WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS
WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'
WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''
চবি প্রতিনিধি
কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে শাটলের সবুজ ক্যম্পাস। সূর্যের ঘুম ভাঙ্গেনি এখনো। পরক্ষণেই দূর্বার বুকে শিশির বিন্দু আর তাতে সূর্যের খেলাঘর। এদিকে ক্যাম্পাস ছেদ করে যাওয়া কাটা পাহাড়ে জমা পড়েছে হিমেল হাওয়া। হঠাৎ হাড়কাপুঁনি। কাটা পাহাড়ের বুকের পাজরে ছোট ছোট অসংখ্য সুখের নীড়। ক্যাম্পাসে শীতের অতিথি পাখির গেস্টরুম এগুলো। এদিকে ঘুম থেকে দেরিতে উঠার কারণে আজকেও প্রথম ক্লাস করতে পারেনি মৌ। মানে ক্যাম্পাসে এসেছে শীতকাল।
এক দশক আগেও শীতকালের এই চিত্র ছিল চবি ক্যাম্পাসের। মাত্র এক দশকের ব্যবধানে এভাবে ক্যাম্পাসে এখনো শীত আসলেও আসছে না শীতের অতিথি পাখিরা। শীত যায়, গ্রীষ্ম যায়, যায় বর্ষা ও বসন্ত। তবু দেখা মেলে না নানা রঙ, ঢং এর নজরকাড়া পরদেশি পাখির। ক্যাম্পাসজুড়ে আগের মত দেখা যাচ্ছে না হরিয়াল, চেস্টনাট হেডেড বি ইটার, মথুরা, পাহাড়ি তিতির, সরালী, লাওয়া, কাঠঠোকরা, পাতি হুদহুদ, ধনেশ, পাহাড়ি নীলকান্ত, দোয়েল, কোকিল, গ্রীণ ম্যাগপাই রবিন, ইস্টিকুটুম, মাছরাঙ্গা, সিপাহী বুলবুল, জংলি মুরগী, ছাতারে পাখি, মৌটুসী, চড়ই, টুনটুনি, শালিক কিংবা ময়নার। নরওয়ে থেকে আসা ‘নর্দান পিনটেইল’ সুদুর চীন থেকে ‘ম্যান্ডারিয়ান ডাক’ সাইবেরিয়া থেকে ‘কম্ব ডাক’, ‘বালি হাঁস’ আর ‘বাঁদী হাঁস’ যেন চিরতরে চবির ক্যাম্পাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
খুব একটা চোখে পড়ছে না শীতের কুয়াশা ভেদ করে সুন্দর ‘আবাবিল’, ভোরের আলোতে চঞ্চল ‘সাদামাটানাকুটি’ আর পড়ন্ত বিকেলের দুরন্ত সুঁইচোরা, আবাবিল, জলপিপি পাখিও। চবি ক্যাম্পাসের সীমান্তেই যেন বন্ধ হয়ে গেছে এসব অতিথি পাখির আনাগোনা। অথচ আগে শীত এলেই চবি ক্যাম্পাসজুড়ে থাকত পাখি আর পাখি। সুদূর সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান দেশ থেকে ৭০-৭৫ প্রজাতির পাখির মেলা বসত সবুজঘেরা এ ক্যাম্পাসে।
রেলস্টেশনের পাশের জলাধার থেকে শুরু করে লেক, ফরেস্ট্রি, বোটানিকাল গার্ডেন সংলগ্ন জলাধারে চলত নানা প্রজাতির পাখির অবাধ বিচরণ। সবুজ পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট খোপ করে বাসা বুনতো ‘সাদামাটানাকুটি’। আর সুঁইচোরার ঝাঁক চোখে পড়তো ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের পেছনের এলাকায়। ইতোমধ্যে সারাদেশের প্রতিটি হাওড়-বাওড়, বিল-ঝিলে অতিথি পাখির আগমন শুরু হলেও এখনো অতিথি পাখিদের দেখা মেলেনি চবি ক্যাম্পাসে। মাত্র এক দশক আগেও যেখানে চবি ক্যাম্পাসে পাখির কিচির মিচিরে ঘুম ভাঙতো আবাসিক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের। সেই ১৭শ ৫৪ একরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আজ যেন অতিথি শূন্য।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক জরিপ মতে, এই ক্যাম্পাসে মোট ১৫০ প্রজাতির পাখির বসতি! যার অন্তত ৮০ প্রজাতি দেশীয়। বর্তমানে এই সংখ্যাটি কত জানতে চাইলে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী সৈয়দ মোহাম্মদ আসমত বলেন, ‘শীতের অতিথি পাখিদের নিয়ে কোন জরিপ না হওয়ায় সংখ্যাটা বলা মুশকিল। তবে পাখির সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমেছে।’
পাখি না আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান,‘ক্যাম্পাস ‘ইন্দো বার্মা হট স্পট’ এলাকায় হওয়ায় এখানে প্রাণী বৈচিত্রের সম্ভাবনা বেশি থাকা সত্ত্বেও পাহাড়ে আগুন দেওয়া, অবাধে বৃক্ষনিধন ও বিদেশি প্রজাতির গাছের কারণে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে তাই এবারো অতিথি পাখি আসেনি। তবে বেশি করে দেশি গাছ লাগানোর মাধ্যমে পাখির নিরাপদ আশ্রয়¯’ল গড়ে তুলা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।’
এ ব্যাপারে পাখি গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন বলেন,‘ ১৭৬ প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য চবির ক্যাম্পাস। বর্তমানে দেশে পাখির প্রজাতির সংখ্যা ৪৭৬। চবির ক্যাম্পাসে পাখি প্রজাতির এ সংখ্যাই জানিয়ে দেয় এ ক্যাম্পাস পাখির কত প্রিয়! তাই পাখির নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুনজর অতি প্রয়োজন। পাশাপাশি পাখি সপ্তাহ এবং পাখি উৎসব করার মধ্য দিয়ে সচেতনা বৃদ্ধি ও ২০০৮ সালে গঠিত বার্ড ক্লাবটি সচল করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি