একাধিক বিয়ে করা তারকারা

প্রথম প্রকাশঃ জুলাই ২৭, ২০১৫ সময়ঃ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:১১ অপরাহ্ণ

বিনোদন ডেস্ক :

ruপশ্চিমা সমাজের তুলনায় বাংলাদেশের সমাজ রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত হলেও এ দেশের তারকারাও প্রেম-ভালোবাসা ও একাধিক বিয়ের ক্ষেত্রে কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই। আসুন আজ জেনে নেই বাংলাদেশের বিনোদন জগতের কয়েকজন তারকার কথা যারা একাধিকবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন।

রুমানাঃ

প্রথমেই আসা যাক, মডেল ও অভিনেত্রী রুমানা খানের কথায়। এখন মিডিয়ার গরম খবর তৃতীয়বারের মতো বিয়ে করতে যাচ্ছেন তিনি। বিজ্ঞাপন নির্মাতা এবং উপস্থাপক আনজাম মাসুদকে প্রেম করে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু সেই বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। এর পরে রুমানা দ্বিতীয় বিয়ে করেন সাজ্জাদ নামে ঢাকার আরেক ব্যবসায়ীকে। সে বিয়ে কয়েক বছর টিকলেও একপর্যায়ে তাদের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়। বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাদের। এবার তৃতীয়বারের মতো বিয়ে করতে যাচ্ছেন রুমানা।

জহির রায়হা্নঃ

এবার ফিরে যাওয়া যাক, বাংলা চলচ্চিত্রের সাদা-কালো যুগে। সেই রক্ষণশীল সময়েও কিন্তু তারকারা একাধিক বিয়ে করতেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হা্নের কথা। তিনি ১৯৬১ সালে চিত্রনায়িকা সুমিতা দেবীকে বিয়ে করেন। কিন্তু সেই বিয়ে টেকে নি। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬ সালে চিত্রনায়িকা সুচন্দাকে বিয়ে করেন তিনি।

জসিমঃ

বাংলার ড্যাশিং হিরো জসিমও কম যান না। জসিম প্রথমে বিয়ে করেন চিত্রনায়িকা সুচরিতাকে। পরে অবশ্য তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি বিয়ে করেন চলচ্চিত্রাভিনেত্রী নাসরিনকে।
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আলমগীরের বর্তমান স্ত্রী বিখ্যাত সংগীতশিল্পী রুনা লায়লাকে কে না চেনে। তবে তার প্রথমা স্ত্রী বিখ্যাত কেউ ছিলেননা। প্রথমে তিনি বিয়ে করেন খোশনুরকে। এরপর দীর্ঘদিনের বিবাহিত জীবনের ইjaতি টেনে তিনি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লাকে বিয়ে করেন।

হুমায়ূন আহমেদঃ

চলচ্চিত্রকার, কথাশিল্পী প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ ও অভিনেত্রী শাওনের বিয়ে ছিল শোবিজে রীতিমতো একটি আলোড়ন। হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রীর নাম গুলতেকিন। এই দম্পতির তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ রচিত আজ রবিবার  ধারাবাহিক নাটকের সেটে তার প্রেমে পড়েন মেয়ে শীলা আহমেদের বান্ধবী মেহের আফরোজ শাওন। একসময় হুমায়ূন-গুলতেকিনের ৩০ বছরের সংসার ভেঙে যায়। গুলতেকিনের সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার পরে হুমায়ূন আহমেদ বিয়ে করেন এমপিকন্যা শাওনকে। এই ঘরেও হুমায়ূন আহমেদের দুই ছেলে রয়েছে।

জেমসঃ

নগরবাউল জেমসের ২য় বিয়ে ছিলে এই সহস্রাব্দের শুরুর দিকে বাংলাদেশের আলোচিত একটি ঘটনা। জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস প্রথমে ভালোবেসে বিয়ে করেন অভিনেত্রী রথিকে। কিন্তু তাদের এ সংসার বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ২০০২ সালে তারা আলাদা হয়ে যান। জেমস বেনজির সাজ্জাদ নামে প্রবাসী এক তরুণীর প্রেমে পড়েন। রথির সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে সেই প্রবাসী তরুণীকে বিয়ে করেন তিনি।

