ্ট মুদ্রা প্রচলিত ছিলো। এলিজাবেথের আগেই টিউডর বংশের রাজারা বাজারে নানা রকম নিকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন করে রেখেছিলেন আগে থেকেই। এই অবস্থায় রানী এলিজাবেথ বাজারে নতুন মুদ্রা অর্থাৎ উৎকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন করে পুরনো এবং নিকৃষ্ট মুদ্রা তাড়িয়ে দিতে চাইলেন। এখন প্রশ্ন হলো উৎকৃষ্ট আর নিকৃষ্ট মুদ্রা কি ? আমরা সবাই জানি অনেক অনেক আগে, ধাতু দ্বারা নির্মিত মুদ্রা অর্থাৎ স্বর্ণ এবং রৌপ্য মুদ্রার বহুল প্রচলন ছিলো। ( কাগজী মুদ্রা এসে এই ধাতু নির্মিত মুদ্রার ব্যবহার তুলে দেয়, কেনো দেয়,কখন দেয় সেটাও এক ইতিহাস, আমাদের এই লেখার জন্যে সেই ইতিহাসরে প্রয়োজন নেই )।

এখন কথা হলো, দেশে যদি এক ধাতুমান মুদ্রা ব্যবস্থা ( অর্থাৎ একই ধরণের ধাতু দ্বারা নির্মিত মুদ্রা ) বাজারে প্রচলিত থাকে তাহলে, পুরনো এবং ক্ষয়প্রাপ্ত নিকৃষ্ট মুদ্রাকে নিকৃষ্ট এবং নতুন প্রচলিত মুদ্রাকে উৎকৃষ্ট মুদ্রা বলা হয়। অথবা দেশে যদি দ্বি-ধাতুমান মুদ্রা ( দুই ধরণের ধাতু দ্বারা নির্মিত মুদ্রা ) প্রচলিত থাকে, তাহলে যেটার ধাতব মূল্য বেশি সেটা উৎকৃষ্ট এবং যেটার ধাতব মূল্য কম সেটা নিকৃষ্ট মুদ্রা হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। যেমন বাজারে যদি স্বর্ণ এবং রৌপ্য দুই ধরণের মুদ্রাই প্রচলিত থাকে এবং তাদের বিনিময় অনুপাত যদি ১:৮ অর্থাৎ একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে ৮ টা রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যায়, তাহলে স্বর্ণ মুদ্রাই উৎকৃষ্ট মুদ্রা বলে বিবেচিত হবে। যদি ধাতব এবং কাগজী দুই ধরণের মুদ্রাই প্রচলিত থাকে তাহলে ধাতব মুদ্রা উৎকৃষ্ট এবং কাগজী মুদ্রা নিকৃষ্ট বলে বিবেচিত হবে … ইত্যাদি ইত্যাদি।

রানী এলিজাবেথের সময় কাগজী মুদ্রারই আবিষ্কার হয়নি। ফলে তখন উৎকৃষ্ট স্বর্ণ এবং নিকৃষ্ট রৌপ্য দুই ধরণের মুদ্রা অথবা পুরনো হালকা ওজনের স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রা ( নিকৃষ্ট ) এবং ভারি ওজনের নতুন স্বর্ণ বা রেপ্য মুদ্রা ( উৎকৃষ্ট) – সব ধরণের মুদ্রা প্রচলিত ছিলো। রানী চাইছিলেন, বাজারে উৎকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন ঘটিয়ে নিকৃষ্ট মুদ্রাগুলোকে তাড়ানোর এক প্রাণান্তকর চেষ্টা শুরু করণে । কিন্তু কি আশ্চর্য, তিনি দেখলেন, তিনি যতই চেষ্টা করছেন নিকৃষ্ট মুদ্রা তাড়িয়ে উৎকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন ঘটাতে, ততই যেন উৎকৃষ্ট মুদ্রা বাজার থেকে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। রানীর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। ডাকলেন, সেই সময়ে মুদ্রা নিয়ে কারবার করেন বা বোঝেন এমন বিশেষজ্ঞকে – নাম সার টমাস গ্রেসামকে।

গ্রেসাম দেখলেন, দুষ্টু মানুষ স্বর্ণালঙ্কার বানাতে গেলে কম ওজনের পুরনো স্বণ মুদ্রা ( অর্থাৎ নিকৃষ্ট ) না গলিয়ে বেশি ওজনের নতুন স্বর্ণমুদ্রা ( অর্থাৎ উৎকৃষ্ট) গলিয়ে অলঙ্কার বানাচ্ছে। অথবা সোনার বাজার দর বেড়ে গেলে, সোনা গলিয়ে রৌপ্য মুদ্রা সংগ্রহ করছে, কেননা তখন একই স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে বেশি সংখ্যায় রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া জমানোর জন্যে দুষ্টু মানুষ স্বর্ণ মুদ্রাকেই বেশি পছন্দ করছে। এখনও আমরা যেমন, পকেটে নতুন নোট থাকা সত্বেও, পুরনো নোটটা দিয়েই সবকিছু কিনি।

যাক, এভাবে গ্রেসাম সাহেব দেখলেন, এতো মহা মুশকিল। মানুষ জাত তো ভীষণ পাজি জাত। তিনি পুরো বিষয়টা বুঝতে পারলেন এবং রানী সাহেবাকে সব খুলে বললেন এবং সারমর্ম দিলেন এভাবে – “ বাজারে যখন পাশাপাশি উৎকৃষ্ট এবং নিকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন থাকে, তখন নিকৃষ্ট মুদ্রা উৎকৃষ্ট মুদ্রাকে বাজার থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দেয় ” – অর্থনীতিতে এটাই গ্রেসামের বিধি নামে পরিচিত। এসব শোনার পর রানী সাহেবা কি করেছিলেন আমাদের জানার দরকার নেই। কিন্তু যেটা বোঝার দরকার, সেটা হলো, ছোট্ট এই বিধি থেকে দুর্দান্ত এক দর্শন গ্রেসাম সাহবে আমাদের ধরিয়ে দিলেন।

সমাজে যখন ভালো এবং মন্দ মানুষ পাশাপাশি বসবাস করেন, তখন এই দুইয়ের মাঝে অর্থাৎ ভালো এবং মন্দের মধ্যে যখন ভালো মানুষের চেয়ে মন্দ মানুষের সংখ্যা বেড়ে যায়, তখন মন্দ মানুষগুলো ঐ নিকৃষ্ট মুদ্রার মতো, ভালো মানুষদের অর্থাৎ উৎকৃষ্টদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দেয়। আমাদের সমাজে যেভাবে মন্দ মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটছে, জানিনা ভালো মানুষগুলো আর কতদিনই টিকে থাকতে পারবে। আসুন আমরা একটু ভালো হবার, সৎ হবার, স্বচ্ছ হবার চেষ্টা করি এবং সেই সঙ্গে নিকৃষ্টদের উৎকৃষ্ট করার চেষ্টা করি …..

ফ্লোরা সরকার
লেখিকা
ই মেইল-florasarker@gmail.com

এই লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজের। এখানে প্রতিক্ষণ ডট কমের কোন নিজস্ব বক্তব্য নেই

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G