WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

ফুল ভাসিয়ে বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু ফুল ভাসিয়ে বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু

ফুল ভাসিয়ে বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু

প্রকাশঃ এপ্রিল ১২, ২০১৭ সময়ঃ ৪:৩৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৩৬ অপরাহ্ণ

মো: সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি:

তিন পার্বত্য জেলায় বুধবার সকালে চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে নববর্ষ বরণে বৈসাবি উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা।

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বৃহত্তম এই সামাজিক আয়োজনে ব্যস্ত এখন শহর, নগর আর পাহাড়ি পল্লিগুলো। চারিদিকে আনন্দের সুর আর বৈসাবির আয়োজন। ২৯ চৈত্র বুধবার চাকমা জনগোষ্ঠীর ‘ফুল বিজু’, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ‘হাঁড়িবসু’ আর মারমা সম্প্রদায়ে সূচিকাজ। ঠিক ফুলবিজু নামে অভিহিত না হলেও এই দিন প্রায় সকল পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী পানিতে ফুল ভাসিয়ে দেয়।

উৎসব প্রিয় পাহাড়িরা সারা বছর মেতে থাকেন নানান অনুষ্ঠানে। তবে তার সব কিছুকে ছাপিয়ে যায় পুরনো বর্ষকে বিদায় এবং নতুন বর্ষকে বরণের এই উৎসব। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরা বৈসুক, মারমারা সংগ্রাই, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু-এভাবে তারা ভিন্ন ভিন্ন নামে আলাদাভাবে উদযাপন করে এই উৎসব। উৎসবের প্রথম দিনে চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমারা বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে তা দিয়ে ঘর সাজায়। পবিত্র এই ফুল ভাসিয়ে দেয় পানিতে, তাই একে বলা হয় ফুল বিজু।

ঐতিহ্যবাহী পোশাকে তাদের গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে এ দিন শুরু হয় বৈসাবি উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ফুলবিজুর দিন সকালে রাঙামাটি শহরের রাজবন বিহারের পূর্ব ঘাটে ফুল বিজু উৎসবে কর্ণফুলী নদীতে ফুল ভাসায় চাকমা তরুণীরা।
পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো বছরের দুঃখ বেদনাই যেন ভাসিয়ে দিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার আলো জ্বালায় পাহাড়ের মানুষ। পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো দিনের বেদনা ভুলে নতুন দিনের প্রত্যয়ের কথা জানায় ফুল ভাসাতে আসা পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা। পানিতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে তারা গঙ্গা মাকে শ্রদ্ধা জানায়। পাহাড়িদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে ফুল হচ্ছে পবিত্র।

ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শহরের গর্জনতলী ঘাটে ও কেল্যামুড়া পাহাড়ে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পানিতে ফুল ভাসানোর আয়োজন করা হয় প্রতিবছর।

‘ফুল বিজু’র পরপরই তরুণীরা নিজেদের ঘরে ফিরে যায়। মুরুব্বিদের প্রণাম করে আশীর্বাদ গ্রহণ করে। ফুল ভাসানো শেষে বয়স্কদের স্নান করানো হয়। পাড়ার বয়স্কদের শরীরে পানি ঢেলে তাদের আশীর্বাদ কামনা করেন তরুণ-তরুণীরা। দেওয়া হয় নতুন পোশাক।

পরের দিন চৈত্রের শেষ দিনে শুরু হবে মূল বিজু। এদিন সারা দিন হৈ-হুল্লোড় করে কাটায় তরুণ তরুণীরা, ঘরে ঘরে নিমন্ত্রণ আর আতিথিয়েতা গ্রহণের সে এক অনাবিল আনন্দ। এদিন ঘরে ঘরে ঐতিহ্যাবাহী খাবার পাঁচন রান্না করা হবে। অতিথিদের মাঝে ‘পাঁচন’ পরিবেশন আর একে অন্যের বাড়িতে যাওয়া আসার মধ্য দিয়ে বৈসাবি উৎসব তার চিরায়ত ব্যঞ্জনায় রূপ লাভ করে। বহু প্রকার সবজি দিয়ে ঐতিহ্যবাহী এই পাঁচন তৈরি করা হয়। পাহাড়িদের বিশ্বাস, এই পাঁচন খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া এক দিনে সাত পরিবারের এই পাঁচন খেলে সর্বরোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। বিজুর দিনে পাহাড়িদের বাসায় পাহাড়ি-বাঙালি সবাই যায়। এদিন ফুটে ওঠে অসাম্প্রদায়িক মনোভাব।

সাংগ্রাইয়ে একে-অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে পুরনো বছরের সকল দুঃখ, অবসাদ দূর করে নতুন বছরে শুদ্ধ মননে জীবন শুরুর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পার্বত্যাঞ্চলের মারমা জনগোষ্ঠী। প্রতিবছরই বাংলাদেশ মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থার (মাসাস) আয়োজনে কেন্দ্রীয়ভাবে পানি খেলা বা ওয়াটার ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়। এ বছরও কাউখালী, রাজস্থলীর বাঙ্গালহালিয়ায় ও কাপ্তাইয়ের চিৎমরমে পানি খেলার আয়োজন করা হয়েছে।

বিভিন্ন জনগোষ্ঠী বৈসাবি উদযাপন করে আসছে। বৈসাবিতে গ্রামীণ বাংলার বিভিন্ন খেলা,  পাহাড়ি ঐতিহ্যগত খেলা যেমন- ঘিলা খেলা, তব্রু খেলা প্রভৃতির  আয়োজন করা হয়। ফুলবিজুতে রাতের আকাশে পানুস বাতির ঝলক দেখা যায়। পাশাপাশি পাহাড়ির বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। বিজুর পক্ষকাল আগে থেকেই রাঙামাটিতে আগমনী সুর চলছে। বৈসাবিকে সামনে রেখে আদিবাসী মেলা, পার্বত্য মেলা, পাঁচন তৈরি প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের ১২টি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলাবর্ষকে বিদায় জানানোর এ অনুষ্ঠান তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে বিবেচিত। এই উৎসব চাকমা জনগোষ্ঠী বিজু নামে, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষ সাংগ্রাই, মারমা জনগোষ্ঠী বৈসুক, তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী বিষু, কোনো কোনো জনগোষ্ঠী বিহু নামে উদযাপন করে থাকে। বৈসুকের ‘বৈ’ সাংগ্রাইয়ের ‘সা’ ও বিজু, বিষু ও বিহুর ‘বি’ নিয়ে উৎসবটিকে সংক্ষেপে ‘বৈসাবি’ নামে উদযাপন করা হয়। পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদনের পর থেকে পাহাড়ের সকল জনগোষ্ঠীকে সম্মিলিতভাবে উৎসবে একীভূত করার জন্য এই সংক্ষেপে নামটি প্রচলন করা হয়।

প্রতিক্ষণ/এডি/সাই

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G