রুনা লায়লাঃ

শুধু যে পুরুষ তারকারাই বিয়ের ময়দানের পাকা খেলোয়াড় তা নয়। বরং একাধিক বিয়েতে নারী তারকারাও কম যাননা। যেমন আলমগীরের দ্বিতীয় স্ত্রী উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রুনা Runa lailaলায়লা এ পর্যন্ত তিনবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। তার প্রথম বিয়ে হয় খাজা জাভেদ কায়সারের সঙ্গে। দ্বিতীয় বিয়ে করেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক রন ড্যানিয়েলকে এবং সর্বশেষ বিয়ে করেন চিত্রনায়ক আলমগীরকে।

সাবিনা ইয়াসমীনঃ

আরেক প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনও ৩টি বিয়ে করেছেন। তিনি প্রথমে বিয়ে করেন আনিসুর রহমান নামের এক ব্যাংকারকে। তার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুকে বিয়ে করেন। এই সংসারে তার একটি কন্যাসন্তান আছে। কিন্তু তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর সাবিনা বিয়ে করেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমনকে।

মমতাজঃ
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফোক সম্রাজ্ঞী খ্যাত জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজও এ পর্যন্ত তিনটি বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্বামী ছিলেন বাউলশিল্পী রশিদ বয়াতি। তার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর মানিকগঞ্জ পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান রমজান আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় মমতাজের। কিন্তু সেই বিয়েও সুখী করতে পারেনি মমতাজকে। ২০০৮ সালে রমজান আলীর সঙ্গে মমতাজের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর নিজের প্রতিষ্ঠা করা মমতাজ চক্ষু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মঈন হাসান চঞ্চলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং ডঃ মঈনকেই তিনি বিয়ে করেন।

ডলি সায়ন্তনীঃ

সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনীও বিয়ে করেছেন ৩টি। প্রথমে বিশিষ্ট গীতিকার রিজভীকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে দুটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু বিয়ে ভেঙ্গে যায় তার। এরপরে ডলি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সংগীতশিল্পী রবি চৌধুরীকে। কিন্তু তাদের সংসারও শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এরপরে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন তিনি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় অন্য তারকাদের চেয়ে নারী কন্ঠশিল্পীদের মনেই প্রেমটা একটু বেশি। নাহলে প্রায় প্রত্যেকেই কেন ৩টি করে বিয়ে করেছেন তারা!

51d72065d6fea-Untitled-4

অপি করিমঃ

একাধিক বিয়েতে ছোট পর্দার তারকারাও কম যাননা। টিভি অভিনেত্রী অপি করিম দুটো বিয়ে করলেও এখন একাই আছেন। অভিনেত্রী অপি করিম ২০০৭ সালে জাপানপ্রবাসী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার তাসির আহমেদকে বিয়ে করেন। একসময় তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে। মিডিয়ায় অপির ব্যস্ততা এবং মিডিয়ার লোকদের সঙ্গে মেলামেশাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না তাসির। অন্যদিকে তাসিরের বিরুদ্ধে আগে আরো একটি বিয়ে করাসহ নানা অভিযোগ তোলেন অপি। তাদের সংসার ভেঙে যায়। এরপর অপি প্রেমে পড়েন নাট্য পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের এবং তাকে বিয়ে করেন। কিন্তু সেই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি।

অপূর্ব-প্রভাঃ
ছোট পর্দার অভিনয়শিল্পী অপূর্ব সহশিল্পী প্রভাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু প্রভা বিয়ের আগে রাজিব নামক এক ছেলের সঙ্গে প্রেম ও অবাধ মেলামেশায় জড়িয়েছিলেন। অপূর্বর সঙ্গে প্রভার বিয়ের কিছুদিন পরে রাজিব ও প্রভার কিছু ভিডিওচিত্র ফাঁস হলে প্রভার সঙ্গে অপূর্বর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরে অপূর্ব নতুন সংসার বাঁধেন নাজিয়া হাসান অদিতির সঙ্গে। পরে মাহমুদ শান্ত নামের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন প্রভা।

