বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট হারালে করনীয়

প্রথম প্রকাশঃ নভেম্বর ৩, ২০১৫ সময়ঃ ১:১১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:১১ অপরাহ্ণ

exam

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে আপনাকে প্রথমে যে কাজগুলো করতে হবেঃ

(১) জিডি (জেনারেল ডায়েরি বা সাধারণ ডায়েরি) করা। নিকটস্থ থানায় গিয়ে কর্তব্যরত অফিসারকে বুঝিয়ে বলুন আপনার সার্টিফিকেট হারিয়ে গেছে এই কারণে আপনি একটি জিডি করাতে চান। তিনি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করবেন যা জিডির জন্য প্রয়োজনীয়। জিডি করতে যাওয়ার আগে আপনার সার্টিফিকেটের মূল তথ্য অথবা প্রবেশ পত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড সাথে নিয়ে যাবেন। তাহলে প্রয়োজনের মুহূর্তে সঠিক তথ্য দেয়া সম্ভব হবে।

(২) জিডির একটি কপি আপনাকে দেয়া হবে, যেখানে সকল বিস্তারিত তথ্য ও জিডি নাম্বার থাকবে। এটির কমপক্ষে ৫-৬টি ফটোকপি করে সংরক্ষণ করুন। পরে এগুলো দরকার হবে।
এবার পত্রিকা অফিসে যোগাযোগ করুন। দেশের সবচেয়ে প্রচলিত পত্রিকা বা আপনার স্থানীয় কোন পত্রিকা। তবে প্রচলিত পত্রিকাগুলোয় যোগাযোগ করা ভাল। পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে, এ ব্যাপারে পত্রিকায় দায়িত্বরত ব্যক্তির সাথে কথা বলুন।

পত্রিকার বিজ্ঞাপনে যেসব বিষয় অবশ্যই উল্লেখ করতে হবেঃ

১. জিডি নাম্বার
২. সার্টিফিকেটে থাকা পরীক্ষার নাম
৩. বোর্ড
৪. পাশের সন
৫. নিজের নাম
৬. কীভাবে আপনার সার্টিফিকেট হারিয়েছে এছাড়াও আরও কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য বাকি রয়ে গেলে তা আপনার কাছে পত্রিকায় দায়িত্বরত কর্মকর্তা জিজ্ঞেস করবেন। কাজেই এ নিয়ে চিন্তিত হবেন না।

(৩) জিডির কপি এবং পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনটি কেটে সাথে নিন। যে শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়েছেন তার তথ্যসংগ্রহ কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন। তাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে নির্ভুলভাবে পূরণ করুন।

(৪) সকল কাগজপত্র নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত যে কোন ব্যাংকের কোন একটি শাখায় চলে যান, ডিমান্ড ড্রাফট করুন। এবার সকল কাগজপত্র যথা: জিডির কপি, পত্রিকার বিজ্ঞাপনের কাটিং, আবেদনপত্র এবং টাকা জমা দেয়ার রশিদ সব একত্রিত করে শিক্ষাবোর্ডের সচিবের নিকট আবেদন পত্র লিখুন।

আবেদন পত্রে যে তথ্যগুলো অবশ্যই থাকতে হবে-
আবেদনপত্র পূরণের ক্ষেত্রে প্রথমেই উল্লেখ করতে হবে আপনি কোন পরীক্ষার (মাধ্যমিক না উচ্চমাধ্যমিক) কী হারিয়েছেন এবং কী কারণে আবেদন করছেন। আবেদনপত্রের বিভিন্ন অংশে ইংরেজি বড় অক্ষরে এবং বাংলায় স্পষ্ট অক্ষরে পূর্ণ নাম, মাতার নাম, পিতার নাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, রোল নম্বর, পাশের বিভাগ/জিপিএ, শাখা, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, শিক্ষাবর্ষ এবং জন্মতারিখসহ বিভিন্ন তথ্য লিখতে হবে। পরবর্তী অংশে জাতীয়তা, বিজ্ঞপ্তি যে দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সেটির নাম ও তারিখ এবং সোনালী ব্যাংকের যে শাখায় ব্যাংক ড্রাফট করেছেন সে শাখার নাম, ড্রাফট নম্বর ও তারিখ উল্লেখ করতে হবে। আবেদনপত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশের প্রয়োজন হবে। এতে তার দস্তখত ও নামসহ সিলমোহর থাকতে হবে।

আবেদন করার পর আপনার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে কি না, কিভাবে পরবর্তীতে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে এ সকল তথ্য বোর্ড থেকেই আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। তথ্যগুলো লিখে রাখুন এবং নিয়মিত খোঁজ নিন। নতুন সার্টিফিকেট পাওয়ার পর– দয়া করে অফসেট কাগজে এর কিছু ফটোকপি করিয়ে রাখুন এবং এমন স্থানে রাখুন যাতে তা সহজে হারিয়ে না যায়। অথবা পানি, আগুন বা পোকার আক্রমণে বিনষ্ট না হয়। সতর্কতা অবলম্বন করুন:– যখন তখন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রটি হারিয়ে যায়। পুড়ে যায় অথবা নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ ধরনের বিড়ম্বনা পোহানোর চাইতে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করাটা অনেক ভাল। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজের মূল কপি এদিকে-ওদিকে না ছুটে অফসেট ভাল ফটোকপি মেশিনে একসেট কপি করিয়ে তা থেকে পরবর্তীতে ফটোকপি করলে অহেতুক এসব ঝামেলায় পড়তে হবে না। এসব ঝামেলা থেকে খুব সহজেই রেহাই পেয়ে যাবেন।

তবে এই পদ্ধতির একটা ব্যাতিক্রম আছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া সনদপত্র/নম্বরপত্র/একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের অংশবিশেষ থাকলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে না বা থানায় জিডি করতে হবে না। এ ক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সঙ্গে ওই অংশবিশেষ জমা দিতে হবে। তবে সনদে ও নম্বরপত্রের অংশবিশেষে নাম, রোল নম্বর, কেন্দ্র, পাশের বিভাগ ও সন, জন্ম তারিখ ও পরীক্ষার নাম না থাকলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আর বিদেশি নাগরিককে ব্যাংক ড্রাফটসহ নিজ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। সবক্ষেত্রেই সাময়িক সনদ, নম্বরপত্র, প্রবেশপত্র ফি (জরুরি ফিসহ) ১৩০ টাকা। এছাড়া ত্রি-নকলের জন্য ১৫০ টাকা এবং চৌ নকলের জন্য ২৫০ টাকা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে জমা দিতে হয়। আর টাকার কম বেশিও হতে পারে। ওয়েবসাইট থেকে বর্তমান তথ্য পেতে পারেন। সুতারং; বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট বা নম্বরপত্র হারিয়ে গেলে কী করবেন? এই কথাটি আর না ভেবে উপরোক্ত পদ্দতি অনুযায়ী যা যা করার দরকার এক্ষুনি করে ফেলুন।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/এসএ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G