হিল্লোল-তিন্নিঃ

নওশীন নেহরিন মৌ মিডিয়ায় প্রথম কাজ শুরু করেন আর জে হিসেবে। পরে তিনি টিভি অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করে দারুণ জনপ্রিয়তা পান। একপর্যায়ে তিনি টিভি নাটকেও নিয়মিত কাজ শুরু করেন। মিডিয়ায় কাজ করতে করতেই অভিনেতা হিল্লোলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। হিল্লোল তার স্ত্রী তিন্নিকে ছেড়ে নওশীনকে বিয়ে করেন। তবে এটি নওশীনের প্রথম বিয়ে ছিল না। মিডিয়ায় কাজ শুরু করার আগে তিনি বিয়ে করেন তার প্রেমিককে। কিন্তু সেই বিয়ে টেকেনি বেশি দিন। সেই ঘরে একটি সন্তানও রয়েছে নওশীনের।

মিডিয়াপাড়ায় হিল্লোল-তিন্নির বিয়ে নিয়ে বেশ কানাঘুঁষো হয়েছিল। এটা ছিল ভালোবাসার বিয়ে। তিন্নি ধর্মান্তরিত হয়ে মা-বাবাকে ছেড়ে হিল্লোলের কাছে চলে আসেন। এই দম্পতির ঘর আলো করে আসে এক কন্যাসন্তান। তবে এই তারকা দম্পতির সংসারও টেকেনি। তিন্নির বিরুদ্ধে মাদকসেবন ও পরপুরুষের প্রতি আসক্তির অভিযোগ তোলেন হিল্লোল। শেষ পর্যন্ত তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। হিল্লোল এরপর মডেল অhrভিনেত্রী নওশীনের সঙ্গে নতুন করে সংসার পেতেছেন।

শমী কায়সারঃ

জনপ্রিয় অভিনেত্রী শমী কায়সারও দুটি বিয়ে করেছেন। ১৯৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের চিত্রনির্মাতা রিঙ্গোকে বিয়ে করেন শমী কায়সার। তাদের সংসারের স্থায়িত্ব ছিল দুই বছর। এরপর শমী বিয়ে করেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আরাফাতকে।

আরেফিন রুমীঃ

আরেফিন রুমীর দাম্পত্যজীবন নিয়েও মিডিয়ায় কম কানাঘুঁষো হয় নি। ২০০৮ সালে কণ্ঠশিল্পী আরফিন রুমী বিয়ে করেন লামিয়া ইসলাম অনন্যাকে। ২০১০ সালের তাদের একটি পুত্রসন্তান হয়। কিন্তু তাদের এ সংসার বেশি দিন টেকেনি। ২০১২ সালে অনন্যার সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। পরে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী কামরুননেসাকে বিয়ে করেন রুমী।

হৃদয় খানঃ

তরুণ কণ্ঠশিল্পী হৃদয় খানও বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন ২ বার। বয়স ২১ না পেরুতেই দুটি বিয়ে সম্পন্ন করেন তিনি। প্রথমে প্যাড বাদক মানিকের শ্যালিকাকে বিয়ে করেন তিনি। সে সংসার ভাঙার পর ভালোবেসে বিয়ে করেন মডেল ও অভিনয়শিল্পী সুজনাকে। সে বিয়েও টেকেনি। এক বছরের মাথায় বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে হৃদয়-সুজানার।
মডেল ও অভিনেত্রী সুজানা যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সামির নামের এক যুবককে ২০০৬ সালে বিয়ে করেন। সে বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর বয়সে ৭ বছরের ছোট কণ্ঠশিল্পী হৃদয় খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিয়ের অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাদের। সম্পর্ক ভাঙ্গার পেছনে কারন হিসেবে হৃদয় খানের আচরণে অশ্রদ্ধার অভিযোগ তোলেন সুজানা।


সবাই যা পড়েছেঃ

# রোমানার তৃতীয় বিয়ে

# রুবেলকে নিয়ে হ্যাপির ভিডিও প্রকাশ

# বিতর্কিত তারকারা

# নির্লজ্জ আনুশকা !

# পুরুষের অপছন্দ যে ৬ নারীকে

#  পৌনে দুই লাখ টাকা সালামি পেয়েছেন পরীমনি

# স্বার্থপর মানুষেরা বেশি সুখী


প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G